মাহমুদা আক্তার খানম: আসলগুলো চুড়ান্তই, ডামিগুলো নিয়ে চলছে হইচই। বিএনপি নির্বাচনে আসলে ডামিগুলো বিলীন হবে আসল প্রার্থীদের সাথে আর ডামিগুলো সরকার গঠনের পর কিছু কিছু দলের বিভিন্নপদে ও সরকারের বিভিন্ন জায়গায় পুরস্কার দেয়া হতে পারে। তবে আসল প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কাজ করলে কিংবা বিদ্রোহী প্রার্থী থাকলে বা আসলের পক্ষে কাজ না করলে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার পরিকল্পনাও চুড়ান্ত করেছেন দলীয় হাইকমান্ড। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারনী পর্যায়ের সিনিয়র ও হাইকমান্ডের কাছের সুত্রগুলোর সাথে আলাপ করে এসব তথ্য জানা গেছে। দলীয় সুত্রগুলো জানায় আওয়ামী লীগ আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদের আড়াইশ আসনে এককভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি রেখেছে। দলটি বাকি ৫০ আসন ১৪ দলীয় জোটের শরিক ও সমমনা রাজনৈতিক মিত্রদের ছেড়ে দিতে চায়। তবে প্রয়োজন হলে ৬০-৬৫ আসন ছাড়তেও প্রস্তুুত আওয়ামী লীগ। প্রতিবারের মতো এবারও সমঝোতার বাইরে কিছু আসন উন্মুক্ত রাখতে চায় আওয়ামী লীগ। সেই লক্ষ্যে সামনে রেখে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিএনপি নির্বাচনে আসবে না ধরে নিয়েই আসন বণ্টন ও উন্মুক্ত রাখার পরিকল্পনাও হাতে নিয়ে এগুচ্ছে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা। একাদশ সংসদে আওয়ামী লীগের শরিক ১৪ দলের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত আটজন সংসদ সদস্য রয়েছেন। এর মধ্যে ওয়ার্কার্স পার্টির ৩, জাসদের ৩, তরিকত ফেডারেশন ১ ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-জেপি’র ১ জন। এছাড়া ২ জন সংসদ সদস্য রয়েছেন আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মিত্র বিকল্পধারা বাংলাদেশের। এই সংসদে জাতীয় পার্টির ২৩ জন সংসদ সদস্য রয়েছেন, যারা সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হন। সংরক্ষিত আসনে ওয়ার্কার্স পার্টির ১, জাসদের ১ এবং জাতীয় পার্টির ৪ জন সদস্য একাদশ জাতীয় সংসদে আছেন।
জোট শরিকদলের সুত্রগুলো জানায় বর্তমানে আওয়ামী লীগের শরিক ১৪ দলীয় জোটভুক্ত রাজনৈতিক দলগুলো ১৫- ১৮টি আসন পাওয়ার বিষয়ে সমঝোতায় আসতে পারে। তবে শুরুতে ১৪ দলের শরিকরা আরও বেশি আসন চাইবে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা ১৩টি আসন পেয়েছিল। ১৪ দলের বাইরে বিকল্পধারা ২টি এবং গণফোরামকে সর্বোচ্চ ২টি আসন ছেড়ে দেওয়া হতে পারে। জাতীয় পার্টিকে ২৫-৩০টি আসনের মধ্যে রাখার কথা ভাবা হচ্ছে। প্রয়োজনে বাড়াতেও পারে। সরকারের সংসদের বিরোধী দল হিসাবে এবারও জাতীয় পার্টিই থাকতে পারে।
এদিকে আওয়ামী লীগের একাধিক সিনিয়র নেতা জানান আসন বিন্যাসের ক্ষেত্রে দেশের বিভিন্ন ইসলামি দলসহ, তৃণমূল বিএনপি, বিএনএম, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টিকে কয়েকটি আসন সমঝোতার ভিক্তিতে ছেড়ে দিতে পাওে আওয়ামী লীগ। তবে তাদের সঙ্গে আসন ভাগাভাগির বিষয়ে এখনো সরকার ও আওয়ামী লীগের মধ্যে আলোচনা চুড়ান্ত হয়নি। রাজপথে থাকা বিএনপি থেকে বের হয়ে কেউ নির্বাচন করতে চাইলে নির্বাচনী কৌশল কি হতে পারে তা নিয়েও কিছু পরিকল্পনা আওয়ামী লীগ করতে পারে। তফসিল ঘোষনার পর গত কয়েকদিনে দলীয় কার্যালয়ে এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয ও তৃণমুলের বিভিন্ন নেতাকর্মির সাথে আলাপ করে জানা গেছে দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যহত রাখতে মান্তিপূর্ণভাবে দেশ পরিচালনার জন্য বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার বিকল্প নেই। তাই আসন বিন্যাসের মাধ্যমেই হোক াার সমঝোতার মাধ্যমেই হোক সরকারে আওযামী লীগ থাকলেই হলো,বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাই প্রধানমন্ত্রী হবেন এটাই তাদের শেষ কথা। এদিকে ইনি সুত্র জানায় ইতোমধ্যে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটগতভাবে ভোট করার কথা জানিয়ে ১৪ দলের শরিকরা নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়েছে। নির্ধারিত সময় গত শনিবারের মধ্যেই ১৪ দলীয় জোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), জাতীয় পার্টি-জেপি, তরিকত ফেডারেশন, সাম্যবাদী দল ও গণতন্ত্রী পার্টি নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবে বলে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) জানিয়েছে। আওয়ামী লীগও জোটগতভাবে নির্বাচন করার কথা জানিয়েছে ইসিকে।
এদিকে ৩’শ আসনেই দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি করছে আওয়ামী লীগ। দলটির নীতিনির্ধারকরা বলছেন, মনোনয়ন ফরম বিক্রি ও জমা নেওয়া হলেও জোটবদ্ধ নির্বাচনের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে না। কারণ শরিক ও মিত্রদের ছেড়ে দেওয়া আসনগুলো সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করা হবে। সূত্র জানিয়েছে, দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি এবং জমার কাজ শেষ হওয়ার পর শরিক ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে আসন ভাগাভাগির বিষয় নিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা কথা বলবেন। দলীয় প্রধানের পরামর্শক্রমে প্রাথমিকভাবে আলোচনা হতে পারে ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু, আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান কাজী জাফর উল্লাহ ও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে। আওয়ামী লীগের একাধিক প্রেসিডেয়াম সদস্য বলেছেন আসন বন্টন নিয়ে বা ছাড় দিতে ১৪ দলের শরিকদের নিয়ে জোটবদ্ধ নির্বাচন ২০০৮ সাল থেকেই হয়েছে, এবারও হবে। তবে কোন দলকে কত আসন দেওয়া হবে-সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ ব্যাপারে শিগগির সিদ্ধান্ত হবে। আসন ভাগাভাগি নিয়ে মতবিরোধ হয়নি কখনেই। এবারও হবে না। তবে সমঝোতার বাইরে কিছু আসন উন্মুক্ত রাখা হতে পারে। আসন ভাগাভাগির বিষয়টির প্রাথমিক ধারনা জোট নেএীকে আগেই জানানো হয়েছে। আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা জানান দেশের সবগুলো নির্বাচনী এলাকায় যোগ্যপ্রার্থী রয়েছে আওয়ামী লীগের। নীতি-আদর্শভিক্তিক উপ-মহাদেশের ঐতিহ্যবাহি পুরনো রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ। এর প্রতিটি এলাকায় রয়েছে কমিটি-কমির্-সমর্থক ব্যাপক। আসল-ডামি হতেও অসুবিধা হয়না। আসল চড়িান্ত হলেও ডামির সংখ্যা অন্য যে কোনো দলের চেয়ে বেশী হবে এটাই ¯া^ভাবিক। তবে ডামিরা হতাশ হয় না বরং আনন্দই পায়,গর্বিত হয়। নেএীর সিদ্ধান্তই চুড়ান্ত।