1. [email protected] : admi2017 :
  2. [email protected] : Daily Khabor : Daily Khabor
  3. [email protected] : rubel :
  4. [email protected] : shaker :
  5. [email protected] : shamim :
মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৬:৩৫ অপরাহ্ন

২৩৫ কোটি টাকা ব্যয় হবে শুধু সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে

কালবেলা
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
  • ৩৭ বার পড়া হয়েছে

আর্থিক মন্দার মধ্যে ১১ প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে ২৩৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দিল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। মোট অর্থের মধ্যে ১৬৭ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)। বাকি টাকা জোগান দেবে সরকার।

রেলওয়ে সংশ্লিষ্টদের অনেকেই ১১ প্রকল্পের অনেকগুলোকে বিলাসী উল্লেখ করে বলছেন, এসব প্রকল্পের মধ্যে সবকটি এ মুহূর্তে জরুরি নয়। তাই অগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের সমীক্ষা সিদ্ধান্ত থেকে সরে এলে বিপুল পরিমাণ অর্থ সাশ্রয় সম্ভব বলেও মনে করেন তারা।

এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়ে এরই মধ্যে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে সুবিধাদি প্রস্তুতিমূলক কারিগরি সহায়তা প্রকল্পের পরামর্শক সেবার জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের চুক্তি স্বাক্ষর করেছে রেল কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশ রেলের পক্ষ থেকে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালক মো. মাহবুবুর রহমান এবং যৌথ পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ওরিয়েন্টাল কনসালট্যান্স গ্লোবাল কোম্পানি লিমিটেডের (জাপান) জিএম ইউজি অসানো চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে, হার্ডিঞ্জ ব্রিজের পাশাপাশি একটি নতুন সেতু নির্মাণের লক্ষ্যে যাচাইকরণ ও বিস্তারিত নকশা তৈরি, নারায়ণগঞ্জ-কুমিল্লা/লাকসাম রুটে কর্ড লাইন নির্মাণ। বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব-তারাকান্দি- জামালপুর- দেওয়ানগঞ্জ বাজার সেকশনে বিদ্যমান মিটার গেজ লাইনকে ডুয়েল গেজে রূপান্তর প্রকল্প, যশোর-বেনাপোল রুটে বিদ্যমান লাইনের সমান্তরাল একটি ব্রডগেজ লাইন নির্মাণ প্রকল্প, ভৈরব বাজার-ময়মনসিংহ সেকশনে বিদ্যমান মিটারগেজ লাইনকে ডুয়েল গেজ অথবা ব্রডগেজ লাইনে রূপান্তর প্রকল্প, সান্তাহার-বগুড়া-কাউনিয়া-লালমনিরহাট সেকশনে বিদ্যমান মিটারগেজকে ব্রডগেজ লাইনে রূপান্তরকরণ প্রকল্পসহ মোট ১১টি প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও বিস্তারিত নকশা তৈরির লক্ষ্যে বিপুল পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে চুক্তি করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি ট্রেন চলমান রয়েছে। এর মধ্যে দুটি ট্রেন কোনো বিরতি ছাড়া চলাচল করছে। এই প্রেক্ষাপটে নারায়ণগঞ্জ-কুমিল্লা হয়ে লাকসাম পর্যন্ত কর্ড লাইন নির্মাণ করে চট্টগ্রামের সঙ্গে রেল যোগাযোগে আরেকটি প্রকল্প নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও এ ব্যাপারে রেল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য হলো এই প্রকল্প নির্মাণকাজ শেষ হলে ঢাকা-চট্টগ্রামের দূরত্ব কমবে ৯১ কিলোমিটার।

জানা গেছে, ২০২০ সালের ১ জুলাই এ প্রকল্পের কার্যক্রম শুরুর কথা ছিল। এখন ৩০ মাস মেয়াদ ধরে প্রকল্পটি শুরু হতে যাচ্ছে। রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, এ চুক্তির মেয়াদ ৩০ মাস। কিন্তু আমাদের সরকারের মেয়াদ ১ বছরেরও কম আছে। আশা করব সময়মতো প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।

তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ-কুমিল্লা/লাকসাম রুটে কর্ড লাইন নির্মাণ হলে ঢাকা-চট্টগ্রামের দূরত্ব ৯১ কিলোমিটার কমে যাবে।

রেলওয়ের কোনো প্রকল্প নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ না হওয়ার কথা জানিয়ে অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেন, প্রতিটি প্রকল্পের ক্ষেত্রে বারবার সময় বাড়ে। টাকা বাড়ে। সময়মতো প্রকল্পের কাজ শেষ না করতে পারলে পেনাল্টি আছে কিনা তা চুক্তিতে থাকে না। এ বিষয়টি ভেবে দেখতে হবে। চুক্তির পর সময়মতো কোনো প্রতিষ্ঠান কাজ শেষ করতে না পারলে সে প্রতিষ্ঠানকে ডিফল্ট করা উচিত।

একটি ভারসাম্যপূর্ণ যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে রেলওয়ের উন্নয়নে কাজ হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ঐতিহ্যগতভাবে আমরা একটি রুগ্‌ণ, ভঙ্গুর রেল ব্যবস্থা পেয়েছি, সেখান থেকে রেল খাতকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

রেলমন্ত্রী বলেন, আধুনিক রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ২০৪৫ সাল পর্যন্ত স্বল্প, মধ্য, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে, যার ধারাবাহিকতায় এসব প্রকল্পের সমীক্ষা যাচাই করা হবে। তারপর প্রকল্প গ্রহণ। এতে অর্থের অপচয় হচ্ছে বলে মনে করি না। কারণ সমীক্ষা ছাড়া তো প্রকল্প করা যায় না। আর সমীক্ষা করতে হলে তো অর্থ লাগবে। তা ছাড়া আমাদের নিজেদের দক্ষ টিম গড়ে তোলা হয়নি। এ কাজটি যখন করতে পারব, তখন থেকে অনেক প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের প্রয়োজন হবে না।

রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে সুবিধাদি প্রস্তুতিমূলক কারিগরি সহায়তা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মাহাবুবুর রহমান বলেন, রেলওয়ের সার্বিক উন্নয়নে ধারাবাহিক যে মাস্টার প্ল্যান করা হয়েছে, সেসব কাজের অংশ হিসেবে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আগে সম্ভাব্যতা যাচাই করা হবে। তারপর গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রকল্প প্রস্তাব তৈরি করে পর্যায়ক্রমে কাজ শুরু হবে।

রেলমন্ত্রী বলেন, আমাদের অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের ওপর সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও বিস্তারিত নকশা তৈরির কাজের লক্ষ্যে কনসালট্যান্সি সার্ভিস নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হার্ডিঞ্জ সেতু ১২৫ বছর পার করেছে। সেখানে নতুন সেতু নির্মাণ করতে হবে। তিনি বলেন, আমরা নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সারা দেশকে এক গেজে রূপান্তর করার। এ লক্ষ্যে সব মিটারগেজকে পর্যায়ক্রমে ব্রডগেজে রূপান্তর করা হবে।

পরামর্শক নিয়োগে ব্যয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে রেলমন্ত্রী বলেন, আমাদের যেসব কর্মকর্তা চাকরি থেকে চলে যাচ্ছেন, তাদের সমন্বয়ে নিজস্ব কনসালট্যান্সি ফার্ম গড়ে তোলার লক্ষ্যে রেলওয়ে কাজ করছে। এর দ্বারা দেশের নিজস্ব সক্ষমতা গড়ে উঠবে, পাশাপাশি দেশের অর্থ বাঁচবে। কারণ পরামর্শ প্রতিষ্ঠান নিয়োগে আমাদের বিপুল অর্থ নষ্ট হচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে রেলের একাধিক কর্মকর্তা ও প্রকৌশলী বলছেন, ১১ প্রকল্পের অনেকগুলো এখনই জরুরি নয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের জন্য পৃথক কর্ড লাইন নির্মাণ অপ্রয়োজনীয় উল্লেখ করে তারা বলেন, মন্দার মধ্যে এসব প্রকল্পকে বিলাসী হিসেবে বিবেচনা করলে ভুল হবে না। যখন দেশের অর্থনীতি ভালো হবে, তখন অনেক প্রকল্প হাতে নেওয়া যেতে পারে।

অতিমারি করোনা ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের পর বিশ্বমন্দার মধ্যে বাংলাদেশেও পড়েছে। তাই মন্দা মোকাবিলায় সবাইকে কৃচ্ছ্রসাধনের পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তেমনি সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফল বন্ধ থেকে শুরু করে অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণ না করতে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

এ জাতীয় আরো খবর