শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ঘুষের তথ্য প্রমানেও পদোন্নতি

প্রকাশিত: ১২:১৭ পিএম, নভেম্বর ২৬, ২০২১

ঘুষের তথ্য প্রমানেও পদোন্নতি

ডেইলি খবর ডেস্ক: ঘুষ নেওয়ার তথ্য প্রমানেও পদোন্নতি হয়েছে মোহাম্মদ আবুল মনসুরের। তিনি গাজীপুরের সাবেক হুকুম দখল কর্মকর্তা (এলএ)। মোহাম্মদ আবুল মনসুরের বিরুদ্ধে ২৩ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন শৃঙ্খলা অধিশাখার নির্দেশে গাজীপুরের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মো:কামরুজ্জামান ইতিমধ্যে বিষয়টির তদন্ত শুরু করেছেন। অভিযোগ মতে,২০২০ সালে গাজীপুরে এলএ কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় দুর্নীতির মাধ্যমে ওই টাকা হাতিয়ে নেন আবুল মনসুর। তিনি বর্তমানে ময়মনসিংহের নান্দাইলের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে কর্মরত। আবুল মনসুরের বাড়ি কিশোরগঞ্জ হলেও তার পরিবার ময়মনসিংহ শহরে বসবাস করে। অভিযোগ থেকে জানা যায়, মো: আবুল মনসুর ২০২০ সালের শুরু থেকে জুন পর্যন্ত গাজীপুরে ভূমি হুকুম দখল (এলএ) কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি ওই বছরের ৪ এপ্রিল ইসলামী ব্যাংকের ময়মনসিংহ শাখার নিজ সঞ্চয়ী হিসাবে ১০ লাখ,৭ এপ্রিল ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের ময়মনসিংহ শাখার হিসাবে ১০ লাখ টাকা, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ময়মনসিংহ শাখার হিসাবে পাঁচ লাখ টাকা এবং ৮ এপ্রিল সোনালী ব্যাংকের ময়মনসিংহ শাখায় নিজ নামের দুটি অ্যাকাউন্টে ৮ লাখ টাকা জমা দেন। প্রতিটি জমা সিøপে জমাকারী হিসেবে এলএ অফিসের উমেদার মো. মেহেদী হাসানের নাম ও স্বাক্ষর রয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী,এলএ অফিসে যোগ দিয়েই দুর্নীতিবাজ কিছু কর্মচারীর সঙ্গে যোগসাজশ করে ঘুষ-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন এলএ আবুল মনসুর। তিনি ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ কমিশন ছাড়া জমি অধিগ্রহণের বিল ছাড় করতেন না। ভুক্তভোগীদের অভিযোগের মুখে পাঁচ মাসের মাথায় তাকে এলএ পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এর পাঁচ দিনের মাথায় বিভিন্ন ব্যাংকে তার হিসাবে ২৩ লাখ টাকা জমার তথ্য প্রকাশ পায়। এ সংক্রান্ত খবর পত্রিকায় প্রকাশিত হলে গাজীপুরের জেলা প্রশাসকের নির্দেশে তৎকালীন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বিষয়টি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পান। টাকার উৎস সম্পর্কে আবুল মনসুরের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হলে চীনে প্রশিক্ষণে গিয়ে সম্মানী হিসেবে ওই টাকা পেয়েছেন বলে দাবি করেন। কিন্তু এর সপক্ষে কোনো প্রমাণ জমা দিতে পানেনি। পরে আবুল মনসুরকে অভিযুক্ত করে জেলা প্রশাসকের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করেন এডিসি (রাজস্ব)। জেলা প্রশাসক ওই প্রতিবেদনের সঙ্গে একমত পোষণ করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠান। ওই ২৩ লাখ টাকা চীনের কোন প্রশিক্ষণ থেকে আবুল মনসুর পেয়েছেন,তার প্রমাণ ও খরচের ভাউচারসহ সুস্পষ্ট মতামতসহ প্রতিবেদন এক মাসের মধ্যে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে জমা দিতে গাজীপুরের জেলা প্রশাসককে গত ২৫ সেপ্টেম্বর চিঠি দেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন শৃঙ্খলা অধিশাখার উপসচিব মো. ছাইফুল ইসলাম। ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে তলব করা হয় আবুল মনসুরকে।অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে বর্তমানে নান্দাইলের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা মোহাম্মদ আবুল মনসুরের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। নিজের নামে ব্যাংক একাউন্টে জমা নেওয়া ঘুষের টাকাও নানাভাবে সরিয়ে নিচ্ছেন মনসুর।
Link copied!