ভেতরে শিকলে বাঁধা কলেজপড়ুয়া ছেলে, মায়ের হাতে শিকলের তালার চাবি। আচমকা আগুন লেগে দাউ দাউ করে পুড়ছে ঘর। আগুনের কাছে অসহায় মায়ের চোখের সামনেই পুড়ে ছাই হলো সন্তান। এভাবেই শিকলে বাঁধা অবস্থায় কলেজপড়ুয়া মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি ঘটে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার বাকশীমূল ইউনিয়নের ফকিরবাজার খাড়েরা গ্রামে। মঙ্গলবার রাত ৮টায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ওই যুবকের নাম আলাউদ্দিন (১৯)। সে বুড়িচং উপজেলার বাকশীমূল ইউনিয়নের ফকিরবাজার খাড়েরা গ্রামের আবদুল মোমেনের ছেলে এবং বুড়িচং আবদুল মতিন খসরু কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। স্থানীয় সূত্র জানায়, বুড়িচংয়ের কালিকাপুর আবদুল মতিন খসরু কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আলাউদ্দিন। কিছুদিন পরপর মানসিক সমস্যা দেখা দিত তার, যে কারণে তাকে ঘরের একটি কক্ষে শিকলে বেঁধে রাখা হতো। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় আগুন লেগে পাশের একটি ঘর ও তার কক্ষটি পুড়ে যায়। সেখানে মৃত্যু হয় তার। ঘটনার সময় বাড়িতে আলাউদ্দিনের মা ছাড়া কেউ ছিল না। মায়ের কাছে ছিল শিকলের তালার চাবি। আগুন লাগলে তার মা চেষ্টা করেও তাকে বাঁচাতে পারেননি। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখানে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় রাত ৯টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এরপর ওই কক্ষ থেকে আলাউদ্দিনের দগ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
দমকলকর্মী জহিরুল ইসলাম বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই আগুন প্রায় নিভিয়েছে স্থানীয়রা। আমরা ঘর থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছি। বুড়িচং থানার ওসি আলমগীর হোসেন এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমি অগ্নিকাণ্ডের বিষয়টি শুনেই ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিই; কিন্তু ততক্ষণে স্থানীয়রা আগুন নিভিয়ে ফেলে। ওই সময় ঘর থেকে সবাই বের হয়ে গেলেও শিকলবন্দি থাকায় আলাউদ্দিন বের হতে পারেনি। শর্টসার্কিট থেকে এ আগুন লেগে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।