রাজধানীর বড় শপিং মলগুলো বন্ধ থাকলেও খোলা হয়েছে বিভিন্ন এলাকার ছোট ছোট বিপণিবিতান। এসব বিপণিবিতানে ঈদের বেচাবিক্রি বাড়ছে ধীরে ধীরে। ক্রেতা থাকায় অনেক দোকান বিকেল ৪টার পরও খোলা থাকছে। তবে এসব দোকানের বেশির ভাগে স্বাস্থ্য নিরাপত্তায় হ্যান্ড স্যানিটাইজার ছাড়া অন্য কোনো ব্যবস্থা নেই। ক্রেতারাও মানছে না সামাজিক দূরত্ব। পাশাপাশি ফুটপাতেও ক্রমে বাড়ছে বিকিকিনি। সব মিলিয়ে কেনাকাটায় একটু একটু করে ঈদবাজারের আমেজ টের পাওয়া যাচ্ছে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে গতকাল এমন চিত্রই দেখা গেছে।
ঈদ সামনে রেখে গত ১০ মে থেকে বেশ কিছু শর্ত দিয়ে দোকান খোলার অনুমতি দেয় সরকার। এর পরও করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি থাকায় রাজধানীর বেশির ভাগ বড় শপিং মল, বিপণিবিতান খোলেনি। তবে রাজধানীর মগবাজার, মৌচাক, ওয়ারীসহ বিভিন্ন এলাকার ছোট ছোট বিপণিবিতান খুলেছে। খুলেছে সিদ্ধেশ্বরীর আনারকলি, নয়াপল্টনের গাজী শপিং কমপ্লেক্স। শুরুতে ক্রেতা তেমন ছিল না। তবে ঈদ ঘনিয়ে আসায় ক্রেতাসমাগম বাড়ছে। ফুটপাতেও বাড়ছে ক্রেতার ভিড়। তবে কোথাও মানা হচ্ছে না সরকার নির্ধারিত যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি।
ঈদের বাকি আর এক সপ্তাহ। অন্যান্য বছর রমজানে এ সময়টায় মার্কেটে পা ফেলার জায়গা পাওয়া যেত না। কিন্তু এবার করোনার কারণে কোথাও ক্রেতার সেই উপচে পড়া ভিড় নেই। ঈদ ঘনিয়ে আসায় কিছুটা বেচাবিক্রি হচ্ছে বটে।
গতকাল রবিবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এলাকার জামা-জুতা, কসমেটিকস, গয়নাসহ অনেক দোকান খোলা। ক্রেতাও রয়েছে সবখানে। কোথাও কোথাও কিছু ভিড়ও দেখা গেছে। গতকাল দুপুরে ওয়ারীতে দেখা যায়, আড়ং, সেইলর, বিশ্বরংসহ প্রায় সব ফ্যাশন হাউসের শো রুম খোলা। এসব শো রুমে ক্রেতাসাধারণের প্রবেশের সময় তাপমাত্রা মাপা হচ্ছিল। জীবাণুনাশক ছিটানোর পাশাপাশি সবার মাস্ক নিশ্চিত করা হচ্ছিল। তবে এসব শো রুমে স্থানের তুলনায় ক্রেতা ছিল বেশি। ফলে সামাজিক দূরত্ব মানা যাচ্ছিল না। ক্রেতারা পাশাপাশি দাঁড়িয়ে পছন্দের পণ্য খুঁজে নিচ্ছিলেন।
একই চিত্র দেখা গেছে সিদ্ধেশ্বরীর আনারকলি মার্কেট এবং সামনের রাস্তা ঘেঁষে গড়ে ওঠা দোকানগুলোতেও। কোথাও মানা হচ্ছিল না স্বাস্থ্যবিধি। মনোলোভা নামের দোকানের মালিক মো. মহসীন জানান, পুরোদিনে তিনি এক হাজার ৬০০ টাকা বিক্রি করেছেন। বাসায় বাজার নিতে হবে, তাই ১০-২০ টাকা লাভে পণ্য বিক্রি করছেন। এ অবস্থায় সামাজিক দূরত্ব, ক্রেতার জন্য জীবাণুনাশকের ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়।
গতকালও গাউছিয়ার সামনের সড়কে ঈদের পোশাকের পসরা নিয়ে বসেছিলেন অন্তত ৩০ জন বিক্রেতা। ক্রেতাদের গায়ে গা লাগিয়ে কেনাকাটা করতে দেখা গেছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কোনো চেষ্টা সেখানে দেখা যায়নি।
এলিফ্যান্ট রোডের মার্কেটগুলোয় বেশ কিছু দোকান খুলেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঘনবসতিপূর্ণ মিরপুরেও একই অবস্থা। সড়কের দুই পাশের বেশির ভাগ দোকান খুলেছে। আর অন্য দিনের তুলনায় সেখানে ক্রেতাসাধারণের ভিড় ছিল বেশি। তবে ছিল না স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা।