গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগ থেকে আজীবন বহিস্কার মো. জাহাঙ্গীর আলমকে তালাক দিয়েছেন স্ত্রী কাজী রাজিয়া সুলতানা জয়ী। গত ৩০ এপ্রিল জাহাঙ্গীরের বরাবর তালাকের নোটিশ পাঠান স্ত্রী জয়ী। তালাকের নোটিশের বিষয়টি সোমবার (১৫ মে) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে জানাজানি হলে গাজীপুরে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
এর আগে সোমবার বিকালে জাহাঙ্গীরকে আওয়ামী লীগ থেকে স্থায়ীভাবে বহিস্কারের কথা জানান আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।
২০১১ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় জাহাঙ্গীর জয়ী দম্পতির। বিয়ের পর থেকেই স্ত্রী জয়ীকে মানসিক নির্যাতন ও অত্যাচার করে আসছিলেন। নিয়মিত ভরণপোষনও দেওয়া হয়নি বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়।
নোটিশে উল্লেখ রয়েছে, ১৯৬১ইং সালের মুসলিম পারিবারিক আইন ৮-নম্বর- অধ্যাদেশ, ৫২-নম্বর আইনের ধারা মতে স্ত্রী কর্তৃক তালাক গ্রহণের নোটিশ।
নোটিশে বলা হয়, আমি নিন্ম স্বাক্ষরকারিনী কাজী রাজিয়া সুলতানা জয়ী। বাবার নাম কাজী ইকবাল বাহার। মা মিসেস ফরিদা ইকবাল। মিরপুরের শাহ আলীর জি-ব্লকের ৫ নম্বর রোডের ১ নম্বর বাসা।
২০১১ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারিতে গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর সদর থানার কানাইয়া গ্রামের আলহাজ মিজানুর রহমান ও বর্তমান গাসিক নির্বাচনের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মোছা. জায়েদা খাতুনের ছেলে মো. জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে (সাবেক বহিস্কৃত মেয়র) বিয়ে হয়।
বিয়ের পর থেকেই আমাকে (রাজিয়া সুলতানা জয়ীকে) মানসিক নির্যাতন ও অত্যাচার করায় নিয়মিত ভরণপোষন না দেওয়ায় সংসার জীবনে অশান্তি বিরাজ করছিল। যা নিকাহ নামার ১৮-নং কালামের পরিপন্থী। এসব অভিযোগের কারণে রাজিয়া সুলতানা জয়ী ১৮-নম্বর ধারা অনুযায়ী জাহাঙ্গীর আলমকে তালাকের নোটিশ দেওয়া হয়। যা উভয়ের মাঝে পরিস্থিতির উন্নতি না হলে ৯০ দিন পর চুড়ান্ত ভাবে তালাক কার্যকর হবে।
রাজিয়া সুলতানা জয়ীর পারিবারিক সূত্র জানায়, জাহাঙ্গীরের সঙ্গে বিয়ের পর থেকে নানাভাবে মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। স্বামীর কাছ থেকে নিয়োমিত সময় না পেয়ে এবং একাধিক নারীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক থাকায় দীর্ঘদিন স্ত্রী জয়ী মিরপুর বাবার বাসায় থাকতেন।
এমনকি এক নারী শিক্ষিকাকে তার ব্যক্তিগত লোক দ্বারা কুপ্রস্তাব দেয়া হয় বলেও অভিযোগ উঠে। পরে ওই নারী তার কুপ্রস্তাবে রাজি না হলে তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হতো। এ নিয়ে ওই নারী শিক্ষিকা জাহাঙ্গীর আলমের কুকীর্তির ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। স্ত্রীর জয়ীর বিষয়ে জানতে সোমবার রাত পৌনে ৯টায় জাহাঙ্গীরের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।