১৫ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে হার মানলেন ভারতের উত্তরপ্রদেশের হাথরস এলাকায় গণধর্ষণের শিকার এক নারী। গণধর্ষণের পাশাপাশি তার উপর নৃশংস অত্যাচার চালায় দুষ্কৃতীরা। আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের জওহরলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল তার। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় সোমবার স্থানান্তরিত করা হয় দিল্লির সফদর জং হাসপাতালে। সেখানেই মঙ্গলবার সকালে তার মৃত্যু হয়েছে। এই ধর্ষণের ঘটনায় এরই মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
জেএনএমসি হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানায়,নির্মম অত্যাচার চালানো হয়েছে ওই নারীর উপর। প্রচণ্ড মারধর করা হয়েছে। শ্বাসরোধ করে খুনের চেষ্টাও করেছে দুষ্কৃতীরা। মুখমণ্ডলে একাধিক জায়গায় এবং জিভে কামড়ের গভীর ক্ষত রয়েছে। শিরদাঁড়া ও ঘাড় মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। অবশ ছিল দুই পা এবং একটি হাত। আইসিইউতে রেখে সব রকম চেষ্টা চালানো হয়েছিল। কিন্তু অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় পাঠানো হয় দিল্লির হাসাপাতালে।
নির্যাতিতার ভাই বলেন, ‘‘গত ১৪ সেপ্টেম্বর হাথরস এলাকায় বাড়ির কাছেই একটি জমিতে মা ও আমার সঙ্গে জমিতে ঘাস কাটতে গিয়েছিলেন দিদি। বিকেলের দিকে আমি বাড়িতে চলে আসি। মায়ের থেকে কিছুটা দূরে ছিলেন দিদি। সেই সময় পিছন থেকে দিদিকে আক্রমণ করে কয়েক জন দুষ্কৃতী। গলায় ওড়না পেঁচিয়ে টানতে টানতে ক্ষেতের মধ্যে নিয়ে গিয়ে নৃশংস অত্যাচার চালায় ও গণধর্ষণ করে। পরে মা খুঁজতে খুঁজতে দিদিকে উদ্ধার করেন অচৈতন্য অবস্থায়।’’
পুলিশের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছে নিহত নারীর পরিবার। তার ভাই বলেন, ‘‘পুলিশ প্রথমে আমাদের কোনও কথাই শুনতে চায়নি। দ্রুত পদক্ষেপ করেনি। ঘটনার চার-পাঁচ দিন পর তদন্ত শুরু করেছে।’’ যদিও হাথরসের পুলিশ অফিসার প্রকাশ কুমার বলেন, ‘‘ঘটনার পরে পরেই প্রথমে গ্রেপ্তার করা হয় এক জনকে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে বাকি তিন জনের নাম জানার পর দ্রুত তাদেরও ধরা হয়েছে।’’
পুলিশ জানিয়েছে, আটককৃতদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ, খুনের চেষ্টা, তফসিলি জাতি ও জনজাতি আইনে মামলা দায়ের হয়েছে। সমস্ত তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করে চলছে চার্জশিট তৈরির প্রক্রিয়া।
সূত্র: আনন্দবাজার