প্রায় সাত মাস পর গতকাল খুলেছে সিনেমা হল। এর আগে ১৬ই অক্টোবর থেকে হলগুলোতে সিনেমা প্রদর্শনীর অনুমতি দিয়েছে তথ্য মন্ত্রণালয়। তবে সিনেমা হল খোলার অনুমতি মিললেও গতকাল অনেক মালিকই হল খোলেননি। বিশেষ করে ঢাকার বড় সিনেমা হলগুলো এখনো বন্ধ আছে। রাজধানীতে শ্যামলী সিনেপ্লেক্স, বলাকা, মধুমতি এবং ঢাকার বাইরে যশোরের মণিহার সিনেমাসহ অনেক হল খোলা হয়নি। প্রযোজক পরিবেশক সমিতি সূত্র থেকে জানা যায়, গতকাল একমাত্র ছবি সাহসী হিরো আলম মুক্তি পেয়েছে। পরের দুই সপ্তাহ ২৩ ও ৩০শে অক্টোবর নতুন ছবি মুক্তির জন্য একটিও আবেদন পড়েনি। নতুন ছবি না হলে অনেক সিনেমা হলই খুলতে নারাজ হলমালিকেরা।
ঢাকার মধুমতি হলের কর্ণধার ইফতেখার উদ্দিন বলেন, সিনেমা হল খুলবো কীভাবে? নতুন ছবি মুক্তির কোনো খবর নেই। এই পরিস্থিতিতে প্রযোজকরা ভালো মানের নতুন ছবি মুক্তি না দিলে হল খুলতে চাচ্ছি না। কারণ, এ অবস্থায় হল খুললে লোকসান আরও বেড়ে যাবে। বলাকা সিনেমা হলের ব্যবস্থাপক এসএম শাহিন বলেন, আমাদের হল খুলতে এই মাস লেগে যেতে পারে। আগে দেখবো, তারপরে হল খুলবো। শ্যামলী সিনেপ্লেক্সের মালিক মো. হাফিজ বলেন, সিনেমা হল খুলেছে। ভালো কথা। কিন্তু এখন দেখবো নতুন ভালো কোনো ছবি আসে কি না। তারপরই হল খোলার সিদ্ধান্ত নেবো। যশোরের মণিহার সিনেমা হলের ব্যবস্থাপক তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, শুক্রবার হুট করে হল খোলার সিদ্ধান্ত নিলাম না। হল খোলার সংবাদটাও তো দর্শকদের জানতে হবে। হাতে সময় অল্প। তবে ২৩শে অক্টোবর খোলার বিষয়টি মোটামুটি চূড়ান্ত করেছি। এরমধ্যে যদি ভালো ছবি মুক্তি পায় তাহলে খোলা থাকবে হল। সিনেমা হলের পাশাপাশি খোলা হয়নি সিনেপ্লেক্স। এটি চালু হবে ২৩শে অক্টোবর থেকে। ধানমন্ডি, মহাখালী ও বসুন্ধরা সিটি সব শাখাই একই দিনে খুলে দেয়া হবে। প্রতিষ্ঠানটির জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, হঠাৎ হল খোলার সিদ্ধান্ত এলো। আমাদের প্রায় ৩০০ কর্মচারী গ্রামে চলে গেছেন। এখন তারা ঢাকায় ফিরবেন। এরপর তাদের সবাইকে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করানো হবে। শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে সিনেপ্লেক্স খোলা হবে। কয়েক মাস ধরেই চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা সরকারের কাছে আবেদন করে আসছেন সিনেমা হল খোলার জন্য। হল খোলার অনুমতি মিললেও সিনেমা প্রদর্শনীর জন্য কতটা প্রস্তুত হলমালিকেরা কিংবা সিনেমা মুক্তি দিতে প্রযোজকেরা কতটা আগ্রহী, এ প্রশ্ন এখন চলচ্চিত্রাঙ্গনে। প্রসঙ্গত, গত বুধবার তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মো. সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে সিনেমা হলের আসনসংখ্যা কমপক্ষে অর্ধেক খালি রাখার শর্তে এ অনুমতি দেয়া হয়েছে। ১৮ মার্চ থেকে সিনেমা হল বন্ধের সরকারি নির্দেশনা জারি হয়েছিল। সেদিন থেকে সারা দেশের সব সিনেমা হল বন্ধ হয়।