যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মঙ্গলবার অভিজ্ঞ ছয় কূটনীতিক ও নীতিনির্ধারকদের পরিচয় করিয়ে দিতে গিয়ে বলেছেন, আমেরিকা ফিরে এসেছে। বিশ্বে নেতৃত্ব দিতে আমেরিকা প্রস্তুত।
এসব কূটনীতিক ও নীতিনির্ধারকদের নিয়ে তিনি তার জাতীয় নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক টিম গঠন করছেন।
এ টিমে রয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রী, গোয়েন্দাপ্রধান, জাতিসংঘ এবং জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক রাষ্ট্রদূত।
তবে বাইডেনের মনোনয়নের পর সিনেটের অনুমোদনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে এই টিমকে। বাইডেন বলেন, এ টিম আমেরিকার বৈশ্বিক ও নৈতিক নেতৃত্ব পুনরুদ্ধার করবে।
এ সময়ে ছয় নারী ও পুরুষ মাস্ক পরে তার পেছনে দাঁড়ানো ছিলেন।
বাইডেন আরও বলেন, আমি এমন একটি টিম নিয়ে কাজ করতে চাই, যারা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমেরিকার ভাবমর্যাদা পুনরুদ্ধার করতে আমাকে সাহায্য করবেন, যাতে আমি বিশ্বের সামনে থাকা বৃহৎ চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করতে পারি।
তিনি বলেন, ২০ জানুয়ারি তার দায়িত্ব গ্রহণ এবং ট্রাম্পের হোয়াইট হাউস ছাড়ার পর যুক্তরাষ্ট্র আবারও নেতৃত্বের আসনে বসবে এবং বিরোধীকে মোকাবেলা করবে; কিন্তু মিত্রকে অস্বীকার করবে না।
তিনি আরও বলেন, এটি এমন একটি টিম যা আমেরিকার ফিরে আসার প্রতিনিধিত্ব করে। পিছু হটা নয়, আমেরিকা এখন বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত।
এদিকে মঙ্গলবার পেনসিলভানিয়া ও নেভাদা রাজ্য ৩ নভেম্বরের নির্বাচনে বাইডেনের জয়কে সার্টিফাই করেছে। এর আগে মিশিগানও বাইডেনের জয়কে সার্টিফাই করে।
মূলত মিশিগান অঙ্গরাজ্যে বাইডেনের বিজয় আনুষ্ঠানিকভাবে ‘সার্টিফাই’ হওয়ার পরই ট্রাম্পের কাছ থেকে ক্ষমতা হস্তান্তরে রাজি হওয়ার আকস্মিক ঘোষণা আসে। মিশিগানের ঘটনা ট্রাম্পের জন্য একটা বড় ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে।
যদিও ট্রাম্প এখনও নির্বাচনে তার পরাজয়কে মেনে নেননি। এমনকি মঙ্গলবারও তিনি টুইট করে পরাজয় না মানার কথা বলেছেন।
এদিকে বাইডেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছেন বারাক ওবামা আমলের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনকে। আর জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার দায়িত্ব পেয়েছেন জ্যাক সুলিভান।
জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ দূত হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ইরানের সঙ্গে পরমাণু সমঝোতা স্বাক্ষরকারী সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরিকে। নির্বাচনী প্রচারাভিযানের সময়ই বাইডেন বলেছিলেন, তিনি ক্ষমতা হাতে পাওয়ার প্রথম দিনই যুক্তরাষ্ট্রকে প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে ফিরিয়ে নেবেন।
এ ছাড়া নতুন মন্ত্রিসভায় জাতিসংঘে আমেরিকার স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পাচ্ছেন লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দেশটির জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক হিসেবে কোনো নারীকে দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে। এই বিভাগের পরিচালক হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে আভ্রিল হাইনেসকে। তিনি এর আগে সাবেক সিআইএ কর্মকর্তা ও ডেপুটি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
আর অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে কিউবান বংশোদ্ভূত আলেহান্দ্রো মায়েরকাসকে বেছে নিয়েছেন জো বাইডেন।
এদিকে এই টিমে অধিকাংশই ওবামা প্রশাসনের হওয়ায় বলা হচ্ছিল তিনি সেই পুরনো ও বহুপাক্ষিক কূটনীতিতেই ফিরে যাচ্ছেন এবং ভবিষ্যৎ প্রশাসন হতে যাচ্ছে ওবামার তৃতীয় মেয়াদ।
কিন্তু বাইডেন এ কথা অস্বীকার করে বলেন, আমরা সম্পূর্ণ ভিন্ন এক পৃথিবী মোকাবেলা করছি। ট্রাম্প পুরো ভূচিত্র পাল্টে দিয়েছেন। তিনি আমেরিকাকে প্রথম করতে গিয়ে একা করে দিয়েছেন।