1. [email protected] : admi2017 :
  2. [email protected] : Daily Khabor : Daily Khabor
  3. [email protected] : rubel :
  4. [email protected] : shaker :
  5. [email protected] : shamim :
বৃহস্পতিবার, ০১ জুন ২০২৩, ০১:১৮ পূর্বাহ্ন

করোনা টেস্টের ভূতুড়ে ফলের ব্যবসা, ২৯ ল্যাবে বিশেষ নজর

ডেইলি খবর নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় রবিবার, ২৩ আগস্ট, ২০২০
  • ১৭১ বার পড়া হয়েছে

ডেইলি খবর ডেস্ক: করোনা টেস্টের ভূতুড়ে ফলের ব্যবসার সন্দেহ থাকায় দেশের ২৯ ল্যাবে বিশেষ নজরদারীতে। টেস্টেও নেগেটিভ-পজেটিভ রিপোর্ট নিয়ে নানা সমালোচনা ও প্রতারনা নিয়ে দেশ-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনার মুখে নজরদারী বাড়িয়েছে নানা সংস্থা। জানা গেছে আজ পজিটিভ তো কাল নেগেটিভ,এক ল্যাবে নেগেটিভ তো আরেক ল্যাবে পজিটিভ দেশে করোনাভাইরাস পরীক্ষার এমন ভূতুড়ে ফল নিয়ে উদ্বেগ-উৎ্কণ্ঠা আর ছোটাছুটিতে রীতিমতো ঘুম হারাম হয়ে যাচ্ছে ভুক্তভোগীদের। কোনটি সঠিক, কোনটি ভুল, তা নিয়ে সংশয় কাটছে না সহজে। এতে করোনা পরীক্ষায় আস্থাহীনতা কাটছে না; বরং আরো বাড়ছে।

এমন ‘ভূতুড়ে ফলের’ সুরাহা কিভাবে মিলতে পারে তার কোনো সঠিক সমাধান দিতে পারছে না খোদ তদারকি সংস্থাও; যদিও সরকারের তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে যে পরীক্ষার মান রক্ষায় কার্যক্রম চলছে। এর আওতায় এ পর্যন্ত করোনা পরীক্ষায় নিয়োজিত ২৯টি ল্যাবকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

সেই সঙ্গে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফলস পজিটিভ হওয়ার সংখ্যা খুবই কম, আর এতে বিপদের ঝুঁকিও তুলনামূলক কম। তবে ফলস নেগেটিভ খুবই বিপজ্জনক। কারণ কারো করোনা পরীক্ষায় ফলস নেগেটিভ ফল হলে ওই ব্যক্তি নিজেকে নিরাপদ মনে করে আইসোলেশনে যাবে না বা সতর্কতামূলক কোনো ব্যবস্থা নেবে না। এতে অন্যদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে যাবে। যে আশঙ্কা ফলস পজিটিভের ক্ষেত্রে নেই।

সম্প্রতি সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী ও বর্তমান সংসদ সদস্য শাজাহান খানের মেয়ের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট ভুল হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় হয়। ওই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ল্যাবরেটরির পরিচালক সংবাদ সম্মেলন করে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এরপর চলতি সপ্তাহে ডাক বিভাগের মহাপরিচালকের করোনা পরীক্ষার রিপোর্টও ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হওয়া সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রীর সামনে উপস্থিত ছিলেন। এদিকে ডাক বিভাগের মহাপরিচালকের করোনা পরীক্ষার ক্ষেত্রে তিনটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ফল নেগেটিভ এবং সরকারের রোগত্ব, রোগ নির্ণয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) ফল পজিটিভ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির সদ্য সাবেক পরিচালক ড. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা‘আমি দায়িত্ব নিয়েই বলতে পারি, আইইডিসিআরের ল্যাব বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও সিডিসি আটলান্টার এফিলিয়েটেড, যারা সার্বক্ষণিক এই ল্যাবের মান মনিটর করে থাকে। ফলে এখানকার ফলাফলের ওপর আস্থা রাখা উচিত যে কারোর। এ ছাড়া যেহেতু ফলস পজিটিভ হওয়ার সুযোগ তুলনামুলকভাবে কম, তাই এখানে যদি কারো ফল পজিটিভ হয়, সেটি ধরেই ওই রোগীর আইসোলেশনে থাকা উচিত।’

করোনাবিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও ভাইরোলজির অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, করোনা পরীক্ষায় নানা ধরনের ঘটনার কারণে মানুষের মধ্যে এক ধরনের আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে। মানুষ এক জায়গায় পরীক্ষা করে স্বস্তি বা ভরসা পাচ্ছে না। ফলে অনেকেই একাধিক জায়গায় পরীক্ষার জন্য ছোটাছুটি করছে; নানা রকম হয়রানির শিকার হচ্ছে। তিনি বলছেন, ‘সবার একটি বিষয় জেনে রাখা ভালো যে যদি কেউ দু-তিন জায়গায় পরীক্ষা করেন এবং কোনো একটি ফল পজিটিভ হয়, তবে ওই ব্যক্তিকে পজিটিভ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। করোনার বিষয়ে এই নির্দেশনা রয়েছে।’নমুনা সংগ্রহে ত্রুটির বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়ে অধ্যাপক নজরুল বলেন, ‘আমরা জোর দিচ্ছি নেগেটিভ ফলের ব্যাপারে। যত বেশি নেগেটিভ আসছে, তা সঠিক কি না সেটিই উদ্বেগের ব্যাপার। এ জন্য আমরা এখনো পরামর্শ দিচ্ছি টেকনোলজিস্টদের ভালো করে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য।’ এর কারণ ব্যাখা করে তিনি বলেন, তড়িঘড়ি করে ল্যাবগুলো স্থাপন করা হয়েছে এবং এসব ল্যাবে কাজে লাগানো টেকনোলজিস্টদের করোনার নমুনা সংগ্রহের প্রশিক্ষণ হাতে-কলমে দেওয়া হয়নি। অনলাইনে প্রশিক্ষণ দেওয়ার মান নিয়ে প্রশ্ন থাকতেই পারে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত দেশে মোট ১৪ লাখ সাত হাজার ৫৫৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে পজিটিভ হয়েছে দুই লাখ ৮৭ হাজার ৯৫৯টি বা ২০.৪৬ শতাংশ। বাকি ১১ লাখ ১৯ হাজার ৫৯৭টি বা ৭৯.৫৪ শতাংশ নেগেটিভ। দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরুতে শুধু আইইডিসিআরের ল্যাবেই পরীক্ষা হয়েছে। পরে পর্যায়ক্রমে ল্যাব বাড়ানো হয়। গতকাল পর্যন্ত ল্যাবসংখ্যা ৯১। এর মধ্যে ঢাকায় ৫৪টি এবং ঢাকার বাইরে ৩৭টি। অনেকগুলোই রয়েছে স্বাস্থ্য খাতের বাইরের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের আওতায়। এখন পর্যন্ত দেশে করোনা শনাক্তে শুধু আরটি-পিসিআর প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও ইউজিসি অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে মানুষের আস্থার ঘাটতি হয়েছে—এটি ঠিক। তবে এ ধরনের কোনো মহামারির সময় ফল নিয়ে এমন কিছু বিশৃঙ্খলা হতেই পারে। তাই আমি বলব, অনেক জায়গায় পরীক্ষার জন্য ছোটাছুটি না করে গ্রহণযোগ্য যেকোনো একটি প্রতিষ্ঠানেই পরীক্ষা করে ওই ফলাফলের ওপরই আস্থা রাখা দরকার। নয়তো বিভ্রান্তি আরো বাড়বে।’ তিনি বলছেন, যদি কারো উপসর্গ থাকার পরও ফল নেগেটিভ আসে, তবু তাকে পজিটিভ ধরে নেওয়া উচিত। আর যদি উপসর্গ না-ও থাকে, তবু পজিটিভ ফলকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত হবে মহামারির প্রেক্ষাপটে। কারণ এখন তো আক্রান্তদের মধ্যে বড় অংশেরই উপসর্গ নেই।

এ বিষয়ে আইইডিসিআরের সদ্য সাবেক পরিচালক ও বর্তমানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (উন্নয়ন ও পরিকল্পনা) অধ্যাপক ড. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘শুরু থেকেই আমরা করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা সীমিত রাখার পক্ষে ছিলাম শুধু পরীক্ষার মান নিয়ে সংশয়ের কারণে। কিন্তু পরে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় এবং বিভিন্ন মহলের চাপে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে যারাই ল্যাব চালু করতে আগ্রহী হয়েছে, তাদেরই আমরা অনুমতি দিতে বাধ্য হয়েছি। ফলে নানা রকম বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে। একাধিক অজ্ঞি চিকিৎসক মনে করেন মানুষ যত সচেতন হবেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন ততই তিনি নিরাপদ হবেন।

বিজ্ঞাপন

এ জাতীয় আরো খবর