1. [email protected] : admi2017 :
  2. [email protected] : Daily Khabor : Daily Khabor
  3. [email protected] : rubel :
  4. [email protected] : shaker :
  5. [email protected] : shamim :
রবিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ০১:৩৬ অপরাহ্ন

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ : ১৫ দিনে ১২ ব্যাংকারের মৃত্যু

ডেইলি খবর নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২১
  • ৩২৯ বার পড়া হয়েছে

মহামারি করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে দেশের বিভিন্ন ব্যাংকে কর্মরতদের আক্রান্ত হওয়ার হার বাড়ছে। সঙ্গে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। গত ১৫ দিনে প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে পাঁচ শতাধিক ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী সংক্রমিত হয়েছেন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১২ ব্যাংকার ও একটি ব্যাংকের গাড়িচালক । এছাড়া উপসর্গ দেখা দিয়েছে সহস্রাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর শরীরে। সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও বিভিন্ন মাধ্যম থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সাধারণ ছুটি, লকডাউন কিংবা বিধিনিষেধ সব সময়ই জরুরি সেবা হিসেবে চলছে ব্যাংকিং কার্যক্রম। নানা প্রতিবন্ধকতায় অফিসে যাতায়াত এবং ব্যাংকিং সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক সময় সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি যথাযথ পরিপালন সম্ভব হয় না। এসব কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন ব্যাংকাররা। বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। তাই দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। পাশাপাশি অধিক কর্মী সমাগম ঠেকাতে অনলাইন ব্যাংকিংয়ে জোর দেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত সপ্তাহে করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক খান ইউসুফজাই। তিনি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রিন্সিপাল অফিসার (কমন সার্ভিসেস ডিভিশন, ট্রান্সপোর্ট সেশন) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫২ বছর।

করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের দুই কর্মকর্তা। তাদের মধ্যে একজন সোনালী ব্যাংক ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের সিনিয়র অফিসার মো. আবু তাহের। তিনি গত ৭ এপ্রিল মারা যান। অন্যজন চট্টগ্রামের একটি শাখার সিনিয়র ভাইস প্রিন্সিপাল অফিসার। তার নাম জানা যায়নি।

চলতি সপ্তাহে নিলফারীতে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের একজন গাড়িচালক করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এছাড়া ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ের সহকারী-মহাব্যবস্থাপক জাকির হোসেনসহ আরও কয়েকজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ৯ এপ্রিল সামিয়া রহমান নামে ব্র্যাক ব্যাংকের সাবেক এক কর্মকর্তা মারা গেছেন। এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন যমুনা ব্যাংকের সিনিয়র অ্যাক্সিকিউটিভ অফিসার শরিফুল বারী মিল্টন। ৮ এপ্রিল বিকেল ৪টার দিকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এর আগে গত ২১ মার্চ তার করোনার পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০৮ সালে ইংরেজি বিভাগ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।

৬ এপ্রিল করোনায় আক্রান্ত হয়ে মাহফুজুল ইসলাম (৪৮) নামে আরেক ব্যাংক কর্মকর্তা মারা যান। তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকর্তা ছিলেন। ৬ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মাহফুজুল ইসলাম উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়নের নাজগ্রাম গ্রামের মৃত জাকের আলীর ছেলে।

৫ এপ্রিল সোমবার সন্ধ্যায় টাঙ্গাইলের গোপালপুরে করোনায় মারা যান ফৌজিয়া জেসমিন নামে এক ব্যাংক কর্মকর্তা। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। ফৌজিয়া জেসমিন অগ্রণী ব্যাংক জামালপুর শাখায় এজিএম পদে কর্মরত ছিলেন।

৫ এপ্রিল ভোরে অগ্রণী ব্যাংকের আরেক কর্মকর্তা মুহা. মুহিব্বুল্লাহ বাহার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তিনি অগ্রণী ব‍্যাংক পাবনায় আঞ্চলিক কার্যালয়ে প্রিন্সিপাল অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের (২০০৪-০৫ সেশন) ছাত্র ছিলেন।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৪ এপ্রিল মধ্যরাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা চৌধুরী মহিদুল হক মারা যান। হঠাৎ শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে অক্সিজেন সাপোর্টের জন্য তাকে নিয়ে এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে যান পরিবারের সদস্যরা। কোথাও আইসিইউ বেড খালি না থাকায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে পারেননি তারা। পরে রাস্তায় ঘুরতে ঘুরতে বিনাচিকিৎসায় ভোর ৫টা ২০ মিনিটে মারা যান তিনি।

৩ এপ্রিল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) সহকারী মহাব্যবস্থাপক শামীমা ফেরদৌস শিমুল। শামীমা ফেরদৌস শিমুল রাকাবের মনিটরিং শাখা প্রধানের দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি রাজশাহী নগরীর পদ্মা আবাসিক এলাকার বাসিন্দা।

৩১ মার্চ ভোরে নাটোরে নিজ বাসায় মারা যান করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া ন্যাশনাল ব্যাংক নাটোর শাখার প্রথম নির্বাহী কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম কনক।

নাটোর জেলার সিভিল সার্জন ডা. মিজানুর রহমান জানান, বেশ কিছু দিন ধরেই কনকের শরীরে করোনাভাইরাসের উপসর্গ ছিল। তিনি নাটোর সদর হাসপাতালে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন। পরীক্ষায় তার করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। এর পর থেকে তিনি নিজ বাড়িতেই চিকিৎসাধীন ছিলেন। ৩১ মার্চ ভোরে তিনি মারা যান।

৩০ মার্চ করোনায় মারা যান সিটি ব্যাংকের মিরপুর শাখার সিনিয়র অফিসার আতিয়া খানম। করোনায় আক্রান্ত হয়ে তিনি পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। আতিয়া খানম ১৮ বছর সিটি ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন।

আব্দুল মান্নান নামে সরকারি ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, আমার বিভাগে ২২ জনের মধ্যে জিএমসহ ৬ জন বর্তমানে করোনায় আক্রান্ত। কয়েকজনের উপসর্গ দেখা দিয়েছে। অফিস করাটা এখন সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংক বন্ধ রাখাটাই ভালো ছিল।

বিজ্ঞাপন

এ জাতীয় আরো খবর