শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

করোনা মহামারির মধ্যে আরও একটি ঈদ

প্রকাশিত: ১০:৩০ এএম, জুলাই ২১, ২০২১

করোনা মহামারির মধ্যে আরও একটি ঈদ

ডেইলি খবর ডেস্ক: করোনা মহামারির মধ্যে আরও একটি ঈদ উদযাপিত হচ্ছে বিশ্বে। ২০১৯ শেষ করে নতুন বছর ২০২০-২১ বরণ করে নিয়েছে বিশ্ব। আয়োজন করে নতুন বছর বরণে কমতি নিশ্চয়ই ছিল না। কিন্তু এ উৎসবের মধ্যে ছোট্ট একটি খবর ছড়িয়ে গেল। যার জন্য প্রস্তুত ছিল না কেউই। চীনের উহানে মানুষের শরীরে প্রাণঘাতী একটি ভাইরাস শনাক্ত হয়। ধীরে ধীরে তা রূপ নেয় মহামারিতে। দেখতে দেখতে বাংলাদেশেও ২০২০ সালের মার্চে এ ভাইরাস থাবা বসায়। কোভিড-১৯ নাম পাওয়া এ মহামারি আজ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বিশ্বের সবখানে। দুটি ঈদুল ফিতর এবং একটি ঈদুল আজহা পেরিয়ে মহামারির মধ্যে এলো আরও একটি ঈদ, মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা।উৎসব এলেও সবকিছুর মধ্যে একটা ভয় লুকিয়ে আছে। অদৃশ্য একটা শত্রু সবাইকে তাড়া করে ফিরছে। যা ঈদের আমেজকে করেছে ম্রীয়মান। ঈদের মাঝে লুকিয়ে থাকা আমেজ বলতে গেলে গিলে খেয়েছে এ মহামারি। অত্যধিক মাত্রায় সংক্রমণশীল এ ভাইরাস দ্রæতই রূপ বদলেছে, বাড়িয়েছে মানুষের বিপদ। প্রাণ তো কেড়েছেই নিঃস্ব করে ছেড়েছে কোটি কোটি মানুষকে। তবে পরিস্থিতি আগের মতো না থাকলেও কিন্তু ধর্মীয় এ উৎসব উদযাপনে মুসলিম সম্প্রদায়ের অনুসারীদের চেষ্টার কমতি দেখা যাচ্ছে না বললেই চলে। ঈদুল-আজহা ইব্রাহিম (আ.)ও তার পুত্র ইসমাইল (আ.)-এর সঙ্গে সম্পর্কিত। ইব্রাহিম (আ.) স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে পুত্র ইসমাইলকে আল্লাহর উদ্দেশে কুরবানি করতে গিয়েছিলেন। আল্লাহর পক্ষ থেকে এ আদেশ ছিল ইব্রাহিমের জন্য পরীক্ষা। তিনি পুত্রকে আল্লাহর নির্দেশে জবাই করার সব প্রস্তুতি নিয়ে সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। বর্ণিত আছে, নিজের চোখ বেঁধে পুত্র ইসমাইলকে বেঁধে যখন জবাই সম্পন্ন করেন, তখন চোখ খোলার পর দেখেন ইসমাইলের পরিবর্তে পশু কুরবানি হয়েছে, যা এসেছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে। সেই ঐতিহাসিক ঘটনার স্মৃতি ধারণ করেই ইব্রাহিম (আ.)-এর ওয়াজিব হিসেবে পশু জবাইয়ের মধ্য দিয়ে কুরবানির বিধান এসেছে ইসলামি শরিয়তে। সেই মোতাবেক প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্য পশু কুরবানি করা ওয়াজিব। ধর্মীয় এ নির্দেশ পালনে চেষ্টার কোনো ঘাটতি রাখতে চান না মুসলমানরা। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ওই করোনাভাইরাস। এবার গ্রামে করোনায় মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা বেশি হওয়ায় মানুষের মধ্যে বিরাজ করছে এক ধরনের আতঙ্ক। এরইমধ্যে মহামারির কারণে কিছুটা কম হলেও সারা দেশে বিরাজ করছে ঈদের আমেজ। করোনারভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার মধ্যেই সম্প্রতি সরকারের পক্ষ থেকে ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে কঠোর বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করা হয়। এরপরই রাজধানী ছাড়তে শুরু করে মানুষ। এরমধ্যে প্রায় প্রতিদিন দেশের সবখানেই কুরবানির পশুর হাটগুলোতে ছিল চোখে পড়ার মতো ভিড়। কোনো ক্ষেত্রেই মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মেনেছেন বলে মনে হয়নি।গাদাগাদি করে ঈদযাত্রা, পশুর হাটে ভিড় সামগ্রিকভাবে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই উৎসব উদযাপনের মধ্যেও সতর্ক থাকা চাই। এ ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নামাজ আদায় করতে যাওয়া থেকে শুরু করে পশু কুরবানি, মাংস বিতরণ, দাওয়াতে অংশ নেওয়াসহ সব ক্ষেত্রেই মেনে চলতে হবে স্বাস্থ্যবিধি। সর্বোপরি ত্যাগের মহিমায় উদ্বুদ্ধ হয়ে পবিত্র ঈদুল আজহায় সৃষ্টিকর্তার কাছে করোনামুক্ত বিশ্ব প্রার্থনা করবেন মুসলমানরা তা বলার অপেক্ষা রাখে না। মহামারির মধ্যে ত্যাগের এ ঈদ বয়ে আনুক স্বস্তি, দূর হোক অদৃশ্য ভাইরাসের দাপট। ঈদ মোবারক।  
Link copied!