মুহাম্মদ আজম যখন ইংল্যান্ডের ব্রাডফোর্ড রয়েল ইনফারমারি হসপিটালে চিকিৎসার জন্য যান, তখন তার অবস্থা একেবারে গুরুতর। তার রক্তে ওই সময় সামান্য অক্সিজেন ছিল। চিকিৎসকরাও মনে করছিলেন, কোনোভাবেই তার বাঁচার সম্ভাবনা নেই। তবে শেষ পর্যন্ত প্রাণে বেঁচে গেছেন আজম।
তার সেরে ওঠার বিষয়টি জানিয়েছেন ডা. জন রাইট। তিনি বলেছেন, মুহাম্মদ আজমের বেঁচে ফেরার ঘটনাটি অলৌকিক। ৩৫ বছর বয়সী ওই ট্যাক্সিচালক গায়ে লাগিয়ে কাজ করা পছন্দ করতেন না। তবে তিনি নিজের শরীরের ওজন বাড়ানোর প্রতি খুব খেয়াল রাখতেন। তবে তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকির ব্যাপারে কোনোভাবেই ভাবেননি।
এদিকে তার শ্বাস নিতে সমস্যা শুরু হয়। এরপর তিনি সাহায্য চেয়ে ফোন করেন সরকারি নম্বরে। পরে তার বন্ধু হেলেম অ্যাম্বুলেন্স জোগাড় করেন। কারণ, ততক্ষণে আজম আর হাঁটতেই পারছিলেন না।
যখন মুহাম্মদ হাসপাতালে আসেন, ততক্ষণে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে তিনি। তাকে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর ৪৮ দিন তিনি কোমায় ছিলেন। আর মোট ৬৮ দিন তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।
ডা. মাইকেল ম্যাককোয়ে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে আজমকে চিকিৎসা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এত গুরুতর অবস্থায় থেকেও তার হাতে সেরে ওঠা সবচেয়ে কম বয়সী হলেন আজম। তার রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ ছিলো না বললেই চলে। এমনকি লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থাতেও তার সমস্যঅ হচ্ছিল না। এ ধরনের পরিস্থিতিতে সচরাচর হার্ট কিংবা মস্তিষ্কের সমস্যা হয়। কিন্তু আজমের সেটা ঘটেনি।
তিনি আরো বলেন, আজম সেরে উঠবে বলে কোনো সম্ভাবনা ছিল না বললেই চলে। তবে আমরা আশা ছাড়িনি। এরপর ধীরে ধীরে তার অবস্থার উন্নতি ঘটেছে। অবশ্য আমরা একদিন তার লাইফ সাপোর্ট খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। তার পরিবারও বারবার বলছিল, আর লাইফসাপোর্টে রাখবে না। কিন্তু পরিস্থিতি বিবেচনা করে তার লাইফসাপোর্ট খুলে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। যার ফলে আজ আজম সুস্থ।
সূত্র : বিবিসি