বৃহত্তর নোয়াখালীর দুই এমপিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন বসুরহাট পৌরসভায় মেয়রপ্রার্থী ও আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জা। তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে নোয়াখালীতে একরাম চৌধুরী আর ফেনীতে নিজাম হাজারী যদি জামানত বজায় রাখতে পারেন; তবে আমি, আমি হিজরত করে এ দেশ ছেড়ে চলে যাব।
আবদুল কাদের মির্জা রোববার বসুরহাট পৌর নির্বাচন সামনে রেখে ৯নং ওয়ার্ড হাজিপাড়ায় এক পথসভায় এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমাদের নেতা ওবায়দুল কাদের সততা ও উন্নয়নের জন্য নির্বাচনে জিতবে। তার ওপরও আমার ক্ষোভ আছে। এখান থেকে ভোট নিতে হলে কথা আছে। ৭৫-এর পর কবিরহাটেও আমি রাজনীতি করি। হাজার হাজার কর্মী আমার আছে। ওরা কিছুই পায় না, ওদের কান্না আমার সহ্য হয় না। কোম্পানীগঞ্জে জিততে হলেও আমাদের লাগবে। শামীম নেতা, আইয়ুব নেতা, ওমুক নেতা-তমুক নেতা- তাদের দিকে নজর রাখতে হবে। আমাদের নেতাকে (ওবায়দুল কাদের) সজাগ থাকতে হবে।
আবদুল কাদের মির্জা নোয়াখালীর প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন। বলেন, নোয়াখালীর ডিসি, এসপি, জেলা নির্বাচন অফিসার সবাই ষড়যন্ত্র করছে। আমাদের নেতাদের অনেকের গায়ের জোর ও বল সব সময় থাকবে না। তিনি বলেন, নোয়াখালীর ডিসির মুখে এমপি একরাম চৌধুরীর মাস্ক। আমি যদি সত্য না বলি, আল্লাহর গজব আমার ওপর আকাশ ভেঙে পড়ুক। ডিসি নিরপেক্ষ নয়, প্রশাসনের বড়-বড়রা সব বেচা (বিক্রি) হয়ে গেছে। এরা আমার সঙ্গে নানান নাটক করছে।
এ সময় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দুই সিনিয়র নেতারও সমালোচনা করেন আবদুল কাদের মির্জা। নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, যে ব্যক্তি আমাকে পাগল ও উম্মাদ বলেছেন, তিনি গোপালগঞ্জের এমপি। যেখানে নাইনটি নাইন পার্সন মানুষ আওয়ামী লীগ করেন। তিনি তো নিজের যোগ্যতায় এমপি হননি আওয়ামী লীগ করেন সে কারণে এমপি হয়েছেন। তিনি আগে মন্ত্রী ছিলেন, এবার মন্ত্রীও হতে পারেননি– কেন বাদ পড়েছেন? দায়িত্বশীল নেতাদের উচিত খবর নিয়ে কথা বলা।
আওয়ামী লীগের আরেক কেন্দ্রীয় নেতা ও কুষ্টিয়ার এমপিরও সমালোচনা করেন কাদের মির্জা। কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙা ঠেতাতে ওই নেতার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
বলেন, আরেক নেতা কুষ্টিয়ার, তিনি আমার দায়িত্বশীলতার ঘাটতি দেখেন। আমি তো ৪৭ বছর ধরে রাজনীতি করি। সব কাজ সঠিক করি তা বলতে পারব না। আপনি তো কেন্দ্রীয় নেতা, কুষ্টিয়াতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙা হয়েছে, কী দায়িত্ব পালন করেছেন। তখন আপনার দায়িত্বশীলতা কোথায় গেছে।
তিনি বলেন, নজরুল ইসলাম বাটু নামে একজন টকশোতে বলেন, জামায়াত-বিএনপির ভোট পাওয়ার জন্য পরাজয়ের ভয়ে মির্জা এসব বলছেন। ভাগ্য ভালো আপনি এমপি হয়েছেন, আমার হয়তো সে ভাগ্য এখনও হয়নি।
আবদুল কাদের বলেন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স নামাজ-রোজার ধার-ধারে না। মানুষ অনেক কথা বলে, মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের দাবিদার। নুরা পাগলার (ভিপি নুর) সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলন করে। সারা দেশে কোনো জনসমর্থন নেই তাদের। আমার পথসভার সমান সমর্থনও নেই সারা দেশে। তারপরও কেন যেন টিভিওয়ালারা এদের মতো লোকদের ডাকে।
ওবায়দুল কাদেরকেও এ সময় সতর্ক করেন তার ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জা। বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেবকে আগামীতে জিততে হলে আরও সতর্ক হতে হবে। নিজের বউকে সামলাতে হবে। সঙ্গে যারা চলেন, তাদের ওপর নজর রাখতে হবে, কে কোথায় থেকে মাসোয়ারা নেয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে।
কাদের মির্জা বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেব ঘরে ঘরে চাকরি দেবেন বলে অঙ্গীকার করেছিলেন। সে চাকরি এখন কোথায়? এ কথা বললে আমি পাগল, উন্মাদ!
এ সময় ‘শরম যদি লাগে গো… ঘোমটা দিয়ে চলো গো’ বলে একটা ছন্দ বলেন কাদের মির্জা।