1. [email protected] : admi2017 :
  2. [email protected] : Daily Khabor : Daily Khabor
  3. [email protected] : rubel :
  4. [email protected] : shaker :
  5. [email protected] : shamim :
বৃহস্পতিবার, ০১ জুন ২০২৩, ০২:৩৪ পূর্বাহ্ন

ছাত্রত্ব নেই, পাঁচ নেতার দখলে হলের পাঁচ কক্ষ

ডেইলি খবর নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৩ মার্চ, ২০২৩
  • ৪৫ বার পড়া হয়েছে

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আমানত হলের তৃতীয় তলার ৩১১ নম্বর কক্ষটি একেবারে আলাদা। ওই কক্ষের দরজায় লাগানো আছে বড় নামফলক—রেজাউল হক রুবেল, সভাপতি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। তার কক্ষে তিনজনের আসন। কিন্তু অন্য কেউ থাকার সুযোগ নেই। কক্ষটিতে ছাত্রলীগের এই নেতা একাই থাকেন। অথচ তার ছাত্রত্বই নেই।

রেজাউল হক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসংখ্যান বিভাগে ভর্তি হন প্রায় ১৭ বছর আগে, ২০০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষে। তিনি স্নাতক পাস করেন ২০১০ সালে। স্নাতকোত্তর পাস করেছেন ২০১৩ সালে। তার শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা অন্তত ৯ বছর আগেই স্নাতকোত্তর শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়েছেন। কেউ কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়েছেন। কিন্তু রেজাউল হক এখনো ক্যাম্পাসে রয়ে গেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন থাকেন শাহজালাল হলের ৩০৬ নম্বর কক্ষে। ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের মার্কেটিং বিভাগ থেকে স্নাতক শেষ করেছেন ২০১৬ সালে। এরপর তিনি স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেননি। তাঁর সহপাঠীরা বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়েছেন ছয় বছর আগে, ২০১৭ সালে।

আসন বরাদ্দ না হওয়ায় হলে থাকছেন বলে দাবি করেন রেজাউল হক ও ইকবাল হোসেন। তাঁরা প্রথম আলোকে বলেন, কর্তৃপক্ষ নতুন কাউকে বরাদ্দ দিলে তাঁরা বের হয়ে যাবেন।

রেজাউল ও ইকবালের পাশাপাশি ছাত্রত্ব না থাকা আরও তিন নেতা ক্যাম্পাসের দুটি হলের কক্ষ দখল করে একাই থাকছেন বছরের পর বছর। তাঁদের কারও ছাত্রত্ব নেই। এর মধ্যে শাহজালাল হলের ২১৮ তে যুগ্ম সম্পাদক রাজু মুন্সি ও ২২০ নম্বর কক্ষে থাকেন আরেক যুগ্ম সম্পাদক শামসুজ্জামান চৌধুরী। আর সহসভাপতি নাছির উদ্দিন থাকেন শাহ আমানত হলের ৩০৯ নম্বর কক্ষে। অথচ প্রতিটি কক্ষে দুই থেকে চারটি করে আসন। এ ছাড়া ছাত্রত্ব নেই এ রকম কমপক্ষে ১৫ জন নেতা একক না হলেও অন্যদের সঙ্গে কক্ষে থাকছেন। তারা সহসভাপতি ও যুগ্ম সম্পাদক পদধারী।

সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ছাত্রত্ব না থাকার পরও ছাত্রলীগের নেতাদের ক্যাম্পাসে থাকার বিষয়টি কর্তৃপক্ষের অজানা নয়। তবু কর্তৃপক্ষ কখনোই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেনি।

এর মধ্যে গত সোমবার প্রচারিত নির্দেশনায় ১৫ মার্চের মধ্যে অছাত্রদের ক্যাম্পাস ছাড়তে বলেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু অছাত্র নেতাদের ক্যাম্পাস ছেড়ে যাওয়ার বিষয়ে এখনো কোনো আলামত দেখা যাচ্ছে না।

অন্যদিকে একক কক্ষ দখল করে পাঁচ নেতার থাকার বিষয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রবিউল হাসান ভূঁইয়া। তবে তিনি বলেন, বহিষ্কৃত ও অছাত্রদের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব রেসিডেন্স হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিন কমিটি গত সোমবার যে নির্দেশনা দিয়েছে, সেটি বাস্তবায়নের জন্য তারা কাজ করবে।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতি দুটি পক্ষে বিভক্ত। এক পক্ষ সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ও অন্য পক্ষটি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।

এ দুই পক্ষ আবার ১১টি উপপক্ষে বিভক্ত। তাদের কাছ থেকে ‘অনুমতিপত্র’ নিয়ে শিক্ষার্থীরা হলে ওঠেন। কারণ, প্রায় ছয় বছর ধরে হলের আসন বরাদ্দ বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ। অবশ্য গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর আসন বরাদ্দের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। ৪ হাজার ৯২৫টি আসনের বিপরীতে আবেদন করেছেন ২ হাজার ৭৮০ জন। বরাদ্দ কার্যক্রম এখনো শেষ হয়নি।

ছাত্রলীগের খাতায় নাম লেখানোর শর্তে কিছু শিক্ষার্থী হলে উঠলেও সাধারণের ঠাঁই হয় না। শিক্ষার্থীরা বাড়তি টাকায় নগর ও ক্যাম্পাসের আশপাশের মেসে-কটেজে ভাড়া থাকেন। এতে গুনতে হয় বাড়তি টাকা। মেসে থাকেন এমন দুই শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মেসে থাকতে গিয়ে মাসে ন্যূনতম ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে।

ছাত্রলীগের নেতারা ক্যাম্পাস থেকে নানাভাবে আয় করছেন বলে মন্তব্য করেছেন ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ও শিক্ষাবিদ মু. সিকান্দর খান। তিনি বলেন, বছরের পর বছর নেতারা কেন ক্যাম্পাসে থাকছেন, এটি একটি বড় প্রশ্ন। কারণ, তারা ক্যাম্পাস থেকে নানাভাবে আয় করছেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারছে না।

বিজ্ঞাপন

এ জাতীয় আরো খবর