বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গোপসাগরে গ্যাসের জন্য খনন শুরু করবে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১২:০৫ পিএম, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২১

বঙ্গোপসাগরে গ্যাসের জন্য খনন শুরু করবে বাংলাদেশ

ডেইলি খবর ডেস্ক: বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় ২৫টি অগভীর এবং গভীর বøক খুঁজে পাওয়া গেছে। এগুলোর মাঝে মাত্র তিনটি বøকে গ্যাস ও তেল অনুসন্ধানের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে। চলতি সেপ্টেম্বর মাসের ২৯ তারিখ থেকে সমুদ্র অঞ্চলে গ্যাসের অনুসন্ধান শুরু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। উৎপাদন অংশীদারিত্ব চুক্তির (প্রোডাকশন শেয়ারিং কন্ট্রাক্ট-পিএসসি) ভিত্তিতে, ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত ওএনজিসি বিদেশ লিমিটেড এবং অয়েল ইন্ডিয়া লিমিটেডের সঙ্গে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স) যৌথভাবে বঙ্গোপসাগরের এসএস-৪ বা অগভীর সমুদ্রের ৪ নম্বর ব্লকে খনন কাজ শুরু করবে।এ অনুসন্ধান দেশের জন্য কিছুটা স্বস্তি এনে দিতে পারে; কারণ বর্তমান উপকূলীয় গ্যাসক্ষেত্রগুলোয় উৎপাদন কমে যাওয়ায়, তীব্র গ্যাস সংকটে ভুগছে বাংলাদেশ। বিষয়টি নিশ্চিত করে জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি বিভাগের সিনিয়র সচিব মোঃ আনিসুর রহমান বলেন,গ্যাস আবিষ্কৃত হলে দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। ফলস্বরূপ,ব্যয়বহুল তরল প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) উপর নির্ভরতা কমবে। তিনি বলেন,"বিশ্বব্যাপী মহামারির কারণে খনন কাজ এক বছর বিলম্বিত হয়েছে। এখন, আইওসিগুলো (আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানি) অগভীর সমুদ্রে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান করতে পারবে।বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ কর্পোরেশনের (পেট্রোবাংলা) কয়েকজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ওএনজিসি ব্লকের নিচে ৪ হাজার মিটার পর্যন্ত খনন করবে। এছাড়া সূত্র আরো জানায়, আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে একই ব্লকে আরো একটি খনন কাজ চালাবে কোম্পানিটি।এসএস-৪ ও এসএস-৯ ব্লকে খননের জন্য 'বাংলাদেশ অফশোর বিডিং রাউন্ড ২০১২'-এর অধীনে, ওএনজিসি বিদেশ লিমিটেড (ওভিএল) এবং অয়েল ইন্ডিয়া লিমিটেডের (ওআইএল) সঙ্গে দু'টি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। বাংলাদেশ সরকার বাপেক্সকে এ বø­কগুলোর স্টোকহোল্ডার হিসেবে মনোনীত করেছে; তারা এখান থেকে ১০ শতাংশ সুবিধা পেয়ে থাকে।পিএসসি চুক্তি অনুসারে, ঠিকাদাররা তাদের নিজস্ব খরচে ব্লকে জরিপ চালাবে ও খনন করবে এবং গ্যাস বিক্রয়ের টাকা থেকে তারা প্রতি বছর তাদের ব্যয়ের ৫৫ শতাংশ পূরণ করবে।পেট্রোবাংলা ব্লকগুলো থেকে সর্বনিম্ন ৬০ শতাংশ এবং সর্বোচ্চ ৮৫ শতাংশ পুনরুদ্ধারযোগ্য গ্যাস এবং সর্বনিম্ন ৭০ শতাংশ এবং সর্বোচ্চ ৯০ শতাংশ পুনরুদ্ধারযোগ্য তেলের মালিক হবে।চুক্তি স্বাক্ষরের পর থেকে ওএনজিসি কনসোর্টিয়াম ব্লকে সাড়ে ৫ হাজার লাইন-কিলোমিটার দ্বিমাত্রিক বা ২ডি সিসমিক জরিপ পরিচালনা করেছে।এর মাধ্যমে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় ২৫টি অগভীর এবং গভীর ব্লক খুঁজে পাওয়া গেছে। এগুলোর মাঝে মাত্র তিনটি ব্লককে গ্যাস ও তেল অনুসন্ধানের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে।কোনো আন্তর্জাতিক কোম্পানিকে গ্যাস ও তেল অন্বেষণের অধিকার দেওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম নয়।২০১৭ সালের মার্চে, 'বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রæত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন-২০১০' এর অধীনে, গভীর সমুদ্র ব্লক ডিএস-১২ তে গ্যাস অনুসন্ধানে দক্ষিণ কোরিয়ার তেল ও গ্যাস কোম্পানি পস্কো কর্পোরেশনের সঙ্গে একটি পিএসসি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।তবে, গ্যাসের দাম নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হওয়ায় কোম্পানিটি কাজ শেষ না করেই বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যায়।এদিকে, ভূমিতে আবিষ্কৃত ২৮টি গ্যাসক্ষেত্রের মধ্যে ২২ টিতে উৎপাদন কার্যক্রম চালু রয়েছে, যা দেশের মোট গ্যাস ব্যবহারের দুই-তৃতীয়াংশ সরবরাহ করেছে। দেশে বর্তমানে,প্রতিদিনের গ্যাসের চাহিদা ৪ হাজার এমএমসিএফের বেশি হলেও, সরবরাহ ৩,০৩৪ এমএমসিএস। এরমধ্যে ৬০০এমএমসিএফ তরল গ্যাস ছাড়া বাকি সরবরাহের সবটুকুই আসে স্থানীয় গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে।সুত্র- বিএস  
Link copied!