প্রাণঘাতী করোনার থাবায় মোবাইল ব্যাংকিং লেনদেনে বড় পতন হয়েছে। গত এপ্রিল মাসে আগের মাসের তুলনায় ২৭ শতাংশ লেনদেন কমে গেছে। এর আগে ফেব্রুয়ারির তুলনায় গত মার্চে লেনদেন কমেছিল ৩.৭০ শতাংশ। এ সময়ে রেমিট্যান্স প্রেরণ ছাড়া অন্য সব ধরনের লেনদেন ব্যাপকভাবে কমেছে। তবে মোট হিসাব ও সচল হিসাবের সংখ্যা বেড়েছে।
মোবাইল সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারঘোষিত সাধারণ ছুটির সময়ে অফিস-আদালত মার্কেটপ্লেস সব কিছুই বন্ধ ছিল। এ ছাড়া বিভিন্ন শ্রমজীবী মানুষের আয় কমারও প্রভাব পড়েছে লেনদেনে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০ সালের এপ্রিল শেষে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে নিবন্ধিত গ্রাহকসংখ্যা দাঁড়িয়েছে আট কোটি ৫১ লাখ ২৯ হাজার, যা তার আগের মাসে ছিল আট কোটি ২৫ লাখ ৭৬ হাজার। অর্থাৎ এক মাসে নতুন গ্রাহক বেড়েছে ৩.১ শতাংশ। এ সময় পর্যন্ত সক্রিয় হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দুই কোটি ৮১ লাখ ৭০ হাজার। এক মাস আগে সক্রিয় হিসাবের সংখ্যা ছিল দুই কোটি ৬৮ লাখ ৪৫ হাজার। অর্থাৎ এক মাসে সক্রিয় হিসাব বেড়েছে ৪.৯ শতাংশ।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত এপ্রিলে মোট ২৯ হাজার ২৯ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা মার্চে ছিল ৩৯ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। ফলে এক মাসের ব্যবধানে লেনদেন কমেছে ২৭ শতাংশ। অন্যদিকে এ মাসে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ৯৬৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা, যা আগের মাসে ছিল এক হাজার ২৮৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। ফলে মার্চে দৈনিক লেনদেন কমেছে ২৪.৬ শতাংশ।
প্রতিবেদনে আরো দেখা যায়, এ মাসে মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবগুলোতে জমা পড়েছে আট হাজার ৭০৯ কোটি টাকা, যা আগের মাসের চেয়ে ৩৬.৭ শতাংশ বেশি। এ মাসে উত্তোলন হয়েছে আট হাজার ২২৭ কোটি টাকা, যা মার্চে ছিল ১২ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা। ব্যক্তি হিসাব থেকে ব্যক্তি হিসাবে অর্থ স্থানান্তর হয়েছে ৯ হাজার ২৪২ কোটি টাকা, যা আগের মাসে ছিল ৯ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা বিতরণ হয়েছে এক হাজার ৬৪ কোটি টাকা, যা আগের মাসের চেয়ে ১৪.৬ শতাংশ কম।
ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করা হয়েছে ২৭১ কোটি টাকা, আগের মাসে যা ছিল ৪৩৩ কোটি টাকা। এ সময়ে কেনাকাটার বিল পরিশোধ করা হয়েছে ২৩৩ কোটি টাকা, যা মার্চের তুলনায় ৫০.৯ শতাংশ কম। এ মাসে সরকারি পরিশোধ মাত্র ৭৩ কোটি টাকা, যা আগের মাসে ছিল ১২২ কোটি টাকা। তবে এ মাসে সুবিধাভোগীদের কাছে রেমিট্যান্স প্রেরণ বেড়েছে রেকর্ড ২৫৩ শতাংশ। মার্চে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে রেমিট্যান্স লেনদেনের পরিমাণ ছিল মাত্র ৩১ কোটি টাকা, যা এপ্রিলে বেড়ে হয়েছে ১১২ কোটি টাকা।