1. [email protected] : admi2017 :
  2. [email protected] : Daily Khabor : Daily Khabor
  3. [email protected] : rubel :
  4. [email protected] : shaker :
  5. [email protected] : shamim :
মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৬:২০ অপরাহ্ন

ইভিএম প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব ইসির

ডেইলি খবর নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় বুধবার, ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
  • ৪০ বার পড়া হয়েছে

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) সংরক্ষণ ভাড়া এবং রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ নতুন করে ৪০ কোটি টাকা চেয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। একই সঙ্গে প্রকল্পের শেষ পর্যায় এসে এক বছর মেয়াদ বাড়াতে চায় সংস্থাটি। এজন্য পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্পের সংশোধনী প্রস্তাব পাঠিয়েছে ইসি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রকল্পের সংশোধনী প্রস্তাব থেকে জানা গেছে, বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় নির্বাচন কমিশনের ৮০ হাজার ইভিএম সেট বাংলাদেশ টুলস ফ্যাক্টরিতে (বিএমটিএফ) সংরক্ষণ করা হচ্ছে। সংরক্ষণ ভাড়া বাবদ বিএমটিএফ প্রতি মাসে ৯৭ লাখ ৫০ হাজার দাবি করেছে। সেই হিসাবে ২০১৯ সালের জুন থেকে প্রকল্পের শেষ সময়, অর্থাৎ ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত ভাড়া দাঁড়াবে ৪৬ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। বিএমটিএফ ভাড়া পরিশোধের জন্য অনবরত তাগিদ দিচ্ছে। কিন্তু প্রকল্পের মূল ডিপিপিতে ওয়্যারহাউস ভাড়া সংক্রান্ত কোনো খাত না থাকায় এখন পর্যন্ত বিএমটিএফের দাবি করা টাকা পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি। এজন্য প্রকল্পের মূল ডিপিপি সংশোধন করে ভাড়ার খাত যুক্ত করা প্রয়োজন।

উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) সংশোধনের কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, ইভিএম প্রকল্পের বর্তমান মেয়াদ শেষ হবে চলতি বছরের ২৩ জুন। অথচ মেয়াদ শেষ হওয়ার মাত্র ছয় মাসের মধ্যে পরবর্তী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো না হলে জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ অন্যান্য নির্বাচনে ইভিএমের যথাযথ ব্যবহার অনিশ্চয়তা দেখা দিতে পারে। তাই নির্বাচনে ইভিএম মেশিন ব্যবহার এবং প্রয়োজনীয় মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত এক বছরের জন্য বাড়ানো প্রয়োজন।

এ ছাড়া ইভিএম সংরক্ষণের জন্য র‍্যাকের আকার ও ধরন পরিবর্তন করা প্রয়োজন। কারণ, মূল ডিপিপিতে র‍্যাকের যে ধরন উল্লেখ করা হয়েছে, সেটা ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত নয়। তাই ইভিএম মেশিন সংরক্ষণের জন্য উপযুক্ত র‌্যাক নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে। নির্মাণের কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, নতুন আকারের এই র‌্যাকে আগের থেকে বেশি ইভিএম সেট রাখা সম্ভব হবে।

এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক কর্নেল সৈয়দ রাকিবুল হাসান বলেন, সংশোধনী প্রস্তাব অনেক আগেই করা হয়েছিল; কিন্তু নতুন প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানোর পর এটা ফেরত পাঠানো হয়েছিল। তখন প্রকল্প সংশোধনীতে ৭৫ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছিল। পরে ৪০ কোটি টাকা এবং এক বছর মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রকল্প সংশোধনের কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ইভিএম সংরক্ষণের জন্য বিএমটিএফের কাছে প্রায় ৪৭ কোটি টাকা বকেয়া পরিশোধ করতে হবে। কিছু মেশিন নষ্ট হয়ে গেছে, সেগুলো মেরামত করতে হবে। ইভিএম রক্ষণাবেক্ষণে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা। এসব ব্যয়ের খাত মূল ডিপিপিতে ছিল না। এ ছাড়া বর্ধিত সময়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দিতে হবে। যে কারণে এসব খাত নতুন করে ‍যুক্ত করে ডিপিপি সংশোধন করা প্রয়োজন।

কতগুলো মেশিন নষ্ট হয়ে গেছে–এমন প্রশ্নের জবাবে প্রকল্প পরিচালক বলেন, এটার সঠিক সংখ্যা এখনই বলা যাবে না। কারণ, মাঠপর্যায় থেকে আসা ইভিএমের প্রতিবেদন দেখে বোঝা যাচ্ছে না কতটা মেশিন পুরোপুরি নষ্ট বা কতটা মেরামতযোগ্য। এগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সঠিকভাবে বলা যাবে কতটা ইভিএম নষ্ট হয়েছে এবং কতটা ভোট গ্রহণে ব্যবহার করা যাবে।

উল্লেখ্য, অধিকতর সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গণতন্ত্রের উন্নয়ন করার লক্ষ্যে ২০১৮ সালে এই প্রকল্প নেয় নির্বাচন কমিশন। ‘নির্বাচন ব্যবস্থায় তথ্যপ্রযুক্তি প্রয়োগের লক্ষ্যে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যবহার’ শীর্ষক প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩ হাজার ৮২৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয় জুলাই ২০১৮ থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত। সেই হিসাবে এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে চলতি বছরের জুনে।

নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের আওতাধীন এই প্রকল্পের আওতায় ১ লাখ ৫০ হাজার ইভিএম কেনা হয়। এ ছাড়া নির্বাচন সংশ্লিষ্ট তিন হাজার ১১০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে প্রশিক্ষণ এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ায় জনসাধারণের অংশগ্রহণ বিষয়ক জনসচেতনতা বাড়ানোই ছিল এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য। এ অনুমোদনের বাস্তবায়ন শুরুর পর ইতোমধ্যে চার বছরেরও বেশি সময় শেষ হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রকল্পের বাস্তব অগ্রগতি হয়েছে ৯৫ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৯৪ শতাংশ।

প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রকল্প পরিচালক বলেন, প্রকল্পটি প্রথমে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে থাকলেও এখন এটাকে ‘বি’ ক্যাটাগরি করে রাখা হয়েছে। এ কারণে আর্থিক অগ্রগতি কম হচ্ছে। ফলে বকেয়া পরিশোধ করা সম্ভব নয়। প্রস্তাবিত টাকায় প্রকল্পের বাকি কাজ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে কিনা–জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রকল্পের আওতায় আয়-ব্যয়ের হিসাব করে কিছু টাকা আছে। এ ছাড়া এই প্রকল্পের কিছু খাতে ব্যয় কমানো যাবে। সব মিলিয়ে সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদন পেলে আয়-ব্যয়ের সমন্বয় করে প্রকল্পের বাকি কাজ সুষ্ঠুভাবে শেষ করা সম্ভব।

এই প্রকল্পের আওতায় ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ বিভিন্ন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত সংসদ, সিটি করপোরেশন, উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ের নির্বাচনে ইভিএমে ভোট নেওয়া হয়েছে এক হাজার ১৪৩টি। এ ছাড়া সংসদীয় ৬টি শূন্য আসনে ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১১ হাজার ২৫৬টি ইভিএম ব্যবহার করা হয়েছে।

এদিকে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৫০ আসনে ইভিএমে ভোট গ্রহণের জন্য আরও ২ লাখ ইভিএম কিনতে চেয়েছিল নির্বাচন কমিশন। এজন্য গত বছরের অক্টোবরে একটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠায় ইসি। ‘নির্বাচনী ব্যবস্থাপনায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের ব্যবহার বৃদ্ধি এবং টেকসই ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয় ৮ হাজার ৭১১ কোটি টাকা। তবে নানা আলোচনা-সমালোনার পর গত মাসে অর্থনৈতিক সংকট বিবেচনায় প্রকল্পটি আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয় পরিকল্পনা কমিশন।

বিজ্ঞাপন

এ জাতীয় আরো খবর