ডেইলি খবর ডেস্ক: আওয়ামী লীগ জোট বড় করতে চায়। জাতীয় নির্বাচনের প্রায় আড়াই বছর বাকি থাকতেই ব্যাপক সাংগঠনিক প্রস্তুতি শুরু করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ভেতরে ভেতরে নানা তৎপরতা শুরু করেছে রাজনীতির মাঠে কোণঠাসা বিএনপিও। নিয়েছে তৃণমূলকে শক্তিশালী করার উদ্যোগ
প্রায় আড়াই বছর সামনে রেখে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ।প্রথমেই তৃণমূল পর্যায়ে সংগঠন গুছিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ রয়েছে। এরপর সুনির্দিষ্টভাবে চারটি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। এগুলো হচ্ছে-তিনশ আসনে দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য মাঠ পর্যায়ে নিবিড় জরিপ,নির্বাচনী জোটের পরিধি বৃদ্ধি, ১৪ দলীয় জোটের ঐক্য আরও অটুট এবং বাম ঘরানার রাজনৈতিক দলসহ ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে দূরত্ব কমিয়ে আনা। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর এ পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
সংবিধান অনুযায়ী আগামী ২০২৩ সালের শেষের দিকে কিংবা ২০২৪ সালের শুরুর দিকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা। এর আগেই আওয়ামী লীগ নিজেদের গুছিয়ে নেবে। আওয়ামী লীগের কয়েকজন নীতিনির্ধারক নেতা সমকালকে জানিয়েছেন, ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে আওয়ামী লীগের জাতীয় ত্রিবার্ষিক সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতি রয়েছে। তার আগেই ৭৮টি সাংগঠনিক জেলাসহ উপজেলা,থানা, পৌরসভা, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায়ের সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর একাধিক সদস্য বলেছেন,তৃণমূল সম্মেলনের পর পুরোদমে আগামী সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া হবে। অবশ্য এ ক্ষেত্রে করোনা পরিস্থিতিকে বিবেচনায় আনা হবে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলে এ বিষয়ে কার্যকর ভূমিকা নেবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সেই ক্ষেত্রে প্রথমেই সংসদের তিনশ আসনে দলীয় প্রার্থী বাছাই করার জন্য মাঠ পর্যায়ে জরিপ কার্যক্রম চালানো হবে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার মাধ্যমে এই জরিপ চালানোর প্রস্তুতি রয়েছে।
এরপর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরিকের সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন কয়েকজন শীর্ষ নেতা। তাদের ভাষায়, বর্তমানে জাতীয় পার্টিকে নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তা থাকলেও নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে তাদের আরও কাছে টানার ভাবনা রয়েছে। ১৪ দলীয় জোটের শরিকদের সঙ্গে সম্পর্কের আরও উন্নয়ন ঘটানোর উদ্যোগ থাকবে। সেই সঙ্গে ভোটের হিসাব-নিকাশ মেলানোর জন্য কয়েকটি ইসলামী দলের সঙ্গে সখ্য বাড়ানোর চিন্তাভাবনা রয়েছে। একই চিন্তা রয়েছে কয়েকটি বামপন্থি রাজনৈতিক দল নিয়েও। এ ব্যাপারে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেলে নির্বাচনী জোটের পরিধি বাড়ানো সম্ভব হবে।
এসব বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনমুখী রাজনৈতিক দল। নির্বাচনের মাধ্যমেই সব সময় ক্ষমতায় এসেছে আওয়ামী লীগ। সুতরাং আওয়ামী লীগের নির্বাচনের প্রস্তুতি রয়েছে। নির্বাচন ঘনিয়ে এলে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন নির্বাচনী জোট-মহাজোটের পরিধি আরও বাড়ানোর উদ্যোগ থাকবে।
২০২২ সালের ২১-২২ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের তিন বছর মেয়াদি কার্যনির্বাহী সংসদের মেয়াদ শেষ হবে। এর এক মাস আগে অর্থাৎ আগামী বছরের ২০ নভেম্বরের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা,উপজেলা,থানা,পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড শাখার সম্মেলন করা হবে। দলের চার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল-আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, ড. হাছান মাহমুদ এবং আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমসহ আট সাংগঠনিক সম্পাদক তৃণমূল পর্যায়ে সম্মেলন কার্যক্রম গুছিয়ে আনছেন। তারা পর্যায়ক্রমে ওয়ার্ড,ইউনিয়ন,পৌরসভা,থানা,উপজেলা ও জেলা সম্মেলন আয়োজনের লক্ষ্যমাত্রাও স্থির করেছেন। এ ক্ষেত্রে তারা আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ওয়ার্ড,ইউনিয়ন ও পৌরসভার সম্মেলন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আগামী বছরের মার্চের মধ্যে পর্যায়ক্রমে থানা,পৌরসভা,উপজেলা এবং ডিসেম্বরের মধ্যে জেলা সম্মেলনের পরিকল্পনা করছেন।
এ জন্য তৃণমূল পর্যায়ে সাংগঠনিক টিম গঠন করা হচ্ছে। দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন,ইতোমধ্যেই জেলা,মহানগর,উপজেলা,থানা ও পৌর নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে সাংগঠনিক টিম গঠনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এই সাংগঠনিক টিমের সদস্যরাই তৃণমূল পর্যায়ের সম্মেলন কার্যক্রম নিয়ে স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছেন।
আওয়ামী লীগের বেশিরভাগ জেলা,উপজেলা, থানা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড শাখা কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে অনেক বছর আগেই। চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে প্রায় ১৫ বছর আগে। ২০০৬ সালের ২৬ জুন এ শাখার সম্মেলন হয়েছিল। ২৫ বছর আগে সম্মেলন হয়েছে চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার। ১৯৯৬ সালে এ উপজেলা কমিটির সম্মেলন হয়েছে। আহ্বায়ক কমিটির নেতৃত্বে প্রায় ২৫ বছর ধরে চলছে কিশোরগঞ্জ পৌরসভা কমিটির সাংগঠনিক কার্যক্রম। এর মধ্যে আহ্বায়ক কমিটির প্রধানসহ ২৯ জন সদস্যই মারা গেছেন। নীলফামারীর ডিমলা ও কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার মেয়াদ শেষ হয়েছে প্রায় দেড় দশক আগে। তৃণমূল পর্যায়ের কমিটিগুলোর অনেক নেতাই মারা গেছেন।
কয়েকটি জেলায় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক থাকায় সাংগঠনিক কার্যক্রমে কিছুটা স্থবিরতা এসেছে। দ্বন্দ-বিবাদ লেগেই আছে। নানামুখী জটিলতাও তৈরি হয়েছে। এমনকি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ,মাগুরা,সাতক্ষীরা,নরসিংদী, চট্টগ্রাম মহানগর, কক্সবাজারে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং সিরাজগঞ্জ, নরসিংদীতে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকরা দায়িত্ব পালন করছেন। এই জেলাগুলোতে আগেভাগে সম্মেলন করার প্রস্তুুতি রয়েছে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম মহানগরের সম্মেলন নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতারা জেলা নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
এদিকে বছর দেড়েক আগে সম্মেলন হলেও কয়েকটি জেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি এখনও অনুমোদন পায়নি। এ নিয়ে সংশ্নিষ্ট জেলাগুলোতে সাংগঠনিক জটিলতা তৈরি হয়েছে। ২০১৯ সালের ২০ নভেম্বর নোয়াখালী, ২৪ নভেম্বর খাগড়াছড়ি, ২৬ নভেম্বর রংপুর মহানগর, ১১ ডিসেম্বর লালমনিরহাট ও হবিগঞ্জ, ১২ ডিসেম্বর কুড়িগ্রামের সম্মেলন হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি এখনও অনুমোদন পায়নি। আওয়ামী লীগের যে কোনো শাখার সম্মেলনে সাধারণত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নাম ঘোষণা করা হয়। কিন্তু পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদনের বেলায় অনেক সময় পেরিয়ে যায়। সাংগঠনিক বিধান অনুযায়ী,সম্মেলন যখনই হোক না কেন-পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদনের দিন থেকেই কমিটির মেয়াদকালের গণনা শুরু হয়। এ কারণে এবার তৃণমূল পর্যায়ে সম্মেলনের পর দ্রæত পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদনের প্রস্তুতি রয়েছে। সেই ক্ষেত্রে চলতি বছরের জুন মাস থেকে শুরু করে আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে যে সব শাখার সম্মেলন হবে, সেই সব শাখা কমিটির পূর্ণাঙ্গ কমিটি দ্রæত অনুমোদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
ঢাকা বিভাগ:আগামী সেপ্টেম্বর মাস থেকে ঢাকা বিভাগে রীতিমতো ঝোড়োগতিতে মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা ও উপজেলা কমিটিগুলোর সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতি শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন এই বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম। তিনি বলেছেন,প্রথমেই রাজবাড়ী জেলার সম্মেলন হবে। এরপর নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতি রয়েছে।
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ জেলা কমিটি ছাড়া এ বিভাগের ১৫টি জেলা কমিটির মেয়াদ ফুরিয়ে গেছে। এর মধ্যে ২০১৩ সালের ১৩ নভেম্বর মাদারীপুরে, ২০১৪ সালের ২১ জুন মুন্সীগঞ্জে, ১৮ ডিসেম্বর ঢাকায়, ২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারি মানিকগঞ্জে, ১৮ অক্টোবর টাঙ্গাইলে, ১১ নভেম্বর গোপালগঞ্জে, ১২ নভেম্বর রাজবাড়ীতে, ১৪ ডিসেম্বর নরসিংদীতে, ২০১৬ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি কিশোরগঞ্জে, ২২ মার্চ ফরিদপুরে এবং ২০১৭ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি শরীয়তপুরে সম্মেলন হয়েছিল। কেন্দ্র থেকে ২০১৩ সালের ১২ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ মহানগর, ২০১৫ সালের ৬ ফেব্রæয়ারি গাজীপুর মহানগর, ২০১৬ সালের ৯ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ ও ২০১৭ সালের ২২ জুলাই গাজীপুর জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল।
চট্টগ্রাম বিভাগ : প্রায় ১৫ বছর আগে ২০০৬ সালের ২৬ জুন চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সম্মেলন হয়েছে। এই বিভাগের আরও আটটি জেলা কমিটির মেয়াদও ফুরিয়ে গেছে। এর মধ্যে ২০১২ সালের ৮ ডিসেম্বর রাঙামাটি, ২০১৩ সালের ৯ এপ্রিল চট্টগ্রাম দক্ষিণ, ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ২০১৫ সালের ৩ মার্চ লক্ষীপুর, ২০১৬ সালের ২৭ জানুয়ারি চাঁদপুর, ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজার এবং ৬ ফেব্রæয়ারি কুমিল্লা দক্ষিণ জেলায় সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল। ২০১৭ সালের ১৭ জুলাই কুমিল্লা মহানগর কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল কেন্দ্র থেকে।
দলের জাতীয় সম্মেলনের আগেই মেয়াদোত্তীর্ণ এই জেলাগুলোর সম্মেলন করা হবে বলে জানিয়েছেন এই বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন। কমিটির মেয়াদ থাকায় নোয়াখালী,ফেনী,কুমিল্লা উত্তর,খাগড়াছড়ি,চট্টগ্রাম উত্তর ও বান্দরবানের সম্মেলন প্রয়োজন হবে না বলে তিনি জানিয়েছেন।
রাজশাহী বিভাগ :এই বিভাগের ৯টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে নাটোর,পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও নওগাঁ কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে কয়েক বছর আগে। ২০১৪ সালের ২ ডিসেম্বর নাটোর, ২০১৪ সালের ২০ ডিসেম্বর পাবনা, ২০১৫ সালের ৮ জানুয়ারি সিরাজগঞ্জ এবং ২০১৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর নওগাঁয় সম্মেলন হয়েছে। রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন জানিয়েছেন, বিরাজমান করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলে উল্লিখিত চার জেলায় সম্মেলন হবে। তিনি সেপ্টেম্বর থেকে এই জেলাগুলোর পাশাপাশি রাজশাহী বিভাগের সব উপজেলায় সম্মেলন আয়োজনের পরিকল্পনা করছেন।
খুলনা বিভাগ :কয়েক বছর আগেই মেহেরপুর, মাগুরা, ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গা জেলা কমিটির মেয়াদ ফুরিয়ে গেছে। সর্বশেষ ২০১৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি মেহেরপুর, ৮ মার্চ মাগুরা, ২৫ মার্চ ঝিনাইদহ এবং ২ ডিসেম্বর চুয়াডাঙ্গার সম্মেলন হয়েছে। এই বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক বলেছেন, আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে এই চার জেলায় সম্মেলন আয়োজন করা হবে। সেই সঙ্গে শুরু হবে উপজেলা পর্যায়ের সম্মেলন কার্যক্রম। কমিটির মেয়াদ থাকায় দলীয় জাতীয় সম্মেলনের আগে কুষ্টিয়া, যশোর, নড়াইল, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা ও খুলনা মহানগরের সম্মেলন করার প্রয়োজন হবে না।
সিলেট বিভাগ :এই বিভাগে সাংগঠনিক জেলার সংখ্যা পাঁচ। এর মধ্যে সুনামগঞ্জ শাখার মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন এই বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন। তিনি বলেছেন, ২০১৬ সালের ২৫ ফেব্রæয়ারি সুনামগঞ্জের সম্মেলন হয়েছিল। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর এই জেলার সম্মেলন আয়োজন করা হবে। মৌলভীবাজারের সাধারণ সম্পাদক মিছবাহুর রহমান বলেছেন, তার জেলা কমিটির মেয়াদ ইতোমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। ২০১৭ সালের ২৮ অক্টোবর মৌলভীবাজারের সম্মেলন হয়েছিল।
বরিশাল বিভাগ :বরগুনা, ভোলা, পিরোজপুর ও বরিশাল জেলা কমিটির মেয়াদ নেই। ২০১২ সালের ২৭ ডিসেম্বর বরিশাল, ২০১৪ সালের ১৫ নভেম্বর বরগুনা, ২০১৫ সালের ১১ নভেম্বর পিরোজপুর এবং ২০১৬ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ভোলার সম্মেলন হয়েছিল। এই বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে পিরোজপুরের আট উপজেলার মধ্যে পাঁচটিরই সম্মেলন হয়েছে। অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে পিরোজপুর ও বরগুনা জেলা সম্মেলনের উদ্যোগ রয়েছে। তিনি বলেছেন, পটুয়াখালী, বরিশাল মহানগর ও ঝালকাঠির বর্তমান কমিটির মেয়াদ এখনও শেষ হয়নি। সংগঠনের জাতীয় সম্মেলনের আগে এ তিনটি জেলায় সম্মেলন হবে না।
রংপুর বিভাগ :পঞ্চগড়,দিনাজপুর ও গাইবান্ধা জেলা কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। পঞ্চগড়ের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাট বলেছেন, ২০১৪ সালের ৭ জানুয়ারি তার জেলার সম্মেলন হয়েছিল। নতুন সম্মেলনের দিনক্ষণ নির্ধারণ করা হলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে হয়নি। ২০১২ সালের ২৩ ডিসেম্বর দিনাজপুরের সম্মেলন হয়েছিল বলে জানিয়েছেন জেলা সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইমাম চৌধুরী। গাইবান্ধার সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক বলেছেন, ২০১২ সালের ১৬ মার্চ তার জেলার সম্মেলন হয়েছিল। বর্তমানে দিনাজপুর ও গাইবান্ধায় সম্মেলন প্রস্তুতি চলছে।
রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শফিক বলেছেন, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, লালমনিরহাট,রংপুর, কুড়িগ্রাম ও রংপুর মহানগরের বর্তমান কমিটির মেয়াদ এখনও শেষ হয়নি। জাতীয় সম্মেলনের আগে এই ছয়টি জেলায় সম্মেলন হবে না। তিনি জানিয়েছেন, তৃণমূল পর্যায়ে সাংগঠনিক টিম গঠনের মাধ্যমে প্রতিটি উপজেলা, থানা, পৌরসভা, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ডে সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতি রয়েছে।
ময়মনসিংহ বিভাগ :এই বিভাগের পাঁচটি সাংগঠনিক জেলার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এর মধ্যে ২০১৫ সালের ১৯ মে শেরপুর, ২০ মে জামালপুর,২০১৬ সালের ১৭ ফেবব্রæয়ারি নেত্রকোনা, ২০১৬ সালের ৩০ এপ্রিল ময়মনসিংহ ও ময়মনসিংহ মহানগরের সম্মেলন হয়েছে। এ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেছেন, করোনাভাইরাসের কারণে উপজেলা পর্যায়ের সম্মেলন আপাতত বন্ধ থাকলেও দ্রæতই শুরু হবে। এর মধ্যে সেপ্টেম্বরে ময়মনসিংহের নান্দাইল, ফুলপুর, মুক্তাগাছা, নেত্রকোনা সদর ও বারহাট্টা উপজেলার সম্মেলন হবে। ইতোমধ্যে ময়মনসিংহ মহানগর ছাড়া নেত্রকোনা, জামালপুর, ময়মনসিংহ ও শেরপুরে বর্ধিত সভা করা হয়েছে। বর্ধিত সভায় কেন্দ্রীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়, আগে উপজেলা এবং পরে জেলা সম্মেলন করা হবে। তবে কাউয়া-হাব্রিড ব্যক্তিলীগ-এমপি লীগ মুক্ত না হলে স্থানীয় বিরোধ দ্বন্দ-সংঘাত মুক্ত হবে না।