1. [email protected] : admi2017 :
  2. [email protected] : Daily Khabor : Daily Khabor
  3. [email protected] : rubel :
  4. [email protected] : shaker :
  5. [email protected] : shamim :
বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ ২০২৩, ০৭:৪৫ অপরাহ্ন

সোনার দাম বাড়ায় ক্রেতা কমেছে

ডেইলি খবর নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২০
  • ৪১০ বার পড়া হয়েছে

চলতি বছরের শুরু থেকেই দেশে সোনার বাজারে অস্থিতরতা বিরাজ করছে। দফায় দফায় দাম বেড়েছে সোনার দাম। ২০ দিনের ব্যবধানে বৃহস্পতিবার এক হাজার ৭৫০ টাকা বাড়ায় এখন প্রতি ভরি সোনার গয়না ৭৪ হাজার ৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সোনার দাম বাড়ায় ক্রেতা কমেছে। বিশেষভাবে সাধারণ পরিববারের ক্রেতা নেই বললেই চলে। দেশের নামি-দামি দোকানে এখনো যে অল্প কিছু ক্রেতা আছে, তাদের প্রায় সকলেই উচ্চবিত্ত শ্রেণির। সোনার বাজারে মন্দা থাকায় সংশ্লিষ্ট খাতের ব্যবসায়ীরা আছে বিপাকে।

বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতির সহসভাপতি দেওয়ান আমিনুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, দেশের বাজারে ব্যাংকের মাধ্যমে এলসি খুলে সোনা আমদানি শুরু হলেও করোনার প্রভাবে সারা বিশ্বে আমদানি রপ্তানি প্রায় বন্ধ থাকায় সোনা ব্যবসায়ীরা চাহিদামতো সোনা সংগ্রহ করতে পারেনি। অন্যদিকে আর্ন্তজাতিক বিমান বন্ধ থাকায়ও ব্যাগেজে করে আগের মতো এক দেশ থেকে অন্য দেশে সোনা আনা-নেওয়াও সম্ভব হয়নি। সোনা সরবরাহ স্বাভাবিক না থাকায় আন্তর্জাতিকভাবে সোনার দাম দ্রুত বেড়েছে। আবার আমাদের কাছে যা মজুদ ছিল তা-ও বিক্রি করতে পারিনি। কারণ করোনার কারণে দোকানপাট বন্ধ ছিল। গত কয়েক মাসে সোনার দাম দ্রুত বেড়েছে। সব কিছু মিলিয়ে সোনার ক্রেতা আগের চেয়ে অনেক কমেছে। দাম বাড়ায় সোনার ব্যবসা ভালো যাচ্ছে না।

হাতে বানানো সোনার অলংকারের চাহিদা বেশি। হাতে বানানো সোনার গহনার ৮০ শতাংশ ভারত ও বাংলাদেশে নির্মিত হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত পহেলা জানুয়ারিতে প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম বেড়ে ৫৮ হাজার ২৮ টাকা হয়। ৫ জানুয়ারি আবারো বেড়ে হয় ৬০ হাজার ৩৬১ টাকা, ২৩ জুন ৬৯ হাজার ৮৬৭ টাকা, ২৪ জুলাই ৭২ হাজার ৭৮৩ টাকা, ৬ আগস্ট ৭৭ হাজার ২১৬ টাকা হয়। এর পরে দুই দফা সোনার সামান্য কমে ৭২ হাজার ২৫৮ টাকা হয়। যা আজ থেকে আবারো বাড়ানো হলো।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর মতে, বাংলাদেশে গত তিন বছরের প্রতি বছর সোনা রপ্তানি আয় গড়ে ৭০০ ডলার। সোনার গহনার প্রধান আমদানিকারক দেশের মধ্যে সুইজারল্যান্ড, চীন, হংকং, যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, জামার্নি, সিঙ্গপুর। ২০১৬ সালে বিশ্বে মোট অলংকার রপ্তানির পরিমাণ ৬৩৮.৩৭ বিলিয়ন ডলার। আন্তর্জাতিক বাজারে গত ২ জানুয়ারি প্রতি আউন্স ১ হাজার ৫২৯ ডলার, ২৮ ফেরুয়ারি ১ হাজার ৫৮৬ ডলার, ৩০ এপ্রিল ১ হাজার ৬৮৮ ডলার, ২৯ মে ১ হাজার ৭৩০ ডলার, ২৭ জুলাই ১ হাজার ৯৬৬ ডলার, ৬ আগস্ট ২ হাজার ৯৯ ডলার হয়। গতকাল বুধবার সোনার দাম কমায় ২২ ক্যারেট সোনা প্রতি ভরি ৭৩ হাজার ৭১৬ টাকা, ২১ ক্যারেট ৭০ হাজার ৫৬৭ টাকা, ১৮ ক্যারেট সোনা ৬১ হাজার ৮১৯ টাকা। সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনা ৫১ হাজার ৪৯৭ টাকায় বিক্রি হবে।

দেশে দৈনিক ১০ কোটি টাকার স্বর্ণের বাজার রয়েছে। দেশে মোট স্বর্ণের পণ্য তৈরিতে প্রায় ৪০ শতাংশ পুরানো স্বর্ণ ব্যবহার করা হয়। বাকী ৬০ শতাংশ তৈরি হয় নতুন স্বর্ণে। এদেশের সোনা ব্যবসা মূলত ব্যাগেজে আনা এবং চোরাই সোনার ওপর নির্ভরশীল ছিল। গত পাঁচ বছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বিভিন্ন অভিযানে প্রায় ২ হাজার ৭০০ কেজি চোরাই সোনা আটক করা সম্ভব হয়েছে। সোনা ব্যবসা নিয়মের মধে আনতে গত ৮ নভেম্বর, ২০১৮ স্বর্ণনীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়।

নীতিমালা অনুযায়ী, স্বর্ণালকার রপ্তানির ক্ষেত্রে হলমার্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ব্যাংকের মাধ্যমে এলসি খুলে প্রতি ভরিতে দুই হাজার টাকা রাজস্ব পরিশোধ করে প্রয়োজন মতো সোনা আমদানির সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ডায়মন্ডের ক্ষেত্রেও একই সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ব্যাগেজরুলে বর্তমানে বিনা শুল্কে ১০০ গ্রাম পর্যন্ত স্বর্ণালংকার আনার সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া ২০০ গ্রামের বার বা পিল্ডের ক্ষেত্রে শুল্ক আনতে ভরি প্রতি দুই হাজার টাকা পরিশোধের বিধান রাখা হয়।

সরেজমিনে রাজধানীর আড়ং এর শাখায়, মিরপুর ১০ নম্বর, উত্তরা, চাদনীচক, বসুন্ধরা শপিং মল, তাঁতীবাজার এলাকার বিভিন্ন সোনার দোকানে গিয়ে দেখা যায়, করোনার আগের সময়ের চেয়ে বর্তমানে সোনার গহনা বিক্রি অনেকে কমেছে। বিয়ে, জন্মদিনসহ বিভিন্ন পারিবারিক বা সামাজিক অনুষ্ঠান না থাকায় সোনার গহনার চাহিদা আগের মতো নেই। সোনার দাম বাড়ায় এখন উপহার দিতেও কেউ সোনার প্রতি ঝুকছে না। তবে এখনো যারা সোনা কিনতে আসছেন তাদের প্রায় সকলেই ধনী পরিবারের সদস্য। এসব ক্রেতারা মূলত নামি দামি সোনার দোকানেই যাচ্ছে। এর মধ্যে আল আমিন, সুলতানা, ভেনাস, আপন, কুন্দন, গীতাঞ্জলিসহ অন্যান্য সোনার দোকান রয়েছে। পাড়া মহল্লার সোনার দোকান প্রায় ক্রেতা শূন্য। আড়ং এর বিভিন্ন শাখায় করোনার আগের তুলনায় বর্তমান ক্রেতা অনেক কম হলেও আর্থিকভাবে স্বচ্ছল অল্প কিছু ক্রেতা এখনো সোনা কিনছে।

মিরপুর এক এ আড়ং এর শাখায় সোনার গহনা কিনতে আসা গৃহিনী সোহানা রহমান বলেন, করোনার মধ্যে ঘর থেকে বের পারিনি বলে অনেক দিন সোনার গহনা কিনিনি। এখন সোনার দাম বেশ বেড়েছে। তাই আগের মতো কিনছি না। আজকে অনেক দিন পর এক জোড়া সোনার কানের দুল শখ করেই কিনেছি। তার ব্যবসায়ী স্বামীর কাছ থেকে এ দুল কেনার টাকা নিয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

এ জাতীয় আরো খবর