জিপিএ-৫ পেয়েও কলেজে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়া মাহবুবা আফরোজের এইচএসসি পড়ার ব্যয় বহনের দায়িত্ব নিলেন সোনালী ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ( এমডি) মো. আতাউর রহমান প্রধান। এ ছাড়াও রংপুর রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্সের (আরআরএফ) পুলিশ সুপার এ বি এম জাকির হোসেন তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন।
মাহবুবা আফরোজ সাত বছর বয়সে বাবাকে হারিয়েছেন। মাহবুবা বাবার একমাত্র মেয়ে। বাবার মৃত্যুর তিন বছর পর তাঁর মায়ের অন্যত্র বিয়ে দেয় নানার পরিবার। এরপর থেকে দরিদ্র বৃদ্ধ নানা আব্দুল জলিলের দিনমজুরের সামান্য আয়ে চলে সংসার।
মাহবুবাকে ছোটবেলা থেকেই দিনমজুর নানার বাড়ীতে শত কষ্টের মাঝে লেখাপড়া চালাতে হয়েছে। তিন কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে স্কুলে নিয়মিত যাতায়ত করতে হয়েছে তাঁকে। এর পরও টিউশনি করে লেখাপড়া চালিয়ে গেছে মাহবুবা। দারিদ্র্য আর শত কষ্ট পেছনে ফেলে সব বাধা পেরিয়ে সেই মাহবুবা এবারের এসএসসি পরীক্ষায় দিনাজপুর বোর্ডের অধীনে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা আরেফা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগে জিপিএ-৫ অর্জন করে।
গত মঙ্গলবার কালের কণ্ঠের অনলাইন ভার্সনে ‘জিপিএ-৫ পেয়েও কলেজে ভর্তি অনিশ্চিত আফরোজের’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে নজরে আসে সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আতাউর রহমান প্রধানের ও রংপুর রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্সের (আরআরএফ) পুলিশ সুপার এ বি এম জাকির হোসেনের। এর প্রেক্ষিতে সংবাদ প্রকাশের পরদিন বিকেলে বাড়িতে প্রতিনিধি পাঠিয়ে খোঁজখবর নেন তাঁরা।
পুলিশ সুপার (এসপি) এ বি এম জাকির হোসেন বলেন, আমাদের সমাজে মাহমুদা আফরোজের মতো অনেক মেধাবী আছে যারা অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করছে। তাই সমাজ এবং দেশকে এগিয়ে নিতে আমাদের সকলের দায়িত্ব তাদের পাশে দাঁড়ানো। এ ছাড়াও পরবর্তীতে এ অঞ্চলে এ রকম গরিব মেধাবী শিক্ষার্থী ভালো ফলাফল করলে তাদেরও সহযোগিতা করা হবে।
সোনালী ব্যাংকের এমডি মো. আতাউর রহমান প্রধান বলেন, ‘মাহবুবা আফরোজের মতো অনেক মেধাবী আছে প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেটা আমাদের জানা থাকে না। সেটি জানার মাধ্যম হচ্ছে সংবাদপত্র। মাহমবুবা আফরোজকে নিয়ে নিউজ করায় আমি তার সম্পর্কে জানতে পারি । তাঁর এইচএসসি পযর্ন্ত পড়ালেখার দায়িত্ব আমি নিয়েছি। যদি সে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পায় তাহলে তার পরবর্তী লেখাপড়ার খরচ বহন করা হবে।’