ডেইলি খবর ডেস্ক: দেশের বিভিন্ন জেলায় নিয়োজিত সার্ভেয়ার-সাবরেজিস্টারদের কাছ থেকে টাকার বস্তা উদ্ধার হয়। মাঝে মধ্যে বিভিন্ন জেলখানায় নিয়োজিত ডিআইজিরাও ধরা পরে। শুধুই টাকা আর টাকার বস্তা জনগন দেখেন। টাকার বস্তা নিয়ে যারাই ধরা পরে তাদের ব্যস-বুস মুখের অবয়ভ দেখে চেনার উপায় নেই যে তারা ডাকাত কিংবা লুটেরা বা ঘুসখোর। ঠিক এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। মুখভরা দাডি মাথায় টুপি পরা লুটেরা-ঘুসখোর ধরা পরেছে ঢাকার বিমানবন্দরে। কে বুঝবে এমন পরহেজগার মানুষ লুটেরা হয়। এবার ব্যাগে ভরে ২৩ লাখ টাকা নিয়ে ঢাকায় এসে ধরা পড়েছেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ (এলএ) শাখার সার্ভেয়ার আতিকুর রহমান। তার চেহারা দেখে বুঝার উপায় নেই তিনি যে লুটেরা। লুটেরাকে ঢাকা বিমানবন্দর থেকেই কক্সবাজারে ফেরত পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার রাতেই তাঁকে পুলিশে দিয়েছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন।শুক্রবার রাতেই কক্সবাজার মডেল থানায় আতিকুরের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের ক্রয়া চলছিল। কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আমিন আল পারভেজ বলেন,সার্ভেয়ার আতিকুর এই টাকার বৈধ কোনো উৎস দেখাতে পারেননি। এই টাকা নিয়ে তিনি উড়োজাহাজে ঢাকায় যাচ্ছিলেন। কার কাছে যাচ্ছিলেন,এত টাকা তিনি কোথায় পেলেন,এসব বিষয় তদন্তে বেরিয়ে আসবে।
কক্সবাজার বিমানবন্দর সূত্র জানায়,আতিকুর রহমান সকাল নয়টার দিকে বিমানবন্দরে প্রবেশ করেন। তাঁর ব্যাগ স্ক্যান করলে বিপুল পরিমাণ টাকার স্তুপ দেখা যায়। সকাল পৌনে ১০টার ফ্লাইটে তিনি ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। ঘণ্টাখানেক পর ঢাকা বিমানবন্দরে পৌঁছালে তল্লাশিতে তাঁর ব্যাগভর্তি টাকা পাওয়া যায়। বিমানবন্দরের নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁকে আটক করেন। পরে আতিকুরের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে বিকেল সাড়ে চারটার একটি ফ্লাইটে তাঁকে কক্সবাজারে ফেরত পাঠানো হয়। বিমানবন্দর থেকে আতিকুরকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
কক্সবাজারে সরকারের ৩ লাখ কোটি টাকার ৭২টি মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে। এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তিনটি তদন্তে ভূমি অধিগ্রহণে মোট ৭৮ কোটি টাকা দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যায়। এ দুর্নীতির তদন্তে নেতৃত্ব দেওয়া দুদকের উপসহকারী পরিচালক মো:শরীফ উদ্দিনকে প্রথমে বদলি এবং পরে গত ফেব্রæয়ারি মাসে চাকরিচ্যুত করা হয়। আতিকুর রহমানের বাড়ি সিরাজগঞ্জে বলে জানা গেছে। তিনিসহ তিনজন সার্ভেয়ার মহেশখালীতে সরকারের প্রায় ১৫টি প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণের দায়িত্বে ছিলেন। ভূমি অধিগ্রহণ করতে গিয়ে জমির মালিকদের কাছ থেকে ঘুষ বাবদ আতিকুর ওই অর্থ নিয়েছেন বলে সন্দেহ করছেন সংশ্লিষ্টজনেরা।