1. [email protected] : admi2017 :
  2. [email protected] : Daily Khabor : Daily Khabor
  3. [email protected] : rubel :
  4. [email protected] : shaker :
  5. [email protected] : shamim :
রবিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ০১:৪২ অপরাহ্ন

কাগজের মুক্তিযোদ্ধা নাজমুলের দাপট, ভবনসহ জমি দখল প্রতারণা

ডেইলি খবর নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৭ মে, ২০২১
  • ২৮৯ বার পড়া হয়েছে

কাগজের মুক্তিযোদ্ধা নাজমুলের দাপট, প্রতারণা করে ভবনসহ জমি দখল নিয়ে তাতে সাইনবোর্ড লাগিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধে দেশের কোন অঞ্চলে কোথায় অংশ নিয়েছেন, কোন মুক্তিযোদ্ধাকে কী ধরনের সহযোগীতা করেছেন তার কোন তথ্য তিনি জানাতে পারেননি। নাজমুলের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ নিয়ে তারই বড় ভাই মোয়াজ্জেম হোসেনের প্রশ্ন ছোট ভাই নাজমুল হোসেন ১৯৭১ সালে কখন কোথায় মুক্তিযুদ্ধ করলো? সে তো কাগজের মুক্তিযোদ্ধা। প্রতারণার মাধ্যমে কৌশলে মুক্তিযুদ্ধের সার্টিফিকেট নিয়েছেন। আর তথ্য গোপন করে সরকার থেকে দেয়া মুক্তিযোদ্ধা ভাতা খাচ্ছে। পরিবারের কেউই জানে না নাজমুল মুক্তিযুদ্ধে কখন গিয়েছিলো? যুদ্ধ না করে, না গিয়ে-কিভাবে মুক্তিযুদ্ধের সাটিফিকেট বা সনদ পেলো? বাস্তবে যুদ্ধ না করে তিনি হয়েছেন কাগজের মুক্তিযোদ্ধা। পরিবারের সদস্যদের প্রশ্ন বছরের পর বছর মুক্তিযোদ্ধা ভাতাই বা কিভাবে পায়। সবই বড় ভাইয়ের কাছে মনে হয় ভুতরের কাজকারবার।

নাজমুল হোসেনের মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার বিষয়টি নিয়ে ঢাকার জিগাতলা আর গ্রামের বাড়িতে নানারকম গল্প আর কঠোর সমালোচনায় মুখরিত। বিষয়টি নিয়ে সার্টিফিকেট বা সনদ প্রাপ্ত নাজমুল হোসেনের কাছে বিভিন্ন সময়ে একাধিকবার জানতে চাইলে এর কোন উওর তিনি দেননি। মুক্তিযুদ্ধকালীন কোথায় প্রশিক্ষন নিয়েছিলেন? কি অস্ত্র দিয়ে প্রশিক্ষন নিয়েছিলেন? কত নম্বর সেক্টরে কার অধীনে কোথায় যুদ্ধ করেছেন? কমান্ডারের নাম কি? প্রশিক্ষণ ক্যাম্প কোথায় ছিলো বা কোন মুক্তিযোদ্ধাকে সহযোগিতা করেছেন? পানি পান করিয়েছেন কি-না এসব প্রশ্নের সঠিক জবাব তিনি দিতে পারেননী। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ার সময় তার বয়সই বা কত ছিলো? এসবের কোন উওর পাওয়া না গেলেও মুক্তিযোদ্ধার সনদ বা সার্টিফিকেটের জোড়ে অসম্ভবকে সম্ভব করার চেষ্টা করছেন।

সরেজমিনে নাজমুল হোসেনের সার্বিক খোজখবর নিয়ে জানা গেছে জিগাতলায় তার পিতার রেখে যাওয়া সাড়ে ৩ কাঠা জমি নিয়ে ছলচাতুরির নানা তথ্য। জমিটি গ্রেট হোল্ডিং লি: নামের এক ডেভলপারের সাথে ৬ তলা ভবন নির্মাণের চুক্তিবদ্ধ হয়ে ১১টি ফ্ল্যাট তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়ে ওই জমি ডেভেলাপার কে আম মোক্তার নামা (পাওয়ার অব অ্যাটর্নি) প্রদান করেন। যা মালিকানা রেজিস্ট্রি করে ডেভেলপারকে দিয়ে দেন। যদিও অন্যান্য ভাইদের সাথে তথ্য গোপন করে নিজের সুবিধা বজায় রেখে একাই পুরো সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয়। ডেভেলপারের সাথে চুক্তি অনুযায়ী ল্যান্ডওনার হিসাবে ৪টি ফ্ল্যাট নাজমুল গংরা পাবেন। উল্লেখ্য-যতদিন ভবনের বা ফ্ল্যাটের কাজ শেষ না হবে ততদিন ডেভেলাপার তাদেরকে বাড়ি ভাড়া বাবদ প্রতিমাসে ৪০ হাজার টাকা ভাড়া পরিশোধ করবেন। ২৪ মাসের মধ্যে ভবন নির্মানের কাজ শেষ করার চুক্তিবদ্ধ বা ডিট এগ্রিমেন্ট থাকলেও তা একাধিকবার সময় বাড়িয়ে নাজমুল এককভাবে ডেভেলপারের কাছ থেকে বাড়িভাড়া বাবদ একাধিকবার সময় বাড়িয়ে অতিরিক্ত ৪০ লাখ টাকা নিয়ে ৪ বছরের অধিক সময় পার করেনঅ এরপর ডেভেলাপার তাদেরকে বাড়িভাড়া দেয়া বন্ধ করে দেয়ায় ডেভেলাপারকে এলাকা ছাড়া করেন নাজমুল গংরা। এসময়ে অসমপন্ন কাজ ডেভেলাপারের কাছ থেকে যারা ফø্যাট ক্রয় করেছিলেন তাদের মধ্যে মো: সাইদ উদ্দিনসহ আরও দু জনকে রেজিস্টেশন দিবেন এই মর্মে নাজমুল গং প্রাপ্য ৪টি ফ্ল্যাটে অতিরিক্ত টাকার কাজ করিয়ে নেন। ভবনের অন্যান্য কাজ ফ্ল্যাটওনার ৬ জন মিলে (কমন কাজ) চালিয়ে গেলেও ভবন ও জমি দখলের কাজ হিসাবে নিজের নামের সাইনবোর্ডে এই জমির মালিক আক্তার বানু গং লিখে ঝুলিয়েছেন নাজমুল। অর্থাৎ ডেভেলাপার কে আম মোক্তার নামা (পাওয়ার অব অ্যাটর্নি) প্রদান করে দেয়া জমি এবং ফ্ল্যাট পুনরায় ল্যান্ডওনার নাজমুল গংরা কিভাবে আবার দখল করে নেয়? শুধু কি তাই, এরমধ্যে একজন ফ্ল্যাটওনার তার ফ্ল্যাটটি ব্যাংকেও বন্ধক দিয়েছে। তাহলে নাজমুল কিভাবে লিখেন এই জমির মালিক আক্তার বানু গং। প্রশ্ন হচ্ছে, যে জমি ডেভেলাপারকে আম মোক্তার নামা রেজিস্ট্রি করে দিয়ে দিলো-অর্থাৎ ডেভেলাপারকে লিখে দেয়া জমিতে ডেভেলাপার ৬ তলা ভবন নির্মাণ করলো ডেভেলাপারের পাওয়া ৭টি ফ্ল্যাটও বিক্রি করে দিলো। তাহলে সার্টিফিকেটধারী মুক্তিযোদ্ধা নাজমুল হোসেন এসব অন্যায়-অপকর্ম করেন কিভাবে? ডেভেলাপারের সাথে চুক্তি বাতিলের আলোচনার মহুর্তে (আনরেজিস্ট্রার্ড) থেকে যাওয়া ফ্ল্যাট ক্রেতা সাইদ উদ্দীনকে ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রি দিবেন আশ্বাস দিয়ে নানারকম ফন্দিফিকির করে তার কাছ থেকেও আরও কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় নাজমুল হোসেন। যা প্রতারণা। এরপর তথ্য গোপন করে ডেভেলাপারের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে গুন্ডা-মাস্তান দিয়ে ওই ভবন নির্মাণের কাজে যুক্ত শ্রমিকদের তাড়িয়ে দিয়ে জমি ও ফ্ল্যাট দখলে নেয় নাজমুল গং। বিষয়টি নিয়ে একাধিক অভিজ্ঞ আইনজীবী জানিয়েছেন এটা বেআইনি ও গর্হিতকাজ। যেখানে ডেভেলাপার কর্তৃক নির্মিত দন্ডায়মান ভবন রয়েছে, ডেভেলাপার একাধিক ক্রেতাকে ফ্ল্যাট রেজিস্টেশনও দিয়েছে সেখানে ঠুনকো অজুহাতে ওই জমি ও জমিতে নির্মিত ভবন-ফ্ল্যাট কোনটাই পুর্বের জমির মালিক দখল নিতে পারে না, দখলে যেতেও পারে না। এটা অন্যায় বেআইনি। ডেভেলাপার মামলায় জয়লাভ করলে ল্যান্ডওনার দাবিদাররা যে কয়টা ফ্ল্যাট রেজিস্টেশন দিবেন বা দিয়েছেন তা বাতিল হবে। প্রতারনার মামলায় পরবেন ল্যান্ডওনাররা এবং কি ডেভলপারের কাছ থেকে যে ফ্ল্যাট ল্যান্ডওনাররা পেয়েছেন যে কয়টা তারা রেজিস্টেশন দিয়েছেন সেই কয়টা ফ্ল্যাট তাদের কাছ থেকে হাতছাড়া হবে। এই অপরাধের জন্য ল্যান্ডওনাদের প্রতারনার মামলায় শাস্তিও হতে পারে। একাজ কোন আইনেই অনুমোদন করে না। যেহেতু ডেভেলাপারের সাথে সময়-সমযে চুক্তির মেয়াদ নাজমুল গংরা বাড়িয়েছেন তাই

ডেভেলাপারের দোষ খুজে পাওয়া মুসকিল হবে। সুত্র জানায় এসবই নাজমুল হোসেন করেছেন মুক্তিযোদ্ধার পরিচয়ে। স্থানীয়দের প্রশ্ন তিনি যদি আসল মুক্তিযোদ্ধা হন তাহলে এসব অপকর্ম করেন কিভাবে? মুক্তিযোদ্ধা বলে যা ইচ্ছে তাই করবে দেশের আইনে তা অনুমোদিত নয়। প্রশ্ন হচ্ছে তিনি আদৌ মুক্তিযোদ্ধা কি-না? যুদ্ধে না গিয়ে যুদ্ধ না করে সার্টিফিকেট বা মুক্তিযোদ্ধার সনদ পেলেন কি করে? জানা গেছে ডেভলপারকে ভবনের বাকি কাজ করতে না দিয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে ভবন গ্রেট হোল্ডিংয়ের জায়গায় আক্তার বানু লিখেে দিয়েছে।নাজমুল হোসেন। অবাক কান্ড হচ্ছে আইনকানুনের তোয়াক্কা না করে মামলা নিস্পক্তি না হওয়ার আগেই ভবনের ৩টি ফ্ল্যাটও নাজমুল ২ জনকে রেজিস্ট্রি করে দিয়েছেন। উল্লেখ্য-ভবন নির্মাণের চলমান সময়ে ডেভেলাপার (গ্রেট হোল্ডিং লি:) প্রথম তলার পুর্বপাশের,দ্বিতীয় তলার পশ্চিম পাশের এবং ৬ষ্ট তলার পুর্বপাশের ফ্ল্যাট-(মোট ৩টি) রেজিস্ট্রেশন দিয়েছেন। ভবনে মোট ফ্ল্যাটের সংখ্যা ১১টি। এরমধ্যে ডেভেলাপার পেয়েছেন ৭টি আর ল্যান্ডওনাররা পেয়েছেন ৪িিট। নাজমুল হোসেন গংরা তাদের প্রাপ্য ৪টি ফ্ল্যাট বুঝে নিয়ে এখন ডেভলপারের অবশিষ্ট ৪টি ফø্যাট দখল নিয়ে ৩টির রেজিস্টেশন দিয়েছেন। কোন আইনে নাজমুল হোসেন গংরা এই রেজিস্টেশন দিয়েছেন? কিশের বিনিময়ে এসব ফ্ল্যাট রেজিস্টেশন দিলেন? গ্রেট হোল্ডিং লি: এর চেয়ারম্যান শামিম রহমান জানিয়েছেন নাজমুল গং আমার কোম্পানির সাথে একাধিকবার চুক্তির মেয়াদ বাড়িয়ে বাড়িভাড়াবাবদ প্রায় অর্ধকোটি টাকা নিয়েছেন। আমার নির্মিত ভবনের তিনটি ফ্ল্যাটও আমি রেজিস্ট্রেশন দিয়েছি। বাকি কাজ সম্পন্ন করতে নাজমুল গং সময় বৃদ্ধির চুক্তি বাড়িয়েও আমার কাজে বাধা দিয়েছেন, লোকজনকে মারধর করে বিতাড়িত করেছেন। মিথ্যা মামরা দিয়ে জমির উপর আমার নির্মিত ফ্ল্যাট কমিশনে রেজিস্ট্রেশনের লোক এনে টাকা নিয়ে অন্যায়ভাবে রেজিস্ট্রেশন দিচ্ছেন,আদালতে মামলা করেছেন। মামলা চলমান। নাজমুল হোসেন একজন প্রতারক।

 

 

বিজ্ঞাপন

এ জাতীয় আরো খবর