1. [email protected] : admi2017 :
  2. [email protected] : Daily Khabor : Daily Khabor
  3. [email protected] : rubel :
  4. [email protected] : shaker :
  5. [email protected] : shamim :
মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৪:২৫ পূর্বাহ্ন

কারা সুইস ব্যাংকে টাকা জমা রাখলো?

ডেইলি খবর নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২০
  • ২৩১ বার পড়া হয়েছে

ডেইলি খবর ডেস্ক: সোনার বাংলার কষ্টের টাকা সুইস ব্যাংকে কারা রাখলো? বাংলাদেশিদের সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা জমা থাকলেও এখনো অজানা এর মালিক কারা। ব্যাংকের পক্ষ থেকে শুধু দেশভিত্তিক সংখ্যা জানালেও জানানো হয় না মালিকের তথ্য। এমনকি কোনো গ্রাহক মারা গেলে সে অর্থের খবরও জানতে পারে না তাদের উত্তরাধিকারীরা। অবশ্য বাংলাদেশিদের আগ্রহ এখন সুইস ব্যাংক থেকে সরে যাচ্ছে অন্যান্য দেশে। এখন দুবাই, হংকং, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় টাকা জমা রাখছে বাংলাদেশিরা। চীনের দিকেও আগ্রহ কারও কারও। লুক্সেমবার্গ, কেম্যান আইল্যান্ড, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড, পানামা কিংবা বারমুডার মতো দ্বীপরাষ্ট্রে যাচ্ছে অনেকেই। এছাড়া কানাডা, অস্ট্রেলিয়ায় সেকেন্ড হোম করে বিনিয়োগ করছে বাংলাদেশিরা।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী ড.ইফতেখারুজ্জামান বলেন,সুইস,মালয়েশিয়ান বা সিঙ্গাপুর যে কোনো ব্যাংকেরই এখন বাধ্যবাধকতা রয়েছে তথ্য দেওয়ার। কেন্দ্রীয় ব্যাংক, দুর্নীতি দমন কমিশন, অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড যদি একত্রে সেসব দেশের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করে তাহলে শুধু এ অর্থের বৈধতা যেমন জানা সম্ভব, তেমনি এগুলো ফিরিয়েও আনা সম্ভব। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন সিঙ্গাপুর থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার প্রয়াত ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর অর্থ ফিরিয়ে আনার কথা। তবে এরপর দেশের বাইরে যে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে তা কাদের খুঁজে বের করা অথবা ফিরিয়ে আনার তেমন কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।

ড.ইফতেখারুজ্জামান মনে করেন, অর্থ পাচার দমনে যথেষ্ট পদক্ষেপ না থাকায় একদিকে যেমন অপরাধীরা সুরক্ষা পাচ্ছে, অন্যদিকে পাচারও বাড়ছে।

সুইস ব্যাংকগুলোর সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন অনুসারে, কালো টাকার বিরুদ্ধে জোরালো অবস্থান নেওয়ায় ভারত, পাকিস্তানসহ প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে সুইস ব্যাংকে আমানত অনেক কমেছে। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যসব দেশের আমানত কমেছে অনেক। পাঁচ বছরে ভারতীয়দের জমা কমেছে অর্ধেক। মাত্র দুই বছরে পাকিস্তনিদের আমানত কমেছে এক-তৃতীয়াংশ। ২০১৯ সালে বাংলাদেশিদের মোট সঞ্চয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬০ কোটি ৩০ লাখ ফ্রাঙ্ক। বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫ হাজার ৪২৭ কোটি টাকা। এটি বাংলাদেশের কমপক্ষে ১২টি বেসরকারি ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধনের সমান। ২০১৮ সালে বাংলাদেশিদের রাখা ছিল ৫ হাজার ৫৫৯ কোটি টাকা।

জানা যায়, সোনার অলঙ্কার, শিল্পকর্ম ও অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র সুইস ব্যাংকে জমা রাখা হলে সেগুলো আর্থিক মূল্য হিসাব করে আমানতে যোগ করা হয় না। এ ছাড়া সুইস ব্যাংকে টাকা জমা রাখা যৌথ নাগরিকত্বধারী বাংলাদেশিরা অন্য দেশের নাগরিকত্ব উল্লেখ করে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে থাকলে সে টাকাও বাংলাদেশিদের হিসাবে আসবে না। এসব হিসাব করলে সুইস ব্যাংকগুলোয় বাংলাদেশিদের অলস টাকা পড়ে থাকার পরিমাণ আরও বেশি। সুইস ব্যাংকগুলোর ওয়েবসাইট অনুসারে, সুইস ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের বিশেষ করে বিদেশি গ্রাহকদের গোপনীয়তা কঠোরভাবে রক্ষা করে, যা নিয়ন্ত্রণ করে সুইস ফেডারেল ব্যাংকিং কমিশন। আইন অনুযায়ী একজন ব্যাংকার কখনো কোনো গ্রাহকের হিসাবের কোনো তথ্য নির্ধারিত দু-একটি পরিস্থিতি ছাড়া প্রকাশ করতে পারে না। ব্যত্যয় হলে ব্যাংকারের জেল হতে পারে, হতে পারে ৫০ হাজার সুইস ফ্রাঙ্ক অর্থদন্ড। এ গোপনীয়তার অধিকার আইনব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশ ও ফেডারেল সংবিধান দ্বারা সুরক্ষিত। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, পৃথিবীর অধিকাংশ দেশের কালো টাকাধারীদের প্রধান লক্ষ্যবস্তু ছিল সুইস ব্যাংক। কারণ একসময় সুইস ব্যাংক গোপনীয়তা রক্ষার ব্যাপারে ছিল অতি কঠোর। তবে সুইজারল্যান্ড জাতিসংঘের দুর্নীতিবিরোধী কনভেনশনে সই করা দেশ এবং সে দেশ বিশ্বে অসাধু রাজনীতিক, ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের পাচারকৃত অর্থের স্বর্গরাজ্য হিসেবে পরিচিতি লাভ করলে ১৯৯৭ সাল থেকেই দেশটির ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ে।

এ কারণে তখন থেকে সুইস ব্যাংকগুলো সংক্ষিপ্ত আকারে আমানতকারীর অর্থের তথ্য প্রকাশ করছে। এরপর বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধান ও স্বদেশে ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের চাপে সুইস ব্যাংকগুলো বর্তমানে বার্ষিক প্রতিবেদনে দেশওয়ারি বিদেশিদের জমাকৃত অর্থের পরিমাণ উল্লেখ করছে।

সুইজারল্যান্ডে গোপনীয়তা কিছুটা কমায় অনেকে এখন অবৈধ টাকা জমা রাখার জন্য ঝুঁকছেন অন্যান্য দেশে। ৬৬ দেশের সঙ্গে ব্যাংকের তথ্য লেনদেন করেছে সুইজারল্যান্ড : চলতি বছর সুইজারল্যান্ড পৃথিবীর ৬৬ দেশের সঙ্গে গ্রাহকের ব্যাংকিং গোপনীয়তা ও আর্থিক হিসাবের বিষয়ে তথ্য লেনদেন করেছে। অটোমেটিক এক্সচেঞ্জ অব ইনফরমেশন সংক্ষেপে এইওআইয়ের আওতায় এ কাজ করা হয়। কর ফাঁকি রোধে একটি বিশ্বব্যাপী চুক্তি বাস্তবায়নের আওতায় এ পদ্ধতি অনুসরণ করে সুইজারল্যান্ড ন্যাশনাল ব্যাংক। সুইস ফেডারেল ট্যাক্স অথরিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিদেশি বা বিদেশি আবাসিক বাসিন্দা যারা নিজেদের দেশেও কর নিয়মনীতির আওতায় পড়েন এ ধরনের প্রায় ৩ দশমিক ১ মিলিয়ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বিবরণ সরবরাহ করা হয়েছে বিভিন্ন দেশে। বিনিময়ে সুইজারল্যান্ড পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ৮ লাখ ১৫ হাজার সুইস নাগরিক/বাসিন্দার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য পেয়েছে। তবে যে দেশগুলো গোপনীয়তা ও তথ্য সুরক্ষা সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক প্রয়োজনীয়তা পূরণ করে না বা তথ্য গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত বেছে নিয়েছে তাদের সঙ্গে লেনদেন নেই সুইস ব্যাংকগুলোর। প্রশ্ন হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার খেটে খাওয়া মারুষের অর্থ কারা পাচার করছে তাদেরকে ধরা যায় না কেন?

বিজ্ঞাপন

এ জাতীয় আরো খবর