বৈধ পথে এবং সরকারি সহযোগিতায় বাংলাদেশিদের জন্য ইউরোপের দেশ গ্রিস, আলবেনিয়া এবং মাল্টায় চাকরির বাজার শিগগির চালু হচ্ছে। ইউরোপের এই তিন দেশে বাংলাদেশিরা যাতে বৈধভাবে কাজ করতে পারেন সেজন্য দেশগুলোর সরকারের সঙ্গে সমাঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের প্রক্রিয়া চলছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত এসব দেশের সঙ্গে প্রথমবারের মতো এ ধরনের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
গ্রিসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আসুদ আহমেদ একই সঙ্গে আলবেনিয়া এবং মাল্টার দায়িত্বও পালন করেন। তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘গ্রিস, আলবেনিয়া এবং মাল্টায় বৈধপথে এবং সরকারি সহযোগিতায় বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের জন্য কাজ করছি। এই তিন দেশের সঙ্গে কর্মী নিয়োগ ইস্যুতে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি চূড়ান্ত করতে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠানো হয়েছে। এটি স্বাক্ষর হলে তা হবে ইউরোপের সঙ্গে প্রথমবারের মতো এ ধরনের সমঝোতা স্মারক। এতে বাংলাদেশিরা বৈধভাবে কাজ করার সুযোগ পাবে।’
এদিকে অল ইউরোপিয়ান বাংলাদেশ কমিউনিটি মহাসচিব কাজী এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘অনিয়মিত ১৬৫ জন বাংলাদেশিকে মাল্টা থেকে দেশে ফেরত পাঠানোর সময় মাল্টার মুখ্য স্বরাষ্ট্র সচিব কেভিন মহোনের সঙ্গে আলাপ হয়েছে। তিনি বলেছেন, মাল্টা এই মুহূর্তে তাদের প্রয়োজন মেটাতে বিদেশ থেকে ৩০ হাজার কর্মী নিতে চায়। এর মধ্যে কমপক্ষে ১০ হাজার কর্মী বাংলাদেশ থেকে নেওয়ার সুযোগ আছে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে যারা মাল্টায় আসে, তারা বেশি দিন এখানে থাকে না। কারণ হচ্ছে মাল্টায় আসতে বাংলাদেশিদের খরচ করতে হয় কম-বেশি ১০ লাখ টাকা। তাই এখানে আসার পর যে বেতন পায়, তা দিয়ে খরচের টাকা তুলতে পারে না বলেই মাল্টা থেকে পালিয়ে ইউরোপের অন্য দেশে চলে যায়। পেছনের কারণ হচ্ছে মাল্টা আসতে এক থেকে দেড় লাখ টাকার বেশি লাগার কথা নয়। কিন্তু একটি চক্র বাংলাদেশিদের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকারও বেশি অর্থ নেয়। এতে বাংলাদেশিরা যেমন মাল্টায় আসার পরই অন্য দেশে যাওয়ার ফাঁকফোকর খুঁজতে থাকে তেমনি মাল্টা কর্তৃপক্ষও বাংলাদেশিদের এমন আচরণে বিরক্ত।’
কাজী এনায়েত উল্লাহ আরও বলেন, ‘আমরা অল ইউরোপিয়ান বাংলাদেশ কমিউনিটি মাল্টার মুখ্য স্বরাষ্ট্র সচিব কেভিন মহোনের সঙ্গে বৈঠক করেছি। তিনি বলেছেন, ইলেকট্রিশিয়ান, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, বাবুর্চি, প্লাম্বারসহ মাল্টায় দক্ষ ও আধা-দক্ষ বাংলাদেশি কর্মীর মাল্টায় কাজ করার সুযোগ আছে। তবে মাল্টায় এসে তারা আবার চলে যেতে পারবে না। কেভিন মহোনকে আমরা বলেছি, যেসব বাংলাদেশিরা মাল্টায় আসবে তারা যেন কাজ ছেড়ে চলে না যায়, সেই দায়িত্ব অল ইউরোপিয়ান বাংলাদেশ কমিউনিটি নেবে।’