বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চৌদ্দ আসামির ফায়ারিং স্কোয়াডে মৃত্যুদণ্ডের রায়

প্রকাশিত: ০৫:৪৭ এএম, মার্চ ২৪, ২০২১

চৌদ্দ আসামির ফায়ারিং স্কোয়াডে মৃত্যুদণ্ডের রায়

২০০০ সালে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হেলিকপ্টার অবতরণস্থলে বোমা পুঁতে হত্যা প্রচেষ্টার মামলায় ১৪ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ফায়ারিং স্কোয়াডে তাদের এ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হবে। ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান গতকাল এ রায় ঘোষণা করেন। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর আবু আব্দুল্লাহ ভূঁইঞা জানিয়েছেন, আসামিদের ফায়ারিং স্কোয়াডে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের কোনো অসুবিধার কারণ থাকলে প্রচলিত নিয়মানুসারেই ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশও রায়ে দেয়া হয়েছে। দণ্ডিত আসামিরা হলেন মো. আজিজুল হক ওরফে শাহনেওয়াজ, মো. লোকমান, মো. ইউসুফ ওরফে মোছহাব মোড়ল, মোছহাব হাসান ওরফে রাশু, শেখ মো. এনামুল হক, মো. মফিজুর রহমান ওরফে মফিজ, মো. মাহমুদ আজহার ওরফে মামুনুর রশিদ, মো. রাশেদুজ্জামান ওরফে শিমুল, মো. তারেক, মো. ওয়াদুদ শেখ ওরফে গাজী খান, মো. আনিসুল ইসলাম, সারোয়ার হোসেন মিয়া, মাওলানা আমিরুল ইসলাম ওরফে জেন্নাত মুন্সী ও মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান। তাদের মধ্যে প্রথম পাঁচজন পলাতক রয়েছেন। প্রসঙ্গত, এ মামলার প্রধান আসামি ছিলেন মুফতি আব্দুল হান্নান। তবে অন্য একটি মামলায় ফাঁসি হওয়ায় তাকে আগেই অব্যাহতি দেয়া হয়। এ রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে গতকাল ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত অঙ্গনে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। বেলা পৌনে ১টার দিকে বিচারক রায় ঘোষণা করেন। ওই সময় কারাগার থেকে আট আসামিকে ট্রাইব্যুনালে এনে হাজির করা হয়। রায় ঘোষণার পর আসামিদের সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। বিচারক রায় ঘোষণার সময় বলেন, আসামি মুফতি হান্নান তার দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেছেন, ২০০০ সালের জুলাইয়ে হরকাতুল জিহাদের (হুজি) কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে বৈধ সরকারকে উত্খাতের জন্য শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়। ওই বছরের ২০ জুলাই কোটালীপাড়ায় শেখ হাসিনার সমাবেশস্থল ও হেলিপ্যাডের কাছে ৭৬ কেজি ও ৪০ কেজি ওজনের শক্তিশালী দুটি বোমা পুঁতে রাখা হয়েছিল। সমাবেশের আগে পুলিশ বোমা উদ্ধার করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বারবার হত্যার চেষ্টা করেছে হুজি। এর প্রথম ঘটনা ঘটে কোটালীপাড়ায় ২০০০ সালের ২০ জুলাই। দ্বিতীয় ঘটনা ঘটে খুলনায় পরের বছর ৩০ মে। ওই বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর সিলেটে তৃতীয় ঘটনা ঘটে এবং চতুর্থ ঘটনা ঘটে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট। এ কারণে হুজি ও জেএমবিসহ ইসলামী জঙ্গিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের মাধ্যমে উল্লিখিত নৃশংস ও ন্যক্কারজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করা সম্ভব বলে ট্রাইব্যুনাল মনে করে। রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত করতে পারায় সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হলো। এর আগে গত ১১ মার্চ মামলাটির যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য গতকালের দিনটি ধার্য করেন আদালত। এ মামলার ৫০ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
Link copied!