1. [email protected] : admi2017 :
  2. [email protected] : Daily Khabor : Daily Khabor
  3. [email protected] : rubel :
  4. [email protected] : shaker :
  5. [email protected] : shamim :
শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯:৪৪ অপরাহ্ন

জুয়াড়িদের ফাঁদে লোভী সাবেক সচিব

ডেইলি খবর নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০
  • ৩০১ বার পড়া হয়েছে

ডেইলি খবর ডেস্ক: জোয়াড়িরা যতই লোভ দেখাননা কেন লোভী না হলে তিনি এগুবেন না। এটাই আসল কথা। দায়িত্ব পালনকাওে দুর্নীতি না করলে এতো টাকা কোন সচিব-কর্মচারীর হতে পারেনা এটা যে কেউ বুঝে। ঘটনার বিবরনে জানা যায় আরসিডি বা রয়েল চিট ডিভিশন। নিজেরাই দিয়েছেন এ নাম। হাজার বা লাখ নয়, টার্গেট কোটি কোটি টাকা। এ জন্য নেওয়া হয় অদ্ভুত সব পন্থা। এক-দুটি ফ্ল্যাট নয়, বলা হয়, পুরো বাড়ি ভাড়া নেওয়ার কথা। চুক্তিপত্রের কথা বলে ফেলা হয় নানান ফাঁদে। যার অন্যতম হচ্ছে জুয়া। এ রকম একটি প্রতারণায় আড়াই কোটি খুইয়েছেন সাবেক এক সচিব। তিনি প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের সদস্যও ছিলেন।

ভারতীয় নাগরিক সেজে এই প্রতারণার ফাঁদ পাতেন মাসুদ নামের এক ব্যক্তি। পরিচয় পাকাপোক্ত করতে কথা বলেন হিন্দি ও ইংলিশে। আরও কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে তিনি গড়ে তুলেন একটি চক্র। রাজধানীর অভিজাত এলাকাগুলোতে বিলাসবহুল অফিস তাদের। সম্প্রতি এ চক্রের ছয়জন গ্রেফতার হয়েছেন। বাকিদেরও গ্রেফতারে তৎপর পুলিশ। গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন-মাসুদ খান, আসাদুজ্জামান, নাজির শেখ, নাসিম শেখ, এমদাদ উল্লাহ এবং নুরুল আমিন রতন। গ্রেফতার অভিযানে তাদের কাছ থেকে ৩৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়। গোয়েন্দা পুলিশ সূত্র জানায়, রাজধানীর ধানমন্ডি ২৭ নম্বর সড়কে একটি বাড়ির টু-লেট দেখে মাহমুদুল কবির তালুকদার নামে এক ব্যক্তি পুরো বাড়িটি ভাড়া নেওয়ার প্রস্তাব দেন। বাড়ির মালিক একজন সাবেক সচিব। মাসিক ভাড়া ঠিক হয় ৪০ লাখ টাকা। গত ২৫ আগস্ট ভাড়ার চুক্তি করতে ওই সচিবকে নিকুঞ্জ-২ এ একটি বাসায় ডেকে নেওয়া হয়।

বলা হয়, নানারকমের ব্যবসা তাদের। সচিবকে দেখানো হয় বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালঙ্কার, বিদেশি ব্র্যান্ডের দামি ঘড়িসহ অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র। এসবের আনুমানিক মূল্য ৪০ থেকে ৫০ কোটি টাকা। সচিবকে তাদের সঙ্গে বিনিয়োগের প্রস্তাব দেয়। কয়েক দিনে লাভ হবে ১০ থেকে ১৫ কোটি টাকা। অল্প সময়ে এত টাকা লাভের প্রস্তাবে পটে যান। পরের দিন পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে আবারও যান ওই বাসায়। এবার আসে তিন তাস খেলার প্রস্তাব। খেলতে বসলে প্রথমে ডামি খেলায় জিতিয়ে দেওয়া হয় সাবেক সচিবকে। পরের দিন আবারও জুয়ার আসর বসানো হয়। এবার সত্যি সত্যি জুয়া। সচিব জিতে গেছেন ১০ কোটি টাকা।

তবে শর্ত, এই ১০ কোটি টাকা পেতে হলে দেখাতে হবে আরও নগদ ১০ কোটি টাকা। জুয়ায় জেতা ১০ কোটি টাকা পেতে স্ত্রীর পৈতৃকসূত্রে পাওয়া হাতিরঝিলের সাড়ে চার কোটি টাকার জমি মাত্র ২ কোটি ১৫ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন। পরের দিন টাকা নিয়ে যান সেই বাসায়। টাকা পাশের রুমে রাখবে বলে যান। তাকে বসিয়ে রেখে একে একে পালিয়ে যান সবাই। কিছুক্ষণ পর তারা সচিবকে ফোনে জানিয়ে দেয়-এত টাকা লেনদেনের খবর জেনে গেছে গোয়েন্দা সংস্থা। বলে- ‘আপনি বাসায় চলে যান।’ এ ঘটনায় গত ৫ সেপ্টেম্বর মামলা হয় খিলক্ষেত থানায়। তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা পুলিশ। সন্ধান মেলে রয়েল চিট ডিভিশনের। যারা দীর্ঘদিন ধরেই এমন নানা অভিনব কায়দায় প্রতারণা করে আসছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে খোঁজ মেলে চক্রের হোতা মাসুদ স্ত্রীসহ ব্যাগ ভর্তি টাকা নিয়ে ব্যাংকে প্রবেশ করছেন। সেই টাকা কাউন্টারে জমা দেওয়া হচ্ছে ব্যাংকের লোকের মাধ্যমে। গত ১৩ সেপ্টেম্বর চক্রের হোতাসহ ছয়জনকে মহাখালী ডিওএইচএস থেকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। চক্রটি একেকটি বাড়িতে বড়জোর দুই মাস ভাড়া থাকে। ছয় মাসে তারা তিনটি বাসা বদল করেছে। আর বাড়ির মালিকরাও বাড়তি টাকার লোভে কোনো যাচাই না করেই বাড়ি ভাড়া দিয়ে থাকেন।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) গুলশান বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান জানান, চক্রটি কোটি টাকার মালিক এমন কাউকে টার্গেট করে কাজ শুরু করে। এখানে দুটি বিষয়, একটি হলো নির্বুদ্ধিতা এবং অপরটি হলো অতি লোভ। যারা অনেক টাকার মালিক তারা হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে আরও টাকার লোভে আলটিমেটলি ধরা খেয়ে থাকেন।

বিজ্ঞাপন

এ জাতীয় আরো খবর