শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কুয়েতে পাপুলের কারাদণ্ড বেড়ে সাত বছর

প্রকাশিত: ০৪:২০ এএম, এপ্রিল ২৭, ২০২১

কুয়েতে পাপুলের কারাদণ্ড বেড়ে সাত বছর

কারাদণ্ড বেড়ে সাত বছর হলো। কুয়েতে দণ্ডিত বাংলাদেশের সাবেক সাংসদ কাজী শহিদ ইসলাম ওরফে পাপুলের কারাদণ্ড চার বছর থেকে বেড়ে সাত বছর হয়েছে। সোমবার কুয়েতের একটি আপিল আদালত তাঁর কারাদণ্ডাদেশ তিন বছর বাড়িয়েছেন। এ ছাড়া তাঁকে ২০ লাখ কুয়েতি দিনারের অর্থদণ্ড ও দেওয়া হয়েছে। কুয়েতের পাবলিক প্রসিকিউটরের দপ্তর সূত্র এবং শেটির আরবি দৈনিক আল কাবাস ও আল নাহার থেকে শহিদ ইসলামের কারাদণ্ডের মেয়াদ বাড়ানোর খবর জানা গেছে। কুয়েতে শহিদ ইসলামের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়। একটি মামলা হয় ঘুষ লেনদেনের এবং অন্যটি করা হয় অর্থ পাচারের অভিযোগে। এর মধ্যে ঘুষ লেনদেনের দায়ে আগেই তাঁর চার বছরের কারাদণ্ডাদেশ হয়। একই মামলায় এবার মানব পাচারের দায়ে আদালত ৩ বছর কারাদণ্ড ও ২০ লাখ কুয়েতি দিনারের অর্থদণ্ড দিলেন। অন্যদিকে তাঁর বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের মামলাটি এখনো বিচারাধীন। কুয়েতের আদালত সূত্রে জানা গেছে, আপিল আদালত মানব পাচারের মামলায় শহিদ ইসলামের পাশাপাশি আরও তিনজনকে কারাদণ্ডাদেশ দেন। তাঁরা হলেন দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরখাস্ত হওয়া আন্ডারসেক্রেটারি জেনারেল শেখ মাজেন আল জারাহ, কুয়েতের সাবেক সাংসদ সালাহ খুরশিদ ও কুয়েতের একজন সরকারি কর্মকর্তা। তাঁদের সাত বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। তবে ওই মামলা থেকে কুয়েতের বর্তমান সাংসদ সাদুন হামাদকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। মূলত অবৈধভাবে বাংলাদেশের লোকজনকে কুয়েতে নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে ঘুষ লেনদেনের দায়ে গত জানুয়ারিতে শহি ইসলামের চার বছর কারাদণ্ড হয়। এ ছাড়া ৫৩ কোটি টাকা জরিমানাও করেন আদালত। এ মামলায় কুয়েতের তিন নাগরিকের পাশাপাশি সাংসদ শহিদের তিন সহকর্মী এবং সিরিয়ার এক নাগরিককে কারাদণ্ড দেন আদালত। শহিদ ইসলামের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের মামলার বিচার এখনো বাকি। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, অর্থ পাচারের দায় এড়ানো সাংসদের জন্য কঠিন হবে। সে ক্ষেত্রে তাঁর সাজা আরও কয়েক বছর বাড়তে পারে। মানব ও অর্থ পাচারের অভিযোগে শহিদকে গত বছরের ৬ জুন রাতে তাঁর কুয়েত সিটির বাসা থেকে সে দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা আটক করেন। এই মামলা সংশ্লিষ্ট কুয়েতের পাবলিক প্রসিকিউটরের দপ্তর, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সূত্র ও নথিপত্র থেকে জানা যায়, শুরু থেকেই শহি ইসলামের বিরুদ্ধে মানব পাচারের পাশাপাশি মুদ্রা পাচারের অভিযোগ ছিল। এমনকি কুয়েতে শহিদ ইসলামের বাড়ির গ্যারেজে রাখা গাড়ি এবং তাঁর প্রতিষ্ঠানে তল্লাশি চালিয়ে চেকসহ আর্থিক লেনদেনের বেশ কিছু প্রমাণ পান দেশটির গোয়েন্দারা। লক্ষ্মীপুর-২ আসন (রায়পুর-লক্ষ্মীপুর সদরের আংশিক) থেকে সাংসদ হয়েছিলেন শহিদ ইসলাম। কুয়েতে কারাদণ্ডাদেশ হওয়ার পর সাংসদ পদ হারান তিনি। কুয়েতে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে লক্ষ্মীপুরের মানুষ শহিদ ইসলামকে দানবীর হিসেবে জানতেন। এলাকার লোকজন জানান, ১৯৮৯ সালে একটি প্রতিষ্ঠানের সুপারভাইজার (শ্রমিকরে তত্বাবধায়ক) হিসেবে চাকরি নিয়ে কুয়েত যান শহিদ। তখন তিনি ছিলেন অনেকটা নিঃস্ব। ১৯৯০ সালে ইরাকের কুয়েত খলের কারণে তিনি দেশে ফিরে আসেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শহি আবার কুয়েতে যান। লাল পাসপোর্টকে আদমপাচারের মজবুত লাইসেন্স হিসাবে ব্যবহার করতে গিয়ে দেশের যে ভাবমূর্তি নষ্ট করলো তা ফিরিয়ে আনা যাবে?
Link copied!