মাহমুদা আক্তার খানম: দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়বে না আওয়ামী লীগ। নির্বাচন শেষ হওয়ার পরবর্তী দেড়সপ্তাহ সারাদেশ রাখবে নজরদারিতে। সাংগঠনিক কর্মসুচির মধ্য দিয়ে ভোটের আগে আর রাজপথ দখলে রাখবে আওয়ামী লীগ। সুত্র সুত্রগুলোর সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। ক্ষমতাসীন দলের একাধিক সিনিয়র নেতার সাথে আলাপ কওে জানা গেছে বিএনপিসহ বিরোধীদের হরতাল-অবরোধসহ সব কর্মসূচির দিনে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবে ক্ষমতাসনীরাও। এসব কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নেতাকর্মীদের নির্বাচন পর্যন্ত চাঙা রাখবে আওয়ামী লীগ। একই সঙ্গে সামনের দিনগুলোয় জোট শরিকদেরও বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে সক্রিয় রেখে পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ এই সময়ে বিভিন্ন পেশাজীবী ও সমমনাদেরও পাশে রাখবে আওয়ামী লীগ। আলাদা কর্মসূচি নিয়ে তারাও সরব হবে। তবে বিদেশি চাপ ও বিতর্ক এড়াতে আগের মতোই বিশৃঙ্খলা এড়িয়ে চলতে নেতাকর্মীদের কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নেতাকর্মিরাও সতর্ক অবস্থানেই থাকবে। সরকার বিরোধীদের আন্দোলন মোকাবিলার পাশাপাশি নির্বাচনি প্রস্তুতিও এগিয়ে নিচ্ছে দলটি। নির্বাচনি জনসংযোগ, প্রার্থী যাচাই-বাছাই, ইশতেহার প্রণয়নসহ গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো চালিয়ে যাবে দলটি। একই সঙ্গে বর্তমান সরকারের উন্নয়নচিত্র তুলে ধরা এবং বিরোধী পক্ষের গুজব প্রতিরোধের প্রস্তুতি জোরালো করছে ক্ষমতাসীনরা। দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা বলছেন,বিএনপি আন্দোলনের নামে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়। এর বিরুদ্ধে ভোটের আগ পর্যন্ত তারা নানারকম সাংগঠনিক কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবেন। যত বাধা কিংবা চ্যালেঞ্জ আসুক না কেন, তা রাজনৈতিক ও শান্তিপ্রিয় কমৃসুচি পালনের মধ্য দিয়ে মোবিলা করা হবে। আওয়ামী লীগের একাধিক প্রেসিডিয়াম সদস্য জানিয়েছেন সামনের দিনগুলোতে সরকার বিরোধী আন্দোলনকারী বিএনপির কর্মসূচি ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে রঙিন বেলুনের মতো চুপসে যাবে। যাদেও আন্দোলনের সাথে সাধারন জনগন থাকেনা তাদের আন্দোণর সফল হয় না। সঙ্গে জনগণ ও জনসমর্থন কোনটাই নেই। তাদের এসব কর্মসূচি জনগণ মানে না। আমরা রাজপথে ছিলাম, আছি এবং থাকব। আমাদের লোকবল, কর্মী, সমর্থক দিনদিন আরও বাড়ছে। রাজপথ আমাদের দখলেই থাকবে। আমরা কাউকে বিশৃঙ্খলা ও অশান্তি করতে দেব না। কেউ অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করলে তাদের প্রতিহত করতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা সব সময় প্রস্তুত আছে, থাকবে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বলেন বিএনপি একটা সন্ত্রাসী দল। দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করাই তাদের মূল লক্ষ্য। এ লক্ষ্য সামনে রেখে তারা আবারও তাদের পুরোনো রূপে ফিরে গেছে। সন্ত্রাসী কর্মকান্ড শুরু করেছে। কিন্তু তারা গত ২০১৩ সালে ২০১৪-১৫ সালের মতো পরিস্থিতি তৈরি করতে পারবে না। জনগণই এগুলো প্রতিহত করবে। আওয়ামী লীগ নির্বাচন সামনে রেখে প্রচার-প্রচারণা, সভা-সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবে। পাড়া-মহল্লায়ও সজাগ আছে আওযামী লীগের নেতাকর্মিরা।
এদিকে গত বছরের শেষের দিক থেকে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছিল সরকার বিরোধী বিএনপি। তাদের সব কর্মসূচির দিন নানা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামে আওয়ামী লীগও। পাড়া-মহল্লা এবং প্রতিটি থানা-ওয়ার্ডে সতর্ক পাহারায় ছিলেন দলটির নেতাকর্মীরা। ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ করে বিএনপি। এদিন আওয়ামী লীগও রাজধানীতে পালটা মহাসমাবেশ করে। মহসমাবেশের দিনের ঘটনার পর সারা দেশে হরতাল ডাকে বিএনপি। এদিন ঢাকাসহ সারা দেশে শান্তি সমাবেশ করে আওয়ামী লীগ। এরপর বিএনপির তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচির দিনও নানা কর্মসূচির মাধ্যমে রাজপথ নিজেদের দখলে রেখেছিল ক্ষমতাসীনরা। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২৮ অক্টোবরের পর বিএনপি হরতাল-অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচিতে চলে গেছে। বিএনপি ফের টানা অবরোধ ডেকেছে। এ মাসের মাঝামাঝিতে তফশিল ঘোষণা করা হবে। এরপরেই জাতীয় নির্বাচন। ফলে এখন আর কোনোভাবেই রাজপথের নিয়ন্ত্রণ হাতছাড়া করবেনা আওয়ামী লীগ। ফলে সামনের দিনের প্রতিটি কর্মসূচির দিনেও নানা সাংগঠনিক কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো। আন্দোলন বা কর্মসূচির নামে কেউ যেন বিশৃঙ্খলা করতে না পারে, সেজন্য সতর্ক পাহারায় থাকেন তারা। ভোট পর্যন্ত মাঠেই বসবাস করতে চায় আওযামী লীগ। নির্বাচনে জয় লাভের মধ্য দিয়েই ঘওে ফিরতে চায় দলের নেতাকর্মিরা।