আগের সপ্তাহেও তাঁকে বলতে শোনা গেছে, ‘শুক্রবারে যখন কথা হয়, তখন এসএলসি (শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট) থেকে বলা হয়েছে যে শনি কিংবা রবিবারে ওরা কোনো জবাব দেবে না। সাপ্তাহিক ছুটির পর সোমবার জানাবে। আশা করছি, ভালো কিছুই জানব।’ কিন্তু সপ্তাহ ঘুরে আরেক সপ্তাহান্ত এসে উপস্থিত হলেও ইতিবাচক কোনো সাড়া না মেলায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরীর কণ্ঠে তেমন আশাবাদও আর নেই। বরং এসএলসি তাদের দেশের কভিড টাস্কফোর্সকে বাংলাদেশের অবস্থান কতটা বোঝাতে পারবে, অনিশ্চয়তা নিয়ে সেদিকেই তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে বিসিবিকে।
বাংলাদেশের তিন টেস্টের সফর নিয়ে যে জট লেগেছে, সেটি খোলায় এসএলসির অক্ষমতাও মেনে নিয়েছে তারা। নিজাম উদ্দিন তাই বললেন, ‘পুরো বিষয়টি কিন্তু এসএলসির ওপর নির্ভর করছে না। নির্ভর করছে তাদের সরকার এবং কভিড-১৯ টাস্কফোর্সের সিদ্ধান্তের ওপর। আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি, এসএলসি তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বোঝানোর চেষ্টা করছে আমাদের অবস্থান।’ বোঝানোর পথে এসএলসি কিছুটা এগিয়েও গিয়েছিল। তবে এ ক্ষেত্রে ‘এক পা এগিয়ে দুই পা পেছানো’র ঘটনাও ঘটেছে। লঙ্কায় ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনের প্রথম চার দিন হোটেলে বন্দি হয়ে থাকার পর বাকি ১০ দিন বাংলাদেশ দলের মাঠে আসা-যাওয়া করে অনুশীলনের সুবিধায় এসএলসি সে দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়েই ফেলেছিল। কিন্তু সেটিও আটকে যায় কভিড টাস্কফোর্সে গিয়ে। দ্বীপদেশটিতে কভিড ব্যবস্থাপনায় এই টাস্কফোর্সই এখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিচ্ছে। তাদের সঙ্গে মঙ্গলবারই আরেক দফা বৈঠক হয়ে যাওয়ার কথা এসএলসির। কোনো সমাধান বের হলে গতকাল নিজাম উদ্দিনের বক্তব্যে নিশ্চিতভাবেই এর প্রতিফলন থাকত।
তাই আগেই শ্রীলঙ্কায় যাওয়া পিছিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া বিসিবি এখন এ বিষয়ে আর কোনো লুকোছাপাও রাখছে না। প্রধান নির্বাহী বলে দিলেন, ‘‘এই মুহূর্তে ২৭ সেপ্টেম্বর যাওয়াটা একটু চ্যালেঞ্জিং হবে। ভিসা এবং অন্যান্য জটিলতা তো রয়েছেই। সে ক্ষেত্রে কোনো ‘অ্যাডজাস্টমেন্ট’-এর প্রয়োজন হলে আমরা করে নেব।’’ এই সফরের আপাতত একটি ‘লাইফ-লাইন’ই যেন দেখতে পাচ্ছেন তিনি, ‘‘এসএলসি এবং বিসিবি আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের এই সিরিজটি খেলার বিষয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ। তাই আমাদের দুই বোর্ডেরই চেষ্টা আছে। আবারও বলছি, কোনো ‘অ্যাডজাস্টমেন্ট’-এর প্রয়োজন হলে আমরা করব। সে ব্যাপারে আমাদের প্রাথমিক কথাবার্তাও হয়েছে।’’ যদিও সে আলোচনা নিয়ে কোনো ধারণা দিতে অপারগ তিনি, ‘এই মুহূর্তে সুনির্দিষ্টভাবে আমি কিছু বলতে পারছি না। তবে আমাদের জন্য যেটি সহনীয় পর্যায়ের, সেটি আমরা চাচ্ছি। যেহেতু এই নিয়ে এসএলসিও কিছু বলছে না, তাই এগুলো এখন আমাদের মধ্যেই থাক। প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাচ্ছি না।’ সফর নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত জাতীয় দলের অনুশীলন শিবির চালিয়ে যাওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন নিজাম উদ্দিন। তবে বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান যে বলেছিলেন, শ্রীলঙ্কার জন্য খুব বেশি অপেক্ষা করবেন না। আর কত দিন অপেক্ষা? তা নিয়ে কোনো মন্তব্য না করলেও প্রধান নির্বাহী কথা বলেছেন নাজমুলের ঘরোয়া ক্রিকেট শুরুর বিষয় নিয়ে, ‘আমাদের পরিকল্পনা আছে উভয় বিষয় (শ্রীলঙ্কা সফল ও ঘরোয়া ক্রিকেট) নিয়েই সামনে এগোনোর। আমরা যদি এই সফরে যাইও, এর পরও আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেট লিগ করার চিন্তা আছে।’