1. [email protected] : admi2017 :
  2. [email protected] : Daily Khabor : Daily Khabor
  3. [email protected] : rubel :
  4. [email protected] : shaker :
  5. [email protected] : shamim :
বুধবার, ২২ মার্চ ২০২৩, ০২:৩২ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশের পিপিইর চাহিদা আকাশচুম্বী, রপ্তানি হলো ৭১ দেশে

ডেইলি খবর নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০
  • ১৫৫ বার পড়া হয়েছে

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের বিস্তারে ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রীর (পিপিই) চাহিদা হঠাৎ করেই আকাশচুম্বী হয়ে যায়। প্রাথমিক সংকট কাটিয়ে সেই চাহিদা পূরণে বিশ্ববাজারে ভালোভাবেই নিজেদের অবস্থান জানান দিয়েছে বাংলাদেশ। গত অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ৫০ কোটি ১০ লাখ ডলারের পিপিই সামগ্রী রপ্তানি হয়েছে বিশ্বের ৭১টি দেশে। তবে গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত এক বছরের হিসাবে পিপিই রপ্তানি দাঁড়ায় প্রায় ৫২ কোটি ডলার বা চার হাজার ৪১৪ কোটি টাকা। তবে পিপিই রপ্তানিকে আপৎকালীন পণ্য হিসেবে উল্লেখ করে এই ব্যবসার ভবিষ্যৎ নিয়ে খুব বেশি আশাবাদী হতে চান না উদ্যোক্তারা। তাঁদের মতে, করোনার কার্যকর ভ্যাকসিন বাজারে চলে এলে পিপিই ব্যবসায় ধস নামতে পারে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বিজিএমইএ সূত্রে প্রাপ্ত পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে জানা যায়, গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ৫০ কোটি ১০ লাখ ডলার বা ৪২৫৮ কোটি টাকার পিপিই রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে পিপিই গাউন রপ্তানি হয়েছে ৩৫ কোটি ১৫ লাখ ডলারের। বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের ৬১টি দেশে পিপিই গাউন রপ্তানি হলেও সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয়েছে জার্মানিতে। এই দেশটিতে আট কোটি ৬২ লাখ ডলার বা ৭৩৩ কোটি টাকা সমপরিমাণের পিপিই গাউন রপ্তানি হয়েছে গত অর্থবছরে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে পাঁচ কোটি এবং বেলজিয়ামে রপ্তানি হয়েছে চার কোটি ১১ লাখ ডলারের গাউন। অন্যান্য চিকিৎসা সুরক্ষাসামগ্রী রপ্তানি হয়েছে ১০ কোটি ১২ লাখ ডলার। একটি লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে গত এক বছরে ফেস কাভার, ওভেন ও সার্জিক্যাল মাস্ক রপ্তানি হয়েছে তিন কোটি ৯৩ লাখ ডলার। এর মধ্যে তিন স্তরের সার্জিক্যাল মাস্কই শুধু রপ্তানি হয়েছে এক কোটি ৬৭ লাখ ডলার বা ১৪২ কোটি টাকার। সার্জিক্যাল মাস্কের ৬৮ শতাংশ বা এক কোটি ১৪ লাখ ডলার রপ্তানি হয়েছে তুরস্কে। এ ছাড়া কানাডায় গিয়েছে ২০ লাখ ডলারের সার্জিক্যাল মাস্ক।

তবে পিপিই রপ্তানিতে চলতি অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট মাসের চিত্র খুবই আশাব্যঞ্জক। অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে এই পণ্যটি রপ্তানি হয়েছে ১৩ কোটি সাড়ে ১২ লাখ ডলারের, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১৬ শতাংশ বেশি। জুলাই-আগস্ট মাসে পিপিই রপ্তানি যে গতিতে চলছে তাতে এই প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বছর শেষে গত অর্থবছরের দ্বিগুণ রপ্তানি হতে পারে এই খাত থেকে।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) তথ্য অনুসারে, বিশ্বব্যাপী চাহিদা মেটাতে বর্তমানে পিপিই রপ্তানি করছে ৩৩টি দেশি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে বৃহত্তম চালানটি শীর্ষস্থানীয় টেক্সটাইল এবং পোশাক পণ্য রপ্তানিকারী বেক্সিমকো গ্রুপ করেছিল ইউএস ব্র্যান্ড হেনসকে। ওই এক চালানে ৬৫ লাখ পিস পিপিই গাউন রপ্তানি হয়।

এদিকে গত মার্চে দেশে করোনা বিস্তারের শুরুতেই যখন পিপিই গাউনের প্রচণ্ড সংকট, ঠিক সেই সময় ত্রাতা হয়ে হাজির হয়েছিল চট্টগ্রাম ইপিজেডে অবস্থিত স্মার্ট জ্যাকেট লিমিটেড। সে সময় তারা তাত্ক্ষণিকভাবে সরকারকে প্রায় দুই লাখ পিপিই গাউন সরবরাহ করেছিল। এ ছাড়া চট্টগ্রামের কর্ণফুলী ইপিজেডের জিবি ইন্টারন্যাশনাল, মুস্তফা গার্মেন্টস, হ্যারডস গার্মেন্টস পিপিই উত্পাদন করছে। মাস্ক রপ্তানি করছে ফোর এইচ গ্রুপ, ক্লিফটন গ্রুপ, এশিয়ান অ্যাপারেলের মতো বড় বড় গ্রুপ।

স্মার্ট জ্যাকেটের নির্বাহী পরিচালক বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, “আমরা আমেরিকান প্রতিষ্ঠান ‘উডব্রিজ’-এর জন্য পাঁচ বছর ধরে পিপিই তৈরি করে আসছি। মূলত নায়াগ্রা জলপ্রপাত দেখতে আসা পর্যটকরা এই পিপিই ব্যবহার করে থাকে। প্রতি মাসে তিন থেকে চার লাখ পিপিইর অর্ডার আগামী ২০২৩ সাল পর্যন্ত বুকিং রয়েছে। এ ছাড়া অনেক বায়ার যোগাযোগ করছেন পিপিই গাউন তৈরির ব্যাপারে। কিন্তু আমরা রেগুলার বায়ারদের প্রাধান্য দিচ্ছি। কারণ করোনার কার্যকর ভ্যাকসিন চলে এলে সুরক্ষাসামগ্রীর চাহিদা কমে যেতে পারে।”

করোনায় মাস্কের তীব্র চাহিদার কথা মাথায় রেখে চীন থেকে সার্জিক্যাল মাস্ক তৈরির অটোমেটিক মেশিন আমদানি করেছেন বিজিএমইএ পরিচালক ও ফ্যামিলিটেক্স গার্মেন্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেরাজ-ই-মোস্তফা। তবে তিন স্তরের সার্জিক্যাল মাস্কের কাঁচামাল সংকটের অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘চীন সার্জিক্যাল মাস্ক তৈরির মেশিন বিক্রি করলেও প্রয়োজনীয় কাঁচামাল দিচ্ছে না।’

পিপিই পণ্যের খুব বেশি ভবিষ্যৎ দেখছেন না ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের সভাপতি ও বিজিএমইএর সাবেক প্রথম সহসভাপতি আবু তৈয়বও। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের বিস্তারে আতঙ্কের কারণে আপৎকালীন পণ্য হিসেবে পিপিই সামগ্রীর ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়েছে। তবে এর ভবিষ্যৎ নিয়ে মন্তব্য করার মতো সময় এখনো আসেনি। মনে হয় না পিপিইর খুব বড় মার্কেটিং হবে। কারণ কোনো বায়ার দীর্ঘমেয়াদে অর্ডার দিতে চায় না।’

বিজ্ঞাপন

এ জাতীয় আরো খবর