চকরিয়ার হারবাংয়ে গরু চুরির অভিযোগে মা ও দুই মেয়েসহ পাঁচজনের ওপর বর্বর ঘটনার রহস্য খুঁজতে গতকাল সোমবার সকাল থেকে কাজ শুরু করেছে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি। প্রথম দিন তদন্তদল ঘটনাস্থল পরিদর্শন, প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য নেওয়া ছাড়াও অভিযুক্ত চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম মিরানসহ ঘটনাস্থলে কোন কোন জনপ্রতিনিধি ছিলেন তাঁদের বক্তব্য নিয়েছে। এদিকে গরু চুরির ঘটনায় দায়ের করা মামলায় জেলে থাকা পাঁচ আসামির মধ্যে মা পারভীন আক্তার এবং দুই মেয়ে সেলিনা আক্তার সেলি ও রোজিনা আক্তারকে জামিন দিয়েছেন আদালত।
এদিকে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁরা হলেন হারবাং ইউনিয়নের বৃন্দাবনখিল গ্রামের জসীম উদ্দিন, গরু চুরির মামলার বাদী নজরুল ইসলাম ও নাছির উদ্দিন। ওই তিনজনকে আদালতে নেওয়া হলে বিচারক তাঁদের জেলহাজতে পাঠান।
গরু চুরির অভিযোগে কোমরে রশি বেঁধে গ্রামে ঘোরানোর ঘটনাটি গতকাল হাইকোর্টের নজরে আনা হয়। সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী অ্যাডভোকেট জেসমিন সুলতানা ও জামিউল হক ফয়সাল ওই ঘটনা গতকাল বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চের নজরে আনেন। তবে আদালত বলেছেন, যেহেতু ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠিত হয়েছে, তদন্ত হোক।
ওই কমিটির তদন্তে কোনো গাফিলতি হলে তখন আমরা বিষয়টি দেখব।
এদিকে বর্বর ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত কি না সেটির রহস্য খুঁজতে মাঠে নেমেছে জেলায় কর্মরত এনজিওগুলোর সমন্বিত সংগঠন কক্সবাজার সিভিল সোসাইটি এনজিও ফোরাম (সিসিএনএফ)। ওই ফোরামের সদস্যসচিব জাহাঙ্গীর আলম ও সদস্য নীলিমা আক্তার চৌধুরী বলেন, ‘ঘটনাটি জানার পর মূল রহস্য উদ্ঘাটনে আমরা কাজ করছি। গতকাল সকাল থেকে অসংখ্য ব্যক্তির সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।’
ঘটনার মূল রহস্য উদ্ঘাটনে কাজ করছে জেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি। কমিটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক (উপসচিব) শ্রাবস্তী রায়। তদন্তদলের সদস্য মো. তানভীর হোসেন বলেন, ‘আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যেই তদন্ত প্রতিবেদন জেলা প্রশাসকের কাছে দেব।’
এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার ওসি মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ঘটনার সময় বিভিন্নজনের ধারণ করা ফুটেজ সংগ্রহ করে অনেককেই শনাক্ত করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার তিনজনকে আদালতে নেওয়া হলে বিচারক তাঁদের জেলহাজতে পাঠান।
এদিকে অভিযুক্ত হারবাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মিরানুল ইসলাম মিরান বলেন, ‘বিভিন্ন মাধ্যমে আমাকে জড়িয়ে যেসব বক্তব্য আসছে তার কোনোটাই সত্য নয়। আমার সঙ্গে ওই পরিবারের কারোরই পূর্বযোগাযোগও নেই। আমি তাদের চিনিও না।’