করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি আগামী ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত আবার বাড়ানো হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় পৃথক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ছুটি বাড়ানোর বিষয়টি জানায়।
এর আগে ১৪ দিন ছুটি বাড়ানোয় অনেকেই আশা করেছিলেন যে এবার সীমিত পরিসরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে পারে। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিও সে ধরনের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। কিন্তু এবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি এক মাসেরও বেশি সময় বাড়ানো হলো।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দেশের সরকারি-বেসরকারি স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও কোচিং সেন্টারের ছুটি আগামী ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ সময়ে দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোও বন্ধ থাকবে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ থেকে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষিত রাখতে ছুটি বাড়ানো হয়েছে। এ সময়ে নিজেদের এবং অন্যদের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত থাকতে শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ বাসস্থানে অবস্থান করতে বলা হয়েছে। তবে কওমি মাদরাসার ক্লাস ও পরীক্ষা চলবে।
ছুটির সময় ভাইরাস সংক্রমণ রোধে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের জারি করা নির্দেশনা ও অনুশাসনগুলো শিক্ষার্থীদের মেনে চলতে বলা হয়েছে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে। শিক্ষার্থীদের বাসস্থানে অবস্থানের বিষয়টি নিশ্চিত করতে অভিভাবকদের বলা হয়েছে এবং স্থানীয় প্রশাসন তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে বলে জানানো হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যাতে বাসস্থানে অবস্থান করে নিজ নিজ পাঠ্য বই অধ্যয়ন করে, সে বিষয়টি অভিভাবকদের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের।
দেশে গত ৮ মার্চ করোনা রোগী শনাক্তের খবর দেয় সরকার। সংক্রমণ বাড়তে থাকায় গত ১৭ মার্চ সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এ পর্যন্ত কয়েক দফা ছুটি বাড়ানো হয়েছে। গত ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর পর মনে করা হচ্ছিল যে এরপর সীমিত পরিসরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে পারে। দেশে সাম্প্রতিক সময়ের করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবং আগামী বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে সীমিত পরিসরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হতে পারে বলে আভাস দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনিও।
মহামারির মধ্যে এবার পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা এবং মাধ্যমিক স্তরের বার্ষিক পরীক্ষা না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। আর অষ্টমের সমাপনী এবং এসএসসি ও সমমানের ফলের ভিত্তিতে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আট মাসেরও বেশি সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় চরম সংকট সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষকরা চরম দুর্দশার মধ্যে রয়েছেন। যেহেতু দেশের সব কিছুই খোলা হয়েছে, এমনকি শিক্ষার্থীরাও নিয়মিত ঘরের বাইরে যাচ্ছে, তাই তাঁরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবি জানিয়ে আসছেন।