মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বিনোদন তারকারা কেন প্রবাসী হন

প্রকাশিত: ০৮:০২ এএম, আগস্ট ৫, ২০২১

বিনোদন তারকারা কেন প্রবাসী হন

নাটক, সিনেমা ও গানের মাধ্যমে দর্শক-শ্রোতাদের বিনোদিত করে তারকায় পরিণত হন অনেকেই। তারকা হওয়ার পর থেকেই বদলে যেতে থাকেন অনেকে। কাজের ব্যস্ততার পাশাপাশি সামাজিক অবস্থানেও পরিবর্তন আসে তারকাদের। অল্পসংখ্যক তারকা পরিস্থিতি অনুযায়ী নিয়মের মধ্য দিয়ে চললেও অধিকাংশই আবার হয়ে ওঠেন স্বেচ্ছাচারী। নিয়মের মধ্যে না থাকার কারণে পর্যায়ক্রমে কমতে থাকে তাদের কাজ। এভাবে এক সময় মিডিয়ায় গুরুত্বহীন হয়ে পড়েন তাদের অনেকেই। এ সময়ই তাদের মনস্তত্ত্বে ঘটে ব্যাপক পরিবর্তন। অবহেলা কিংবা গুরুত্বহীন হয়ে পড়ার কারণে আড়ালে চলে যান অনেকে। আবার এদের মধ্যে একটি বড় অংশ স্থায়ীভাবে বিদেশে পাড়ি জমান। তবে ক্যারিয়ারের তুঙ্গে থেকেও কোনো কোনো তারকা বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম একজন অভিনেতা টনি ডায়েস। তিনি দীর্ঘ সময় ধরে সপরিবারে আমেরিকায় বসবাস করছেন। অল্প কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করেই জনপ্রিয়তা পাওয়া চিত্রনায়িকা তামান্না থাকেন সুইডেনে। দুই দশক আগে অভিনয়ে নিয়মিত থেকেই আমেরিকায় পাড়ি জমিয়েছেন চিত্রনায়িকা শাবানা। মাঝে মধ্যে তিনি দেশে এলেও অভিনয়ে দেখা যায় না তাকে। মডেল ও অভিনেত্রী মোনালিসা আমেরিকা প্রবাসীকে বিয়ে করে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থেকেও বিদেশে চলে যান। বর্তমানে সংসার জীবনে বিচ্ছেদ ঘটলেও এই অভিনেত্রী আমেরিকাতেই চাকরি করছেন। আরেক চিত্রনায়িকা রোমানাও ক্যারিয়ারের পড়তির দিকে চলে যান। সেখানে বিয়ে করে সংসারি হয়েছেন। তবে ব্যতিক্রম অভিনেত্রী আফসান আরা বিন্দু। তিনিও বিয়ে করেছিলেন আমেরিকা প্রবাসীকে। কিন্তু তার সংসার ভেঙে যাওয়ায় তিনি এখন দেশে ফিরে ঢাকায় অবস্থান করছেন। অভিনেত্রী রিচি সোলায়মান আমেরিকায় এক পুলিশ অফিসারকে বিয়ে সংসারি হয়েছেন এক যুগ আগে। দেশে আসা যাওয়া করলেও সেভাবে কাজ করেন না তিনি। মডেল ও অভিনেত্রী মাহবুবা ইসলাম সুমীর অভিনয় ক্যারিয়ারে ভাটা পড়লে তিনিও আমেরিকামুখী হন। এখন সেখানেই আছেন তিনি।   করোনাকাল শুরু হওয়ার অল্প সময় আগে অভিনেত্রী বিপাশা হায়াত আমেরিকায় চলে যান। পরে তার দুই সন্তানকেও সেখানে নিয়ে গিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি করিয়েছেন। তার স্বামী অভিনেতা নির্মাতা তৌকীর আহমেদ যাওয়া-আসার মধ্যেই আছেন। যদিও তারা আমেরিকায় অবস্থান করার বিষয়ে সন্তানদের পড়ালেখাকেই কারণ হিসেবে উল্লেখ করছেন। তবুও গুঞ্জন আছে যে তারা স্থায়ী হওয়ার জন্যই সেখানে গেছেন। চলতি বছর আমেরিকার গ্রিন কার্ড পেয়েছেন অভিনেত্রী নওশীন ও অভিনেতা হিল্লোল দম্পতি। ব্যস্ত অভিনয় ক্যারিয়ারে ভাটা নেমে আসার কারণেই নওশীন দেশ ছেড়েছেন বলে তার ঘনিষ্ঠরা বলছেন। তবে নওশীনের যুক্তি অন্যরকম। তার বাবা-মাসহ পরিবারের সবাই আমেরিকা প্রবাসী হওয়ার কারণেই তিনিও সেই পথেই অগ্রসর হয়েছেন। এছাড়া অনেক তারকাই বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে যাওয়া আসার মধ্যে আছেন। মুখে স্বীকার না করলেও তাদের অনেকেই স্থায়ীভাবে সেখানে বসবাসের অনুমতি পাওয়ার শর্ত পূরণের জন্যই যাওয়া আসা করছেন। এসব বিষয় নিয়ে দেশের মিডিয়া সংশ্লিষ্টরা উদ্বিগ্ন। এ বিষয়ে বর্ষীয়ান অভিনেতা ড. ইনামুল হক বলেন, দেশের জনপ্রিয় বিনোদন তারকারা যারা কাজের মাধ্যমে প্রশংসিত তারা যদি স্থায়ীভাবে বিদেশে পাড়ি জমান তাহলে এটা অবশ্যই আমাদের বিনোদন জগতের জন্য সুখকর বিষয় নয়। তারা দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে অনেক কিছু দিতে পারত। তাদের কর্মকাণ্ডের কারণে দেশের বিনোদন জগত আরও সমৃদ্ধ হতে পারত। কারণ একজন তারকা তৈরি হতে অনেক সময় লাগে। যিনি তারকা হন তিনিও অনেক পরিশ্রম করেই জায়গাটি তৈরি করেন। তাই হঠাৎ করেই তারা যদি বিদেশে চলে যান, এটা সবার জন্যই ক্ষতির কারণ।
Link copied!