1. [email protected] : admi2017 :
  2. [email protected] : Daily Khabor : Daily Khabor
  3. [email protected] : rubel :
  4. [email protected] : shaker :
  5. [email protected] : shamim :
বৃহস্পতিবার, ০১ জুন ২০২৩, ১২:৩৭ পূর্বাহ্ন

পাপুলকে ‘নিরপরাধ’ সনদ দিয়েছিল কুয়েত!

ডেইলি খবর নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১৪ জুলাই, ২০২০
  • ২৬২ বার পড়া হয়েছে

কুয়েতের কারাগারে আটক সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী সহিদ ইসলাম পাপুলকে গত ফেব্রুয়ারি মাসেই ‘সদাচরণ’ ও ‘নিরপরাধ’ সনদ দিয়েছিল ওই দেশটির কর্তৃপক্ষ। প্রভাব খাটিয়ে তিনি ওই সনদগুলো সংগ্রহ করেছিলেন কি না তা স্পষ্ট নয়। কারণ ওই সনদগুলো প্রদানের সঙ্গে সম্পৃক্ত দপ্তরগুলোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে পাপুলের যোগসাজশ ও অবৈধ লেনদেনের অভিযোগে তদন্ত চলছে বলে কুয়েতের গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

লক্ষ্মীপুর-২ আসনের এমপি পাপুল গত ৬ জুন কুয়েতে গ্রেপ্তার জন। তাঁর বিরূদ্ধে মানবপাচার, অর্থপাচার, ঘুষ লেনদেন ও শ্রমিক নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে। আগামী ১৯ জুলাই তাঁর বিরূদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। তাঁর কয়েকজন কুয়েতি সহযোগীও ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন।

কুয়েতে বাংলাদেশের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত এস এম আবুল কালাম গতকাল সোমবার বিকালে কালের কণ্ঠকে বলেছেন, এমপি পাপুলকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে গতকাল পর্যন্ত কুয়েত কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি। এমনকি গত সপ্তাহে কুয়েতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বিদায়ী সাক্ষাতের সময়ও এ বিষয়টি ওঠেনি।

জানা গেছে, ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বাংলাদেশে কুয়েত দূতাবাসের কাছে এমপি পাপুলের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল। এখন পর্যন্ত দূতাবাস কিছু জানায়নি। কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, পাপুলের বিষয়টি বাংলাদেশের জন্য বিব্রতকর। তাই এ বিষয়টি নিয়ে কুয়েতের উর্ধ্বতন পর্যায়ে যোগাযোগের পরিকল্পনা আপাতত নেই।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন সম্প্রতি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, পাপুল বাংলাদেশের সংসদ সদস্য হিসেবে কুয়েতে গ্রেপ্তার হননি। তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী হিসেবে। তিনি কূটনৈতিক বা অফিসিয়াল পাসপোর্ট নিয়েও কুয়েতে যাননি। সম্ভবত তিনি কুয়েতের ‘লোকাল রেসিডেন্ট’। প্রায় ৩০ বছর ধরে তিনি সেখানে আছেন।

পাপুলের বিরূদ্ধে মানবপাচারের অভিযোগ বিষয়ে কুয়েতের আল-কাবাস পত্রিকায় গত ফেব্রুয়ারি মাসে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গুরুত্ব দেয়নি এমন নয়। এমপি পাপুলের বিরূদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে কুয়েতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এস এম আবুল কালামের কাছে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম জানতে চেয়েছিলেন। জবাবে রাষ্ট্রদূত আবুল কালাম তাঁর প্রতিবেদন পাঠানোর পাশাপাশি এমপি পাপুলের কাছে থাকা ‘গুড কনডাক্ট’ (সদাচরণ) ও ‘নট কনভিক্টেড’ (দোষী সাব্যস্ত নয়) সনদের অনুলিপি পাঠিয়েছিলেন ঢাকায়।

রাষ্ট্রদূত বলেছেন, এমপি পাপুলকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর তিনি সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদককে দূতাবাসে আমন্ত্রণ জানিয়ে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চেয়েছিলেন। ওই প্রতিবেদক তাঁকে বলেছিলেন, তিনি অভিযোগের বিষয়ে লোকমুখে শুনেছেন।

মানবপাচারের অভিযোগ প্রসঙ্গে ওই প্রতিবেদককে রাষ্ট্রদূত বলেছিলেন, কম্পানিগুলো ‘অনাপত্তিপত্র’ ও ভিসার মাধ্যমে লোক আনছে। এটি মানবপাচার কীভাবে হয়? এরও কোনো সুস্পষ্ট জবাব দিতে পারেননি আল-কাবাস পত্রিকার ওই প্রতিবেদক।

রাষ্ট্রদূত ঢাকায় এ বিষয়ে পাঠানো প্রতিবেদনে লিখেছিলেন, আল-কাবাসে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদন ‘ভিত্তিহীন’ এবং কারো দ্বারা প্ররোচিত হয়ে প্রকাশ করা হয়েছে বলেই তাঁর ধারণা।

রাষ্ট্রদূত এ বিষয়ে যুক্তি দেখিয়েছিলেন, কোনো প্রবাসীর বিরূদ্ধে মামলা হলে কুয়েত সরকার তার দেশত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং বিদেশ থেকে কুয়েতে ঢোকার সময়ই গ্রেপ্তার করে। এমপি পাপুলের কুয়েতে ঢুকতে সমস্যা হয়নি। আল-কাবাস পত্রিকায় ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পরও তিনি কুয়েতে স্বাভাবিক চলাফেরা ও ব্যবসা-বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এছাড়া কুয়েতের জেনারেল ডিপার্টমেন্ট অব ক্রিমিনাল এভিডেন্স এমপি পাপুলকে ‘গুড কনডাক্ট সার্টিফিকেট’ দিয়েছে। কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ক্রিমিনাল এভিডেন্স বিভাগও তাঁকে ‘নট কনভিক্টেড’ বলে প্রত্যয়নপত্র দিয়েছে।

এ বিষয়ে গতকাল জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত এস এম আবুল কালাম বলেন, তিনি এমপি পাপুলের কাছে আল-কাবাস পত্রিকার প্রতিবেদনে উত্থাপিত অভিযোগ বিষয়ে জানতে চেয়েছিলেন। এমপি পাপুল অভিযোগ নাকচ করে রাষ্ট্রদূতকে কুয়েতে কর্তৃপক্ষের দেওয়া সেই সনদ দুটির প্রতিলিপি পাঠিয়েছিলেন। আল-কাবাস পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে কুয়েতের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোতে যোগাযোগ করেও এমপি পাপুলের বিরূদ্ধে অভিযোগ বা মামলার তথ্য তিনি পাননি।

জানা গেছে, কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘জেনারেল ডিপার্টমেন্ট অব ক্রিমিনাল এভিডেন্সের’ অধীন ‘ডিপার্টমেন্ট অব আইডেন্টিফিকেশন অ্যান্ড অটোমেটেড সার্চ’ থেকে পাপুলের নামে ‘নট কনভিক্টেড’ সার্টিফিকেটটি ইস্যু করা হয়েছিল গত ১৭ ফেব্রুয়ারি। সেখানে তাঁর জাতীয়তা ‘বাংলাদেশ’ লেখা আছে। একই দিনে পাপুলের নামে ‘গুড কনডাক্ট সার্টিফিকেট’ ইস্যু করা হয়েছিল। ওই সনদ মূলত বিদেশ ভ্রমণের জন্য ব্যবহৃত হয়।

এদিকে কুয়েতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এস এম আবুল কালামের মেয়াদ এ মাসেই শেষ হচ্ছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল সোমবার কুয়েতে বাংলাদেশে নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে মেজর জেনারেল মো. আশিকুজ্জামানকে নিয়োগ দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। সুত্র: কালের কণ্ঠ

বিজ্ঞাপন

এ জাতীয় আরো খবর