শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

তৃণমূল সংশোধনে বিএনপি

প্রকাশিত: ০৫:৪৫ পিএম, অক্টোবর ১৭, ২০২১

তৃণমূল সংশোধনে বিএনপি

দীর্ঘদিন স্থবির থাকার পর হঠাৎই চাঙ্গা হয়েছে বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম। সবচেয়ে বেশি দৃশ্যমান হয়েছে তৃণমূলে। নেতারা দেশের বিভিন্ন সাংগঠনিক ইউনিটে সফর করছেন। বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় অঙ্গ সংগঠনগুলোর কাউন্সিলও শুরু হয়েছে। বিএনপির সাংগঠনিক নেতারা বলছেন, কাউন্সিলে তাদের দুটি লাভ। এক, কাউন্সিল ঘিরে নেতাকর্মীরা চাঙ্গা হয়েছেন। খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসছেন। অন্যদিকে কাউন্সিলে সরকার কিংবা ক্ষমতাসীনরা বাধা দিলে জনগণ তা দেখতে পাবে। ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে সাংগঠনিক জেলার সব ইউনিটের কমিটি গঠনে বিএনপির হাইকমান্ডের নির্দেশনার পর বেশ তৎপর হয়েছেন নেতারা। সাংগঠনিক নেতারা দফায় দফায় বৈঠক করছেন। এ প্রক্রিয়ায় বিএনপির অসম্পূর্ণ সব ওয়ার্ড/ইউনিয়ন, থানা/উপজেলা, পৌর ও সাংগঠনিক জেলা কমিটি গঠন করার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। আন্দোলনমুখী নেতৃত্বে এসব কমিটি গঠন করতে হবে। কমিটি গঠনে কারও গাফিলতি প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরই অংশ হিসেবে রোববার চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির কর্মিসভা অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একইভাবে বিভিন্ন কমিউনিটি সেন্টার ও হলরুমে হচ্ছে সভা। গত কয়েকদিনে অন্তত ডজনখানেক কমিটি দিয়েছে বিএনপি। উপজেলাগুলোতেও কাউন্সিলরের প্রত্যক্ষ ভোটে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হচ্ছে। বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, করোনার কারণে সাংগঠনিক কার্যক্রম বন্ধ ছিল। সংক্রমণ কমায় ফের চালু হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি সব জায়গায় সঠিক সময়ে কমিটি দেওয়ার। তৃণমূলে কোন্দল বলতে প্রতিযোগিতা আছে। আর দলে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকাটা স্বাভাবিক। তবে গ্রুপিং কিংবা বলয় না দেখে, ত্যাগী ও পরীক্ষিতদের মূল্যায়ন করা হবে। এ জন্য গ্রাউন্ড ওয়ার্ক করছি। আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ অভিযোগ করেন, অনেক সময় তাদের কাউন্সিল করতে ক্ষমতাসীনরা বাধা দেয়। সব প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও শেষ মুহূর্তে কর্মিসভা পণ্ড হয়ে যায়। এতকিছুর মধ্যেও আমার চেষ্টা করে যাচ্ছি। প্রতিকূল পরিবেশেও কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটি গঠনের চেষ্টা চলছে। শুধু মূল দলেরই নয়, অঙ্গ সংগঠনের পুরনো কমিটিও বিলুপ্ত করা হচ্ছে। নতুন আহ্বায়ক কমিটি দেওয়া হচ্ছে। কমিটি ঘিরে নেতাকর্মীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। ঢাকায় ঘাপটি মেরে থাকা অনেক কর্মী গ্রামে যাচ্ছেন। পদ-পদবির জন্য তদবির করছেন। এদিকে বিএনপি আন্দোলন ও নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে তৃণমূল থেকে কাজ শুরু করছে। তৃণমূলকে ঢেলে সাজাতে ও চাঙ্গা করতে কেন্দ্রীয় নেতাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পূজায় নেতারা দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘুরেছেন। মতবিনিময় করে সাংগঠনিক অবস্থার খোঁজখবর নিয়েছেন। জানা গেছে, এবার একাধিক পদে থাকা নেতাদের একটি পদ রেখে সব ছাড়তে হবে। অর্থাৎ এক নেতার এক পদ দায়িত্ব আঁকড়ে রাখা যাবে না, অন্যদের কাজের সুযোগ দিতে হবে। ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে দহরম-মহরম করে চলা নেতাদের চিন্তিত করা হচ্ছে। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ঢাকায় বসে প্রেস রিলিজ দিয়ে বহু কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আমার এলাকায় ছাত্রদলের যে ছেলেকে সভাপতি করা হয়েছে তাকে আমিই চিনি না। এভাবে চললে তো তৃণমূলে কাজ করা মুশকিল। আর পকেট কমিটি দেখতে চাই না। এজন্যই কাউন্সিল জরুরি। কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটি করলে সবদিক থেকেই সুবিধা। আর এক নেতার এক পদ থাকা উচিত। পদ বাগিয়ে নিয়ে ঘরে থাকার মানে হয় না।
Link copied!