মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

পোস্ট অফিসে গ্রাহকের জমানো ২৯ কোটি টাকা আত্মসাত

প্রকাশিত: ০৯:২২ এএম, আগস্ট ১৯, ২০২২

পোস্ট অফিসে গ্রাহকের জমানো ২৯ কোটি টাকা আত্মসাত

ডেইলি খবর ডেস্ক: পোস্ট অফিসে গ্রাহকের জমানো ২৯ কোটি টাকা আত্মসাত করেছে ৫ কর্মকর্তা-কর্মচারী। চট্টগ্রাম জেনারেল পোস্ট অফিসের (জিপিও) পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে জালিয়াতির মাধ্যমে গ্রাহকদের ২৯ কোটি টাকার বেশি আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত গ্রাহকদের অর্থ সঠিক হিসাবের পরিবর্তে ভুয়া নাম-ঠিকানা ও ছবি দিয়ে করা হিসাবে জমার পর উত্তোলন করেছেন তাঁরা। অভিযুক্তরা হলেন-চট্টগ্রাম জিপিওর সহকারী পোস্ট মাস্টার নূর মোহাম্মদ-৪,পোস্টাল অপারেটর সরওয়ার আলম খান, পোস্টাল অপারেটর জয়নাল আবেদীন-৩, পোস্টাল অপারেটর কবির আহমেদ ও পোস্টাল অপারেটর মো:হাসান-৩।দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা ও সহকারী পরিচালক শহীদুল ইসলাম মোড়ল বলেন, ৯টি সঞ্চয়ী ও একটি মেয়াদি হিসাবের বিপরীতে অভিযুক্তরা যোগসাজশের মাধ্যমে মোট ২৯ কোটি ৩ লাখ ৯২ হাজার ৩০০ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তদন্ত শেষে ৭ আগস্ট তাঁদের অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। দুই আসামি গ্রেপ্তার হলেও তিন আসামি পলাতক।প্রধান আসামি বরখাস্ত সহকারী পোস্ট মাস্টার নূর মোহাম্মদ বলেন,আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছে। আমরা কোনো অর্থ আত্মসাৎ করিনি। এসব অভিযোগ যে মিথ্যা, তা আমরা আদালতে প্রমাণ করব। দুদক সূত্র জানায়,আসামি সরওয়ার ২০২০ সালের ১ মার্চ থেকে ২৬ আগস্ট পর্যন্ত জিপিওতে কর্মরত ছিলেন। তাঁর সময়ে ৯টি সঞ্চয়ী ও একটি মেয়াদি হিসাব থেকে মোট ২৩ কোটি ৬৬ লাখ ৭৭ হাজার ৩০০ টাকা অবৈধভাবে উত্তোলন করা হয়। একইভাবে আসামি জয়নাল ১ কোটি ১০ লাখ ১০ হাজার, কবির আহমেদ ১ কোটি ১৫ লাখ ও মো. হাসান ৪ কোটি ১১ লাখ ৩০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। মূলত ২০২০ সালের ২৬ আগস্ট জিপিওর ঊর্ধ্বতন পোস্ট মাস্টার ড.মো. নিজাম উদ্দিন সঞ্চয় শাখা আকস্মিক পরিদর্শন করে রায়ফা হোসেন, লাকী আক্তার ও সাকি আক্তার নামে তিন আমানতকারীর হিসাবের লেজারে ৪৫ লাখ টাকা জমা দেখালেও ওই টাকা সরকারি খাতে না দিয়ে উত্তোলনের প্রমাণ পান। এর মধ্যে রায়ফার ১৬ লাখ, লাকীর ১৪ ও সাকির ১৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়। এ ঘটনায় ওই বছরের ২১ অক্টোবর নূর মোহাম্মদ ও সরওয়ার আলম খানের নামে মামলা করে দুদক। পরে তদন্তে গিয়ে সংস্থাটি গ্রাহকদের ২৯ কোটি টাকার বেশি লোপাটের প্রমাণ পায়। ভুক্তভোগীদের মধ্যে চট্টগ্রাম নগরের সেইলার্স কলোনির আলী শাহ খামার বাড়ির নুরুল ইসলামে স্ত্রী সাকী আক্তারের ৭ কোটি ৪ লাখ ৭৭ হাজার,বন্দরের কলসিদিঘীর পাড়ের লাকি আক্তারের ৭ কোটি ১৪ লাখ ৯৫ হাজার, আগ্রাবাদ পিটিএনটি কলোনির আয়শা বেগমের ৪ কোটি ৫৮ লাখ ২৫ হাজার, বোয়ালখালীর খরণদ্বীপের নুর মোহাম্মদের ৪৩ লাখ ৫৫ হাজার, চেয়ারম্যান ঘাটার আলমগীরের স্ত্রী লায়লা হুমায়রা রাইসার ৯৮ লাখ ৯৩ হাজার,মধ্যম পতেঙ্গার দক্ষিণ ডেইলপাড়ার সাকী আক্তারের মেয়ে রায়ফা হোসেনের ৪ কোটি ৩১ লাখ ৯৫ হাজার, সদরঘাট এলাকার মো. খোকনের ৬ লাখ ৬৯ হাজার ২০০ এবং ফিরোজশাহ কলোনির মুক্তা বেগমের ৪ কোটি ৭০ লাখ ৯৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন আসামিরা। যদিও মুক্তা বেগমের নামে ২০২০ সালের ১১ মার্চ থেকে ১ হাজার টাকার একটি সাধারণ সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর (৭০০২৪৭) খোলেন আসামিরা। এতে আমানতকারীর নাম, ছবি ও ঠিকানা ঠিক থাকলেও হিসাব নম্বর ভুয়া। প্রকৃত আমানকারী চট্টগ্রাম জিপিওতে এসে লিখিত বক্তব্যে জানান,তাঁর একটিই সঞ্চয় হিসাব রয়েছে, এফডি নম্বর ৩১৪৫৮৭ তাঁর নয়। এই হিসাবে করোনাকালে সরকারি ছুটির দিন সত্বেও ১৩টি লেনদেনের বিপরীতে ২৯ লাখ ৯৯ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।সুত্র-সমকাল
Link copied!