শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আবেগ-অনুভূতির নাম বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ

প্রকাশিত: ০৯:৪৩ পিএম, জুন ২৩, ২০২২

আবেগ-অনুভূতির নাম বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ

ইতিহাস আর ঐতিহ্যের সঙ্গে আবেগ-ভালোবাসার এক সংগঠনের নাম বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। কোটি নেতাকর্মী আর সমর্থকের মণিকোঠায় থাকা মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বে দেওয়া এই দলটির প্রতি ছাত্র জীবন থেকে রয়েছে সীমাহীন ভালোবাসা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার কাছে শুধু একজন নেতা নন; ভালোবাসা আর আস্থার অপর নাম। বাংলার মানুষের মুক্তি আর অধিকার আদায়ের সংগঠন ও ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ। আজও মানুষের অধিকার আদায়ে ও বিপদে কাজ করে যাচ্ছে দলটি, যা আমরা করোনা মহামারি আর সিলেটের এই ভয়াবহ বন্যার সময়ে তাকালেই দেখতে পাই। কতটা শ্রম-ঘাম দিয়ে আ.লীগ এদেশের সাধারণ মানুষের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছে। সত্যি আওয়ামী লীগ মানে একটি আস্থা। যে আস্থা পুরান ঢাকার বিখ্যাত রোজ গার্ডেনে জন্মলাভের মধ্য দিয়েই রোপিত হয়েছিল বাঙালির হাজার বছরের লালিত স্বপ্ন, স্বাধীনতা সংগ্রামের বীজ। সংগ্রাম, ঐতিহ্য, গৌরব ও ইতিহাসের নানা বাঁক পেরিয়ে ৭৩ বছরে পা দিল হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা ভাসানী আর বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া আমার আবেগ-ভালোবাসার সংগঠন আওয়ামী লীগ। স্বাধীনতার পর ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর অনেকটা অস্তিত্ব সংকটেই পড়ে দলটি। দলের ভেতরেও শুরু হয় ভাঙন। এরমধ্যে আব্দুল মালেক উকিল-জোহরা তাজউদ্দীনের দৃঢ়তায় সংকট কাটিয়ে উঠতে শুরু করে আ.লীগ, যা বর্তমানে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সাধারণ জনগণের মণিকোঠায় আস্থা-নির্ভরতার এক মানবিক প্রতীক হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। তাই আওয়ামী লীগ শুধু একটি রাজনৈতিক দলই নয়, এদেশের স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তির হৃদয়ের অনুভূতিও। আওয়ামী লীগের অগ্রযাত্রায় প্রতিটি পদে পদে বাধা ছিল। সব পেরিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আ.লীগকে এগিয়ে নিয়েছেন। এদেশের গণমানুষের আবেগের সংগঠনে পরিণত করেছেন। দীর্ঘ পথচলায় যারাই আওয়ামী লীগকে আঘাত করেছে তারাই ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা নেতৃত্বে স্বাধীনতার ২১ বছর পর সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে আবার সরকার গঠন করে দলটি। তখন থেকে টানা তিন মেয়াদে সরকারে রয়েছে আওয়ামী লীগ। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব শেখ হাসিনা আদর্শ ও দৃঢ়তায় পরিচালিত করার কারণে দলের ভেতর-বাইরে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ব্যক্তি ও গোষ্ঠীগুলো আওয়ামী লীগকে বঙ্গবন্ধুর রেখে যাওয়া আধুনিক কল্যাণবাদী রাষ্ট্র গঠনের নির্ভরযোগ্য দল হিসেবে বিবেচনা করছে। আওয়ামী লীগের বিকল্প এখনও পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের ধারকবাহক কোনও দল হতে পারেনি। যতদিন বাংলাদেশ রাষ্ট্র পরিপূর্ণভাবে সে রকম একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সফল না হচ্ছে, ততদিন এই দলের ঐতিহাসিক ভূমিকা রাখার আবশ্যকতা শেষ হবার নয়। আওয়ামী লীগ প্রমাণ করে দিচ্ছে, এর প্রতিষ্ঠার সময় থেকে যে রাজনৈতিক দর্শন এবং রাষ্ট্রকাঠামো তৈরির জন্য এই দলটি লড়াই সংগ্রাম, রাষ্ট্রপ্রতিষ্ঠার মতো ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। রাষ্ট্রগঠনের কাজে হাত দিয়েছে। সেটি নানা ষড়যন্ত্রের কারণে পিছিয়ে গেলেও জনগণের আর্থসামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তির অভীষ্ট লক্ষ্য পূরণে দেশে অন্য কোনও রাজনৈতিক দল নয়, বরং আ.লীগই নানা সীমাবদ্ধতা, জটিলতা, ত্রুটি-দুর্বলতা পরও ইতিহাসের কঠিন দায়িত্ব পালনে মৌলিক অবদান রাখার একমাত্র রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে অবস্থান করছে। আওয়ামী লীগের সরকার গঠন করে বাবার ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন শেখ হাসিনা। দেশের বিভিন্ন সেক্টরের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ৩৭টির অধিক পুরস্কার ও পদক অর্জন করেছেন। স্বাস্থ্য, কৃষি, বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি, বিদ্যুৎ খাত, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীসহ বিভিন্ন খাতের উন্নয়ন দেশের ভেতর-বাইরে প্রশংসিত হয়েছেন শেখ হাসিনা। শিক্ষাখাতে অভাবনীয় উদ্যোগ, বিনামূল্যে বই বিতরণ, মেধাবৃত্তি ও উপবৃত্তি প্রদান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ, শিক্ষাখাতে বাজেট বরাদ্দ; যা বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলের ১৩ গুণ বেশি, শিক্ষক নিয়োগ ও মর্যাদা বৃদ্ধি, নতুন বিদ্যালয় স্থাপন, কওমি মাদ্রাসার শিক্ষা, দারিদ্রপীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং কর্মসূচি, সাক্ষরতার হার বৃদ্ধি, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ফান্ড, কম্পিউটার ল্যাব ও মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন এবং সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কাজ করছে। বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ এখন শুধু উন্নয়নের রোল মডেলই নয়, একটি মানবিক রাষ্ট্র হিসেবেও প্রশংসিত। কথিত তলাবিহীন ঝুড়ির বাংলাদেশ আজ ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার পাশাপাশি খাদ্য, বস্ত্র-চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। বিশ্বে করোনা মোকাবিলায় ১ম সারির উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে এগিয়ে ছিল। এ ছাড়াও নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু স্বপ্ন থেকে বাস্তবে রূপ নিয়েছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন হয়েছে, দেশের প্রথম স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু-১’ মহাকাশে উৎক্ষেপণ হয়েছে। মেট্রোরেল, এলিভেটেট এক্সপ্রেসসহ আরও অনেক বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার। শেখ হাসিনা নীতি ও আদর্শের প্রশ্নে পিতার মতোই অবিচল, দৃঢ় ও সাহসী। তিনি দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন এবং সব শ্রেণী-পেশার মানুষের কল্যাণে যুগান্তকারী অবদান রেখে চলেছেন। ‘রূপকল্প ২০২১’-এ মধ্যম আয়ের বাংলাদেশকে ‘রূপকল্প ২০৪১’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি উন্নত, আধুনিক, সমৃদ্ধ, অসাম্প্রদায়িক কল্যাণকামী রাষ্ট্র গঠনে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই আওয়ামী লীগ শত বছরের রাজনৈতিক দল হিসেবে এর ঐতিহাসিক মর্যাদা বাংলাদেশের জাতীয় ইতিহাসেই শুধু নয়, পুরো বিশ্বে একদিন অবশ্যই স্মরণীয় স্থান করে নেবে ইনশা আল্লাহ। লেখক: সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় তথ্য ও গবেষণা উপ-কমিটি।
Link copied!