শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কে হচ্ছেন মার্কেলের উত্তরসূরি?

প্রকাশিত: ১০:৫৪ এএম, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২১

কে হচ্ছেন মার্কেলের উত্তরসূরি?

জার্মানিতে জাতীয় নির্বাচন আজ। রোববার দেশটির স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। নির্বাচন উপলক্ষে পুরো দেশেই বইছে নির্বাচনী আমেজ। ১৬ বছর জার্মানির চ্যান্সেলরের দায়িত্বে ছিলেন অ্যাঙ্গেলা মার্কেল। নির্বাচনের মাধ্যমে মার্কেলের উত্তরসূরিকে বরণ করে নিতে প্রস্তুত বার্লিন। নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ৬ কোটি। নির্বাচনে লড়ছেন তিনজন প্রার্থী। প্রার্থীরা হলেন-অ্যাঙ্গেলা মার্কেলের দল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নের (সিডিইউ) আরমিন লাশেট, সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এসপিডি) ওলাফ শোলজ ও গ্রিন পার্টির আনালেনা বেয়ারবক। আরমিন লাশেট বর্তমানে জার্মানির সবচেয়ে জনবহুল নর্থরাইন ওয়েস্টফালিয়া রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ৷ এই রাজ্যটিতে জার্মানির মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-চতুর্থাংশের বাস ৷ লাশেট বলেন, 'এক কোটি ৮০ লাখ মানুষের রাজ্য পরিচালনাকারী মুখ্যমন্ত্রী চ্যান্সেলর হতে পারেন।' সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি দলের নেতা ওলাফ শোলজ বর্তমান জোট সরকারে অর্থমন্ত্রী ও ডেপুটি চ্যান্সেলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ৷ তিনি সংকট মোকাবিলায় সক্ষম হিসেবেও পরিচিত ৷ গ্রিন পার্টির আনালেনা বেয়ারবক ২০১৮ সালে গ্রিন পার্টির অন্যতম শীর্ষ নেতা নির্বাচিত হন ৷ জার্মানির বিশ্বখ্যাত অটোবানে গাড়ি চলাচলের গতিসীমা ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটারে নির্দিষ্ট করার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর। গতকাল শনিবার বিদায়ী চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল নিজ শহর আচেনে আরমিন লাশেটের পক্ষে এক র‍্যালিতে অংশ নিয়েছেন। ভোট শুরুর ৪৮ ঘণ্টা আগে ভোটারদের সতর্ক করে অ্যাঙ্গেলা মার্কেল বলেন, 'কারা ক্ষমতায় আসছে এটি সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।' ভোটারদের উদ্দেশ্যে মার্কেলের বার্তা, জার্মানিতে স্থিতিশীলতা এবং তরুণদের জন্য ভবিষ্যৎ দরকার। আরমিন লাশেট এমন এক ব্যক্তি তিনি এগুলোর ব্যবস্থা করতে পারবেন। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চূড়ান্ত জরিপ বলছে, নির্বাচনে কোন দল জয়ী হবে এটি এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলে জানিয়েছে, নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলো জলবায়ু ও গণপরিবহন, অভিবাসন, সামাজিক সুরক্ষা ও আবাসন, আয়কর, পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষানীতি বিষয়ে নানামুখী প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। রক্ষণশীল দল হিসেবে পরিচিত ক্ষমতাসীন ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন (সিডিইউ) পুনরায় ক্ষমতায় এলে পরিবেশ বিপর্যয়ের প্রভাব মোকাবিলায় কাজ করার ঘোষণা দিয়েছে। এছাড়াও দলটি কর ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কমিয়ে ২০২৫ সালের মধ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ১৫ লাখেরও বেশি নতুন ঘর বানানোর ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক আয়ের ওপর ধার্যকৃত কর কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে। ভোটারদের মন জয় করতে বামপন্থী দল এসপিডিও নানা ধরনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ৷ দলটি ক্ষমতায় এলে ইউরোপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে রেলের ভাড়া কমানও হবে। ক্ষমতায় এলে অভিবাসনের ক্ষেত্রে নতুন কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করবে না দলটি। এছাড়াও বেশি মাত্রায় আশ্রয়প্রার্থীদের পরিবারকে জার্মানিতে আসার সুযোগ দেওয়া, অবসরকালীন ভাতাকে মানানসই অবস্থানে রাখা, ঘণ্টায় ন্যূনতম মজুরি ১২ ইউরো করাসহ নানামুখী প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। পরিবেশ নিয়ে অন্য দলগুলোর চেয়ে বেশি সচেতন বলে পরিচিত গ্রিন পার্টি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, রাস্তাঘাটসহ নানা খাতের উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে ৷ গ্রিন পার্টি ২০৩০ সাল থেকে রাস্তায় কার্বনডাইঅক্সাউড নির্গমন করে এমন গাড়ি রাখতে চায় না। দলটি মনে করে, অভিবাসনের জন্য উপযোগী দেশ হলেও অভিবাসনকে সহজ করতে জার্মানিতে প্রয়োজনীয় আইনের ঘাটতি রয়েছে ৷ তাই ক্ষমতায় এলে অভিবাসন প্রক্রিয়াকে আরও দৃঢ় করতে এবং অভিবাসীদের নাগরিকত্ব পাওয়ার বিষয়টিকে সহজ করতে কাজ করতে চায় দলটি ৷ এছাড়াও মাসিক বেতনের অন্তত শতকরা ৪৮ ভাগ অবসর ভাতা হিসেবে দেওয়া, ন্যাটো বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখাসহ নানান পরিকল্পনা রয়েছে গ্রিন পার্টির।
Link copied!