আবারও পদায়ন নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি করল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বহুল আলোচিত করোনা রোগীদের সেবা ও পরীক্ষার নামে জালজালিয়াতি করা রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তির বিষয় নিয়ে অনিয়মের অভিযোগে মাত্র কয়েক দিন আগেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের (হাসপাতাল) পদ থেকে সরিয়ে
ওএসডি করা ডা. আমিনুল হাসানকে পদায়ন করা হয়েছে ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির অধ্যক্ষ পদে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সেবা বিভাগের উপসচিব শারমিন আক্তার জাহান গত রোববার ওই আদেশে স্বাক্ষর করেন; যদিও এর মাত্র চার দিন আগেই দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তলবে ডা. আমিনুল হাসানকে হাজিরা দিতে হয়েছে। অভিযোগের সুরাহা না হতেই তাঁকে গুরুত্বপূর্ণ একটি পদে পদায়ন করা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরেই।
একই সঙ্গে এই অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (উন্নয়ন ও পরিকল্পনা) পদে গত ১৩ আগস্ট মন্ত্রণালয় থেকে নিয়োগ দেওয়া হয় অধ্যাপক ড. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরাকে। এই নিয়োগ নিয়েও চলছে বিতর্ক। তিনি বর্তমানে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নির্ণয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক পদে আছেন। আগামী ২০ আগস্ট নতুন পদে তার যোগদানের কথা রয়েছে। ওই পদে থাকা অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. সানিয়া তহমিনা মঙ্গলবার থেকে অবসর-উত্তর ছুটিতে (পিআরএল) যাচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে নবনিযুক্ত অতিরিক্ত মহাপরিচালক ড. ফ্লোরার বিষয়ে অভিযোগ রয়েছে যে তিনি একদিকে যেমন বিসিএস ক্যাডারের কর্মকর্তা নন, তেমনি তিনি সরকারি চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে বিদেশে গিয়েছিলেন। এ ছাড়া তিনি জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে (নিপসম) ও ডায়াবেটিক সমিতির একটি প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদে চাকরি করেছিলেন। এ কারণে তাকে বিভাগীয় শাস্তির মুখে পড়তে হয়েছিল কয়েক বছর আগে। এছাড়া তার গ্রেডসংক্রান্ত জটিলতাও রয়েছে।
এদিকে কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (সিএমএসডি) পরিচালকসহ আরো তিন কর্মকর্তার পদায়ন নিয়েও দেখা দিয়েছে অসন্তোষ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, একের পর এক পদায়নজনিত বিতর্কে পড়ছে স্বাস্থ্য খাত, যা কাজের পরিবেশকে আরো বিঘ্নিত করছে।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী বলেন, ‘পদায়ন নিয়ে যে পরিস্থিতি ঘটছে তা আমাদের জন্যও বিব্রতকর। এসব ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়কে আরো সঠিক প্রক্রিয়ায় এগোনো দরকার। নয়তো বিতর্কের সুযোগ থেকেই যাচ্ছে।’