বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পাপিয়া-চামেলীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৫, ২০২৪, ০৯:১৫ এএম

পাপিয়া-চামেলীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ


ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলর সৈয়দা রোকসানা ইসলাম চামেলীকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে আওয়ামী লীগ। ২৪ এপ্রিল বুধবার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সদস্যপদ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। নগর দক্ষিণের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানা যায়।
এদিকে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের একের পর এক বিতর্কিত কর্মকান্ডে বিব্রত দলের হাইকমান্ড। সেজন্য পাপিয়া-চামেলীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ নির্দেশ দেন।
এর আগে ওই নারী কাউন্সিলর চামেলীর একটি নগ্ন ভিডিও ভাইরাল নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়, যা নিয়ে রীতিমতো তোলপাড় শুরু হয়। কয়েকদিন ধরে নগর আওয়ামী লীগ ও কেন্দ্রীয় নেতাদের হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওটি ঘুরপাক খায়।
ভিডিওতে দেখা যায়, সংরক্ষিত এ নারী কাউন্সিলর আবাসিক হোটেলের শীতাতপনিয়ন্ত্রিত একটি কক্ষে একজন পুরুষের সঙ্গে অন্তরঙ্গ অবস্থায় রয়েছেন। তার সঙ্গী ওই পুরুষটি চামেলীর ইচ্ছাতেই অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও ধারণ করছেন। এর আগে যুব মহিলা লীগ নেত্রী পাপিয়া কান্ডে দেশজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, চামেলীর ভিডিও ভাইরাল নিয়ে মঙ্গলবার প্রতিবেদন প্রকাশের পর চরম বিব্রত ও ক্ষুব্ধ দলের হাইকমান্ড। দলের কেন্দ্রীয় ও নগরসহ বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে এটিই ছিল আলোচনার মূল ইস্যু। ওইদিন দুপুরেই বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নগরের শীর্ষ নেতা আবু আহমেদ মন্নাফীকে ডেকে চামেলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন ওবায়দুল কাদের। পরে সন্ধ্যায় নগর সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির দলীয় সভাপতির ধানমন্ডির কার্যালয়ে গেলে চামেলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না তা আবারও জানতে চান ওবায়দুল কাদের। এ সময় দলের ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক মীর্জা আজমও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তিনি হুমায়ুন কবিরের সঙ্গে থাকা নগরের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজের কাছে জানতে চান চামেলীকে বহিষ্কারের প্রেস বিজ্ঞপ্তি লেখা হয়েছে কি না। পরে ওবায়দুল কাদের আবারও চামেলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন নগর সাধারণ সম্পাদককে। এ সময় তিনি বলেন, পাপিয়া-চামেলীদের জন্য আওয়ামী লীগের ইমেজ চরমভাবে ক্ষুন্ন হচ্ছে। এরা কীভাবে দলে অনুপ্রবেশ করে এবং এদের আশ্রয়দাতা কারা, তাদেরও খুঁজে বের করতে হবে। এদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া যাবে না। এরপর ২৪ বুধবার দুপুরে দলের পক্ষ থেকে চামেলীকে অব্যাহতির বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানানো হয়।
জানা গেছে, চামেলীর বড় ভাই বিএনপির সাংস্কৃতিক সংগঠন জাসাসের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এবং স্বামী ২০নং ওয়ার্ড বিএনপির নেতা। ২০১৬ সালে যুব মহিলা লীগের শীর্ষ এক নেত্রীর আশীর্বাদে শুরুতেই সংগঠনের কেন্দ্রীয় সদস্যের পদ বাগিয়ে নেন বিএনপি ঘনিষ্ঠ চামেলী। পদকে সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করে আরও ওপরে ওঠার স্বপ্ন দেখেন তিনি। সেজন্য বেশিদিন যুব মহিলা লীগে আর সক্রিয় না থেকে পদকে পুঁজি করে মূল দলে প্রবেশের চেষ্টা করেন। পরে নগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতাকে ম্যানেজ করে মূল দলে নগরের সদস্যপদ বাগিয়ে নেন। এরপর ওপর মহলের আশীর্বাদে চামেলী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৩, ১৯ ও ২০নং ওয়ার্ডে পরপর দুবার সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর নির্বাচিত হন।

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!