মহামারি করোনা সংকটের মধ্যেও ঈদের মাস মের প্রথম ১৯ দিনে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এ সময়ে ১০৯ কোটি ১০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে, যা গত বছরের একই সময়ের প্রায় সমান এবং আগের মাস এপ্রিলের পুরো সময়ের চেয়েও বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, রেমিট্যান্সের এই উল্লম্ফন এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ২৫ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা যোগ হওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ফের তিন হাজার ৩০০ কোটি (৩৩ বিলিয়ন) ডলার অতিক্রম করেছে। জানা গেছে, মহামারি করোনার কারণে দীর্ঘদিন ইতিবাচক ধারায় থাকা এই সূচকটি কয়েক মাস ধরে পতনের ধারায় রয়েছে। তবে ঈদের আগে পরিবার পরিজন ও নিকটাত্মীয়ের কাছে বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। রেমিট্যান্সের এই ঊর্ধ্বগতির কারণে স্বস্তি ফিরেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভেও।
সাধারণত প্রতিবছরই ঈদের আগে রেমিট্যান্সে গতি আসে। গত বছরের রোজার ঈদের আগে মে মাসে ১৭৪ কোটি ৮২ লাখ ডলারের রেকর্ড রেমিট্যান্স এসেছিল। এর মধ্যে প্রথম ১৯ দিনে এসেছিল ১০৯ কোটি ৪০ লাখ ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে টানা কমছে রেমিট্যান্স। গত ফেব্রুয়ারিতে দেশে রেমিট্যান্স আসে ১৪৫ কোটি ২২ লাখ ডলার। এর পরের মাস মার্চে আসে ১২৮ কোটি ৬৮ লাখ ডলার; যা গত বছরের মার্চ মাসের চেয়ে ১৩.৩৪ শতাংশ কম। আর এপ্রিলে তা আশঙ্কাজনকহারে কমে নেমে আসে ১০৮ কোটি ১০ লাখ ডলারে; যা গত বছরের এপ্রিলের চেয়ে ২৪.৬১ শতাংশ কম। এ ছাড়া এটি গত ৩৩ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন ছিল। এর আগে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের সেপ্টেম্বর মাসে সর্বনিম্ন ৮৫ কোটি ৬৮ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল। তবে
ঈদের কারণে মে মাসে রেমিট্যান্সে আশানুরূপ গতি ফিরেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী মে মাসের প্রথম ১১ দিনে ৫১ কোটি ২০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স আসে, ১৪ মে পর্যন্ত আসে ৮০ কোটি ডলার। আর ১৯ মে সেটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৯ কোটি ১০ লাখ ডলারে। গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে এক হাজার ৩৩০ কোটি ৩২ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। সেখানে চলতি অর্থবছরের ১৯ মে পর্যন্ত এসেছে এক হাজার ৫৬৮ কোটি ৫১ লাখ ডলার।
এদিকে ঈদের আগে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ায় রপ্তানি আয় কমার পরও বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ সন্তোষজনক অবস্থায় রয়েছে।