শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কলম্বিয়ার ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ মাদক সম্রাট অ্যাতোনিয়েল আটক

প্রকাশিত: ১১:৫২ এএম, অক্টোবর ২৪, ২০২১

কলম্বিয়ার ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ মাদক সম্রাট অ্যাতোনিয়েল আটক

কলম্বিয়ার ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ মাদক সম্রাট দাইরো আন্তোনিও উসুগাকে আটক করা হয়েছে যিনি অ্যাতোনিয়েল নামেই বেশি পরিচিত। সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী এবং পুলিশের যৌথ অভিযানে শনিবার তাকে আটক করা হয় বলে জানিয়েছে বিবিসি। এই মাদক ব্যবসায়ীকে বহুদিন ধরে খোঁজা হচ্ছিল। তিনি দেশটির সবচেয়ে বড় অপরাধী চক্রের প্রধান। অ্যাতোনিয়েল সম্পর্কে তথ্য পেতে আট লাখ (সাত কোটি টাকার বেশি) মার্কিন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছিল কলম্বিয়ার সরকার। তাকে ধরিয়ে দিতে পাঁচ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৪৫ কোটি টাকা) ঘোষণা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। এই মাদক সম্রাটকে আটকের পর এক টেলিভিশন বার্তায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আইভ্যান ডুকে। তিনি বলেন, ‘এই শতকের মধ্যে মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে এটা সবচেয়ে বড় আঘাত। একে শুধু নব্বইয়ের দশকে পাবলো এসকোবারের পতনের সঙ্গে তুলনা করা যায়।’ পানামা সীমান্তবর্তী অ্যান্টিকোয়া প্রদেশের প্রত্যন্ত আস্তানা থেকে অ্যাতোনিয়েলকে আটক করা হয়। তাকে আটকের অভিযানে একজন পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। কলম্বিয়ার সশস্ত্র বাহিনী পরবর্তীতে একটি ছবি প্রকাশ করে, যেখানে হাতকড়া লাগানো অ্যাতোনিয়েলকে সৈনিকদের পাহারা দিতে দেখা যায়। ৫০ বছর বয়সী এই মাদক ব্যবসায়ীকে ধরতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অসংখ্য অভিযান চালানো হয়েছে। এসব অভিযানে হাজার হাজার কর্মকর্তা অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু কোনো অভিযান সফল হয়নি। দশ বছর আগে নববর্ষের পার্টিতে পুলিশের একটি অভিযানে তার ভাই নিহত হওয়ার পর গালফ ক্ল্যানের প্রধান হয়ে ওঠেন অ্যাতোনিয়েল, যেটি আগে উসুগা ক্ল্যান নামে পরিচিত ছিল। কলম্বিয়ার নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, এই দলটি হচ্ছে দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী অপরাধী চক্র। যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষের বর্ণনা অনুযায়ী, ‘এরা হচ্ছে ভারী অস্ত্রে সজ্জিত চরম সহিংস একটি দল।’ কলম্বিয়ার অনেকগুলো প্রদেশে এই চক্রটি বিস্তৃত। তাদের বিদেশেও ভালো যোগাযোগ রয়েছে। এরা মাদক ব্যবসা, মানবপাচার, অবৈধভাবে স্বর্ণ আহরণ এবং চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত রয়েছে। ধারণা করা হয়, এই দলে ১৮০০ সশস্ত্র সদস্য রয়েছে, যাদের চরম ডানপন্থী আধাসামরিক বাহিনীগুলো থেকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, হন্ডুরাস, পেরু এবং স্পেন থেকেও এই চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কলম্বিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্র, এমনকি রাশিয়া মাদক পাচারের রুটগুলো নিয়ন্ত্রণ করে এই চক্রটি। যুক্তরাষ্ট্রে মাদক পাচার, পুলিশ কর্মকর্তাদের হত্যা এবং শিশুদের নিয়োগ দেওয়ার মতো অনেকগুলো অভিযোগের মুখোমুখি হতে হবে অ্যাতোনিয়েলকে। গত ২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিচারে অভিযুক্ত হয়েছেন অ্যাতোনিয়েল। ফলে তাকে বিচারের জন্য বহিঃসমর্পণ চাইতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। সেক্ষেত্রে তাকে নিউইয়র্কের আদালতেও হাজির হতে দেখা যেতে পারে।
Link copied!