বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

গাজীপুর সিটি মেয়রকে বরখাস্তের বৈধতার বিষয়ে রায় বৃহস্পতিবার

প্রকাশিত: ০২:১৯ পিএম, মার্চ ২৮, ২০২৩

গাজীপুর সিটি মেয়রকে বরখাস্তের বৈধতার বিষয়ে রায় বৃহস্পতিবার

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে। বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার শুনানি শেষে এ বিষয়ে রায়ের জন্য বৃহস্পতিবার দিন রেখেছেন। আদালতে জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন ও এম কে রহমান। সিটি করপোরেশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোমতাজ উদ্দিন ফকির। গত ১৫ মার্চ এই রুল শুনানি শুরু হয়েছিল। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে গোপনে ধারণ করা জাহাঙ্গীরের কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ওই বছরের ১৯ নভেম্বর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর বিভিন্ন অভিযোগে ২৫ নভেম্বর তাকে বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্ত করার প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে ভুয়া টেন্ডার, আরএফকিউ, বিভিন্ন পদে অযৌক্তিক লোকবল নিয়োগ, বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে ভুয়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে ও একই কাজ বিভিন্ন প্রকল্পে দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ এবং প্রতিবছর হাট-বাজার ইজারার অর্থ যথাযথভাবে নির্ধারিত খাতে জমা না রাখাসহ নানাবিধ অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। এ ছাড়া ভূমি দখল ও ক্ষতিপূরণ ছাড়া রাস্তা প্রশস্তকরণ সংক্রান্ত প্রাপ্ত অভিযোগটির বিষয়ে সিটি করপোরেশনের মতামত জানতে চাওয়া হলে কোনো মতামত দেওয়া হয়নি। প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার, বিধিনিষেধ পরিপন্থি কার্যকলাপ, দুর্নীতি ও ইচ্ছাকৃত অপশাসনের শামিল, যা করপোরেশন আইনের ধারা ১৩(১)(ঘ) অনুযায়ী অপসারণযোগ্য অপরাধ। এসব অভিযোগের তদন্ত কার্যক্রম শুরুর মাধ্যমে ২০০৯ সালের সিটি করপোরেশন আইনের ১৩ ধারামতে অপসারণের কার্যক্রম আরম্ভ করা হয়েছে। তাই সিটি করপোরেশন আইনের ধারা ১২(১) অনুযায়ী, সুষ্ঠু তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার স্বার্থে জাহাঙ্গীর আলমকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়রের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। পরে গত বছরের ১৪ আগস্ট ওই বরখাস্তের আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন জাহাঙ্গীর আলম। ওই রিটের শুনানি নিয়ে ২৩ আগস্ট রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। এলজিআরডি সচিব, উপসচিব, আইন সচিব ও গাজীপুর জেলা প্রশাসককে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। এদিকে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বরখাস্ত মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে ক্ষমা করেছে তার দল ৷ গত ১ জানুয়ারি দলীয় সাধারণ সম্পাদকের দেওয়া এক চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বার্থ, আদর্শ, শৃঙ্খলা তথা গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততার জন্য ইতোপূর্বে আপনাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার অব্যাহতি প্রদান করা হয়। ‘আপনার বিরুদ্ধে আনীত সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ স্বীকার করে আপনি আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন এবং ভবিষ্যতে সংগঠনের গঠনতন্ত্র, নীতি ও আদর্শ পরিপন্থি কোনো কার্যকলাপে সম্পৃক্ত হবেন না মর্মে লিখিত অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। এমতাবস্থায়, গত ১৭ ডিসেম্বর গণভবনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সংগঠনের গঠনতন্ত্রের ১৭(৬) এবং ৪৭(২) ধারা অনুযায়ী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নিকট সাধারণ ক্ষমা প্রার্থনা করে আপনার প্রেরিত লিখিত আবেদন পর্যালোচনা এবং ভবিষ্যতে সংগঠনের স্বার্থ পরিপন্থি কর্মকাণ্ড ও শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করার শর্তে আপনার প্রতি ক্ষমা প্রদর্শন করা হলো।
Link copied!