শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঘুরেফিরে পুরনোরাই কর্তৃত্বের চেয়ারে!

প্রকাশিত: ১১:০৮ এএম, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২১

ঘুরেফিরে পুরনোরাই কর্তৃত্বের চেয়ারে!

সেই ২০১২ সাল থেকে শুরু। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাননি। অদ্যাবধি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতির চেয়ারটা নিজের দখলে রেখেছেন নাজমুল হাসান পাপন। ২০১৩ আর ২০১৭ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া এ ক্রীড়া সংগঠক আরও চার বছর চেয়ারটা দখলে রাখবেন, অতি নাটকীয় কিছু না ঘটলে এটা নিশ্চিতই। রীতিমতো অপ্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছেন তিনি। নাজমুল হাসান নিজেও এমনটা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন। তার নেতৃত্বাধীন বিসিবির পরিচালনা পর্ষদে গত ৮ বছর ধরে যারা আছেন, তারাও বোধকরি হয়ে উঠেছেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী! তোতা পাখির মতো ‘নতুন নেতৃত্ব চাই’ বলে নাজমুল হাসান যতই গলা ফাটান না কেন, ঘুরেফিরে বিসিবির কর্তৃত্বের চেয়ারে থেকে যান পুরনোরাই। ৬ অক্টোবর বিসিবির নির্বাচন। সেই নির্বাচনে ১৭১ জন কাউন্সিলর ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে বাছাই করবেন ২৩ জন পরিচালক, যদি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী থাকে। বিসিবির সবশেষ দুটো নির্বাচনে যেটা দেখা যায়নি বললেই চলে। ২০১৩ সালের ১০ অক্টোবরের নির্বাচনে ক্যাটাগরি-৩ থেকে পরিচালক হওয়ার জন্য জাতীয় দলের সাবেক দুই অধিনায়ক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু আর খালেদ মাহমুদ সুজন প্রার্থী হওয়ায় ভোটাভুটিতে যেতে হয়েছিল। সেবার ভোট হয়েছিল ঢাকা আর রাজশাহী বিভাগ থেকে পরিচালক নির্বাচনেও। তাই ভিন্ন রকম এক আগ্রহ ছিল বিসিবি নির্বাচনকে ঘিরে। ২০১৭ সালের ৩১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত পরের নির্বাচনে যেটা ছিল না বললেই চলে। ঢাকা বিভাগের দুটো আর বরিশাল বিভাগের এক পরিচালক নির্বাচনেই কেবল ভোট হয়েছিল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এবারের নির্বাচন হয়ে উঠেছে আরও সাদামাটা। কেবলমাত্র রাজশাহী বিভাগের পরিচালক নির্বাচনে ভোট হতে পারে এবার। সাবেক ক্রিকেটার কোটায় কাউন্সিলর না হয়ে রাজশাহী বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা থেকে কাউন্সিলর হয়েছেন খালেদ মাসুদ পাইলট। জাতীয় দলের সাবেক এ অধিনায়ক পরিচালক হতে নির্বাচন করবেন বলেই জোর গুঞ্জন। অন্যদিকে বিগত দুই নির্বাচনে উত্তরাঞ্চলের এই বিভাগ থেকে পরিচালক নির্বাচিত হওয়া সাইফুল আলম স্বপন চৌধুরীও রয়েছেন মাঠে। আগামীকাল আর পরশু মনোনয়নপত্র সংগ্রহের দিন ধার্য করেছে ৫ সদস্যের বিসিবি নির্বাচন কমিশন। জানা গেছে দুজনই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করবেন, এরপর কেউ সরে না দাঁড়ালে কিংবা কারও মনোনয়নপত্র বাতিল না হলে নির্বাচন হবে রাজশাহী বিভাগে, যেখানে ভোট রয়েছে ৯টি। এ ছাড়া বাকি ২২টি পরিচালক পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার জোর সম্ভাবনা রয়েছে প্রার্থীদের। এক নম্বর ক্যাটাগরিতে জেলা ও বিভাগের বাকি ৯টি পরিচালক পদে চট্টগ্রাম থেকে (দুটো পদ) আকরাম খান আর আ জ ম নাসির, ঢাকা থেকে (দুটো) নাঈমুর রহমান দুর্জয় আর আনভির আহমেদ টিটু, খুলনা থেকে (দুটো) শেখ সোহেল আর কাজী এনাম আহমেদ, সিলেট থেকে শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, রংপুর থেকে অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম এবং বরিশাল থেকে আলমগীর খান আলোর আসা প্রায় নিশ্চিত। তেমনি নিশ্চিত তিন নম্বর ক্যাটাগরির একমাত্র পরিচালক পদে খালেদ মাহমুদ সুজনের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টিও। দুই নম্বর ক্যাটাগরির ১২ পরিচালক নির্বাচিত হন ঢাকার ক্লাবগুলো থেকে। এক্ষেত্রে এগিয়ে আছেন নাজমুল হাসান পাপন (আবাহনী), মাহবুবুল আনাম (মোহামেডান), গাজী গোলাম মুর্তজা (গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স), নজীব আহমেদ (শেখ জামাল ধানমন্ডি), ওবেদ রশীদ নিজাম (শাইনপুকুর), ইসমাইল হায়দার মল্লিক (শেখ জামাল ক্রিকেটার্স), এনায়েত হোসেন সিরাজ (আজাদ স্পোর্টিং), ফাহিম সিনহা (সূর্যতরুণ), ইফতেখার রহমান মিঠু (ফেয়ার ফাইটার্স), মঞ্জুর কাদের (ঢাকা এসেটস), মাসুদুজ্জামান (মোহামেডান), সালাউদ্দীন চৌধুরী (কাকরাইল বয়েজ)। এরাই প্রার্থী হচ্ছেন বলে জানা গেছে। এদের বাইরে থেকে কেউ প্রার্থী হলেই কেবল ভোট হবে। তবে সে সম্ভাবনা একেবারেই ক্ষীণ। তিন ক্যাটাগরি থেকে আসা ২৩ পরিচালকের সঙ্গে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে মনোনীত দুটো পরিচালক পদে আসতে যাচ্ছেন আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববি আর জালাল ইউনুস। এরা বিসিবির আগের দুই কমিটিতেও ছিলেন। শুধু তারাই নন, জেলা ও বিভাগ থেকে আকরাম, নাঈমুর, নাসির, শেখ সোহেল, কাজী এনাম, নাদেল, আনোয়ারুল, আলো- সবাই পরিচালক ছিলেন আগের পর্ষদে। এই ক্যাটাগরিতে টিটু আর পাইলটই হতে পারেন নতুন মুখ। ক্লাব ক্যাটাগরি থেকে পাপন, মাহবুবুল আনাম, গোলাম মুর্তজা, মল্লিক, সিরাজ, কাদের, নজীবরা পুরনো মুখ। পাঁচ-ছয়জন নতুনকে নিয়ে ঘুরেফিরে তারাই আবার বসতে চলেছেন বিসিবির কর্তৃত্বের চেয়ারে।
Link copied!