শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

তামিমদের ছায়া দল ‘বিসিবি টাইগার্স’

প্রকাশিত: ০৮:৫৫ এএম, জুন ১৬, ২০২১

তামিমদের ছায়া দল ‘বিসিবি টাইগার্স’

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের জন্য একজন ওপেনার লাগবে। চোট নিয়ে ছিটকে পড়া শাদমানের পাশাপাশি স্কোয়াডে ছিলেন সাইফ হাসান। কিন্তু অভিজ্ঞতা বিবেচনায় এই তরুণকে বসিয়ে রেখে সৌম্য সরকারকে খেলিয়েছিল বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট। ফল ভালো হয়নি, দল থেকে বাদ পড়ার পর কোথাও প্রস্তুতিরই যে জায়গা পাননি সৌম্য। এমন আরো অনেক উদাহরণ আছে। জরুরি ভিত্তিতে এই সংকট দূর করার জন্য গতকাল বিসিবির বোর্ড সভায় অনুমোদন পেয়েছে ‘বিসিবি টাইগার্স’, জাতীয় দলের আশপাশে থাকা ক্রিকেটাররা যে কর্মসূচির তাঁবুতে প্রস্তুতি নিতে পারবেন বছরজুড়ে। ইতিহাস ঘাঁটলে এমন অসংখ্য নজির পাওয়া যাবে যে জাতীয় দল থেকে একবার বাদ পড়ে আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা হয়নি ক্রিকেটারের। তার চেয়েও বেশি নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে একজন ব্যর্থকে বাদ দিয়ে তাঁর জায়গায় ঢুকে পড়ছেন আরেক ব্যর্থ। ঢুকে পড়া ক্রিকেটারের অবস্থা আরো করুণ, নিজেকে তৈরিই করতে পারেননি যে তিনি! বিসিবির অধীন কোনো দল কিংবা ক্যাম্পে না থাকলে সংস্থাটির প্র্যাকটিস সুবিধা ব্যবহারের সুযোগ মেলে না। জাতীয় দল থেকে বাদ পড়া ক্রিকেটারকে মিরপুরের নেট থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনাও আছে। সেই ক্রিকেটারকেই আবার পরের সিরিজে খেলতে দেখা গেছে। সর্বশেষ শ্রীলঙ্কা সিরিজের জন্য ঘোষিত প্রাথমিক স্কোয়াডে ডাক পাওয়ার পর যেমন কলকাতা থেকে তড়িঘড়ি ঢাকায় ফিরতে হয়েছিল শুভাগত হোমকে। অবশ্য শুভাগতকে দিয়েই প্রকারান্তরে ‘বিসিবি টাইগার্স’ কর্মসূচির শুভযাত্রা বলা যায়। নিউজিল্যান্ড থেকে ফেরার পর বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসানের সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল, ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ, ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিসের চেয়ারম্যান কাজী ইনাম ও বোর্ড পরিচালক ইসমাইল হায়দার মল্লিক। জানা গেছে, সে বৈঠকেই তৈরি হয় বাংলাদেশ টাইগার্সের রূপরেখা। আর গতকালের বোর্ড সভাশেষে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান দিয়েছেন আনুষ্ঠানিক ঘোষণা,‘জাতীয় দলের ছায়া দল হিসেবে বিসিবি টাইগার্স গঠন করা হবে। এদের দেখাশুনা করবে স্থানীয় কোচরা।’ বাস্তবে এ কাজটি করার কথা হাই পারফরম্যান্সের। কিন্তু এই ইউনিটের আবার একটি বয়সসীমা আছে। ২৩ বছরের বেশি হলেই কারো ঠাঁই হয় না ভবিষ্যতের ক্রিকেটার তৈরির এ কর্মসূচিতে। আবার ভবিষ্যৎ প্রতিভা প্রস্ফুটিত হওয়ার ক্ষেত্র একাডেমিতেও রাখা যায় না আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলে ফেলা কাউকে। ‘আমাদের এই সমস্যাটা অনেক পুরনো। জাতীয় দলে যোগ্যতা দিয়েই সবাই ডাক পায়। তাদের সবাই যে এসেই ভালো কিছু করে ফেলবে, তা সম্ভব না। মাঝে খারাপ সময়ও যেতে পারে কারো। এখন এই ছেলেগুলো জাতীয় দল থেকে বাদ পড়লে কোথায় নিজেদের ভুলগুলো শোধরানোর কাজ করবে? বিসিবির অন্য প্রগ্রামগুলোয় ওদের অন্তর্ভুক্ত করা যায় না। সেই চিন্তা থেকেই ২০ জনের আলাদা একটা স্কোয়াড গঠন করার ভাবনা এসেছে’, জানিয়েছেন খালেদ মাহমুদ। এই স্কোয়াডের অভিভাবকত্ব করবেন খালেদ মাহমুদ ও কাজী ইনাম। খেলোয়াড় নির্বাচনের দায়িত্ব নির্বাচকদের ওপরই থাকবে। তবে ‘বিসিবি টাইগার্স’ নির্বাচনে সর্বাধিক গুরুত্ব পাবে তিন ফরম্যাটের অধিনায়কদের অভিমত। বলার অপেক্ষা রাখে না যে এই স্কোয়াডের চেহারা প্রতিনিয়ত বদলাবে। মাহমুদের কথাতেই সেটি পরিষ্কার, ‘এদের কোনো সমস্যা থাকলে সেটি নিয়ে কোচরা কাজ করবেন, যেন সবাই তৈরি থাকে। জাতীয় দলের কেউ চোট পেলে কিংবা ফর্ম খারাপ গেলে যেন চট করে এখান থেকে কাউকে তুলে নেওয়া যায়।’ এই স্কোয়াডের ঘষামাজার কাজটি কারা করবেন? জাতীয় দলের ছায়া দল যখন, তখন এটির কোচিংয়ের জন্যও বিদেশমুখী একটা আলোচনা ছিল। কিন্তু শেষমেশ স্থানীয় কোচদের ওপরই ভরসা রাখছে বিসিবি।
Link copied!