আরো এক হাজার ৪১ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে গত বুধবার সকাল থেকে গতকাল সকাল পর্যন্ত। এই সময়ে মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত হয়েছে আরো ১৪ জনের। সুস্থ হয়েছেন ২৪২ জন। সব মিলিয়ে দেশে এ পর্যন্ত মোট এক লাখ ৫১ হাজার ৯৩০টি নমুনা পরীক্ষার মধ্য দিয়ে মোট ১৮ হাজার ৮৬৩ জনকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বলে শনাক্ত করা হয়েছে। যাঁদের মধ্যে মারা গেছেন ২৮৩ জন ও সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন মোট তিন হাজার ৬০৩ জন। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছিল সাত হাজার ৮৩৭টি, যার মধ্যে পরীক্ষা করা গেছে সাত হাজার ৩৯২টি।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের পক্ষে নিয়মিত বুলেটিনে গতকাল বৃহস্পতিবার এসব তথ্য জানানো হয়। আরো বলা হয়, দেশে সংক্রমণের অষ্টম সপ্তাহে (২৬ এপ্রিল থেকে ২ মে পর্যন্ত) গিন হাজার ৭৯২ জন শনাক্ত হয়েছেন, সুস্থ হয়েছেন ৬৫ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩৫ জনের। নবম সপ্তাহে (৩-৯ মে, ২০২০) শনাক্ত চার হাজার ৯৮০ জন, সুস্থ হয়েছেন দুই হাজার ৩৩৭ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩৯ জনের। চলমান দশম সপ্তাহে (১০ মে থেকে চলমান) শনাক্ত হয়েছেন পাঁচ হাজার ৯৩ জন, সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ১৮৯ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬৯ জনের। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ১৯.১০ শতাংশ এবং মৃত্যু হার ১.৫০ শতাংশ।
এ ছাড়া গতকাল নবনিযুক্ত নার্সদের যোগদানসংক্রান্ত এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন, জরুরি কাজ ছাড়াও সাধারণ মানুষজন অহেতুক বাইরে ভিড় করছেন। মানুষের জীবিকার তাগিদে সরকারকেও সীমিত পরিসরে কিছু ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, কল-কারখানা খুলে দিতে হয়েছে। এসব কারণে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা কিছুটা বৃদ্ধি পাচ্ছে। হয়তো আরো কিছু বৃদ্ধি পেতেও পারে।
মন্ত্রী এ সময় বলেন, সরকার সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বলেই বিশ্বের আক্রান্ত অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে আক্রান্ত ও মৃত্যু দুটোই কম।
অন্যদিকে নিয়মিত বুলেটিনে জানানো হয়, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টার হিসাবে মৃত ১৪ জনের মধ্যে নারী তিনজন ও পুরুষ ১১ জন। যাঁদের ভেতর ঢাকার ৯ জন ও চট্টগ্রামের পাঁচজন। মৃতদের মধ্যে ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে দুজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে পাঁচজন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে পাঁচজন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে একজন ও ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে একজন রয়েছেন। বুলেটিনে বলা হয়, এখন আইসোলেশনে আছেন দুই হাজার ৫৭০ জন আর মোট কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪৬ হাজার ১৪ জন।
অন্যদিকে নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে নবনিযুক্ত পাঁচ হাজার নার্সের বরণ অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী আরো বলেন, করোনায় মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় শুরু থেকেই সরকার জোরালো প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল। হাসপাতাল বেড বৃদ্ধি, পিপিই মজুদ বৃদ্ধি করাসহ এখন প্রতিদিনই নতুন নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে।
নতুন পাঁচ হাজার ৫৪ জন সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার কথা উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দুই হাজার চিকিৎসক ও ছয় হাজার নার্স নিয়োগের বিষয়টি তুলে ধরার সঙ্গে সঙ্গেই প্রধানমন্ত্রী এক দিনেই ফাইল মঞ্জুর করে দেন।
নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সিদ্দিকা আক্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম, জনপ্রশাসন সচিব শেখ ইউসুফ হারুন, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব আলী নূর, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ইকবাল আর্সনাল, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরীসহ অন্যরা।