করোনাভাইরাস প্রতিরোধে টিকা তৈরি, গবেষণা ও বণ্টন এবং চিকিৎসার জন্য সোমবার ৮০০ কোটি ডলারের একটি তহবিল গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিশ্ব নেতারা। তাদের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন। তবে এই দলে নেই যুক্তরাষ্ট্র।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার ব্রাসেলসে সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়গুলো নিশ্চিত করেছেন ইইউ প্রধান উরসুলা ফন দেয়ার লায়েন।
তহবিল গঠনের উদ্যোক্তাদের মধ্যে রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), ব্রিটেন, নরওয়ে ও সৌদি আরব। এ নিয়ে গতকাল একটি অনলাইন সম্মেলনও ডাকা হয়। জাপান, কানাডা, দক্ষিণ আফ্রিকাসহ বেশ কিছু দেশের নেতারা তাতে অংশ নেন। চীনের পক্ষ থেকে অংশ নেন ইইউয়ে নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত।
করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অর্থ সংগ্রহের এ প্রচেষ্টায় খোলা চিঠি দিয়ে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ইউরোপীয় দেশগুলোর নেতারা। আগামী কয়েক সপ্তাহ বা মাস ধরে এ তহবিল সংগ্রহ করা হবে। বিশ্ব ব্যাংক, বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন ও ধনী ব্যক্তিরা এই প্রচেষ্টায় যুক্ত হবেন।
ইইউ প্রধান উরসুলা বলেন, মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে আমরা করোনাভাইরাস মোকাবিলায় টিকা, রোগ নির্ণয়ের যন্ত্রপাতি এবং চিকিৎসার জন্য সামগ্রিকভাবে ৮০০ কোটি ডলারের সহায়তার প্রতিশ্রুতি পেয়েছি।
এ উদ্যোগে যুক্তরাষ্ট্র অংশ না নিলেও দেশটির পপ গায়িকা ম্যাডোনা ১০ লাখ ইউরো দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন উরসুলা। তবে যুক্তরাষ্ট্র কেন তহবিল গঠনের এই উদ্যোগে নেই তা নিয়ে দেশটির শীর্ষ কর্মকর্তাদের কেউ মুখ খোলেননি।
৮০০ কোটি ডলারের তহবিল গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা যথেষ্ট নয়। ইইউ প্রধান উরসুলা বলেছেন, ভবিষ্যতের লড়াইয়ে আরও অর্থের দরকার হতে পারে।
জাতিসংঘ সমর্থিত গ্লোবাল প্রিপেয়ার্ডনেস মনিটরিং বোর্ড সম্প্রতি একটি হিসাব কষে জানিয়েছিল, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রাথমিকভাবে ৮০০ কোটি ডলারের তহবিলের প্রয়োজন হতে পারে। তার মধ্যে ৩০০ কোটি ডলার ব্যয় হবে করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে গবেষণা, উৎপাদন ও সরবরাহের জন্য।
২০০ কোটি ডলার প্রয়োজন হবে বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের চিকিৎসা খরচে। ৭৫ কোটি ডলার দরকার হবে ভাইরাস পরীক্ষার কিটের জন্য। আরও ৭৫ কোটি ডলার দরকার স্বাস্থ্য কর্মীদের সুরক্ষা উপকরণের জন্য। আর ১২৫ কোটি ডলার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) হাতে থাকা উচিত, যাতে দরিদ্র দেশগুলোকে সেই তহবিল থেকে সহায়তা করা যায়।