প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের থাবায় দিশেহারা গোটা বিশ্ব। এই ভাইরাসে আক্রান্ত দেশ ও অঞ্চলের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। তবে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিশ্বের ১৬টি দেশ ও অঞ্চলে ‘পা ফেলতে’ পারেনি ভাইরাসটি। এর মধ্যে এশিয়ার দেশ রয়েছে একটি। আফ্রিকার চারটি; বাকি ১১টির মধ্যে ৯টি দেশ পড়েছে ওশানিয়া অঞ্চলে। অন্যদিকে ১১টি দেশ ও অঞ্চল রয়েছে, যেখানে কোভিড-১৯ এ আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ জনের বেশি হলেও এখনও কারও মৃত্যু হয়নি।এদিকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত দুই শতাধিক দেশ-অঞ্চলে ৩৩ লাখেরও বেশি মানুষের মধ্যে কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৩৪ হাজারেরও বেশি মানুষের। দৈনিক আক্রান্ত ও মৃতের হার মাঝে খানিকটা কমলেও তিন দিন ধরে তা আবার বাড়তে শুরু করেছে। মৃত্যুর হার বেড়ে হয়েছে ৭ শতাংশের বেশি। আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে দ্রæতগতিতে বাড়ছে রাশিয়ায়। যুক্তরাষ্ট্রে ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে আরও আড়াই হাজার মানুষের। সর্বোচ্চ মৃত্যুর তালিকায় তৃতীয় স্থানে উঠে গেছে যুক্তরাজ্য।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম ব্যক্তি শনাক্ত হয় চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে; গত ৩১ ডিসেম্বর। সেই হিসাবে ভাইরাসটির বয়স চার মাস।এই চার মাসে ভাইরাসটি থেকে দূরে থাকতে পেরেছে এশিয়ার দেশ তুর্কমেনিস্তান। আফ্রিকা মহাদেশের করোনামুক্ত চারটি দেশ হল মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, কতে ডি’ভরে, লেসোথো ও সোয়াজিল্যান্ড।করোনার আঘাত থেকে মুক্ত থাকা ওশানিয়া অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে ভানুয়াতু, তুভালু, টোঙ্গা, নাউরু, পালাউ, সামোয়া, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, কিরিবাতি ও মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ। এর বাইরে করোনামুক্ত দুটি বিশেষ অঞ্চল হলো মাইক্রোনিশিয়া ও হলি সি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সম্ভবত দুটি কারণে এসব দেশ ও অঞ্চলে এখনও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেনি। প্রথমত, এই ১৬টির মধ্যে বেশ কয়েকটি দেশ ও অঞ্চলে জনবসতি খুবই কম এবং ভৌগোলিকভাবে অনেকটাই বিচ্ছিন্ন। দ্বিতীয়ত, আগে থেকেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ায় এসব দেশে করোনা প্রবেশ করতে পারেনি।
আক্রান্ত হলেও মৃত্যু নেই
বৈশ্বিক পরিসংখ্যানভিত্তিক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, আক্রান্তে সংখ্যা ৫০ জনের বেশি হলেও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি, এমন দেশ ও অঞ্চল রয়েছে ১১টি। এগুলো হল রেউনিও (আক্রান্ত ৪২০), ভিয়েতনাম (২৭০), রুয়ান্ডা (২২৫), ফ্যারো দ্বীপপুঞ্জ (১৮৭), জিব্রাল্টার (১৪১), মাদাগাস্কার (১২৮), কম্বোডিয়া (১২২), উগান্ডা (৮১), মোজাম্বিক (৭৬), ফ্রেন্স পলিনেশিয়া (৫৮) ও নেপাল (৫৭)। বিশ্লেষকরা বলছেন, চিকিৎসা খাতে একটি দেশের ব্যবস্থাপনা যত ভালো হবে, মৃত্যুর সংখ্যা ততই নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে। সূত্র: এএফপি, ওয়ার্ল্ডওমিটার।