বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

রঙের প্রলেপ দিয়েই ৩৮ লাখ টাকা লুটপাট

প্রকাশিত: ০৯:৪৭ এএম, আগস্ট ৪, ২০২১

রঙের প্রলেপ দিয়েই ৩৮ লাখ টাকা লুটপাট

ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সংস্কার ও মেরামতের নামে ২০২০-২১ অর্থবছরে রঙের প্রলেপ দিয়েই ৩৮ লাখ টাকা লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতালের ভবনের সংস্কারকৃত দেওয়ালের পলেস্তারা উঠে গেছে, দরজা-জানালার কাচ ভাঙাই রয়ে গেছে। কলাপসিবল গেট জমাটবদ্ধ অবস্থাতেই দেওয়া হয়েছে রঙের প্রলেপ। কাজ সম্পর্কে কিছুই জানেন না হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটি। হাসপাতালের ভেতরে দর্শনযোগ্য স্থানে প্রকল্পের নাম, ব্যয়, কর্মকাল শুরু ও শেষ হওয়ার তারিখ, বাস্তবায়নকারী সংস্থা ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামযুক্ত ‘প্রজেক্ট প্রোফাইল’ স্থাপন করা হয়নি। এলাকাবাসীর অভিযোগ হাসপাতালে প্রায়ই সংস্কার ও মেরামত করা হচ্ছে। তবে এসব বরাদ্দ জনসম্মুখে প্রকাশ করা হচ্ছে না। এ প্রসঙ্গে হাসপাতালের বেডে শুয়ে থাকা নুরুল আমিন বলেন, লাখ লাখ টাকা বরাদ্দ হয় আর চলে লুটপাট। হাসপাতালের উন্নয়ন হয় না। তিনি আরও অভিযোগ করেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এ দেওয়ালের রঙ করা হয়। কোনোরূপ ঘষামাজা ছাড়াই শুধু রঙের প্রলেপ দেওয়া হয়েছে ময়লা-আবর্জনার ওপরেই। মইলাকান্দা ইউনিয়নের ষোলগাই গ্রামের আবুল কাসেম বলেন, সিঁড়িতে ওঠার সময় দেখলাম সবকয়টি কাচ ভাঙা, তাহলে মেরামত হলো কোথায়? হাসপাতালের এসব প্রকল্পের নামে শুধুই লুটপাট হয়। হাসপাতালে এ প্রকল্পে কি কি কাজ হয়েছে তা বলতে পারেননি, কোনো ফাইলপত্রও খুঁজে পাননি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ রবিউল ইসলাম। তবে তিনি জানান, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে সংস্কার ও মেরামত কাজ করা হয়েছে। প্রকল্পের ব্যয় প্রায় ৩৮ লাখ টাকা হবে। প্রকল্পের বাজেটের চেয়েও বেশি কাজ হয়েছে। সিডিউলের বাইরে ভবনের ছাদ মেরামত করা হয়েছে। কেন না, ছাদ চুয়ে পানি পরত। তবে হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সংসদ-সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন আহমেদ জানান, হাসপাতালের এ মেরামত কাজ সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না। ব্যবস্থাপনা কমিটির অপর সদস্য মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিম বলেন, তিনি সংস্কার ও মেরামত কাজ সম্পর্কে কিছু জানেন না। হাসপাতালের যক্ষ্মারোগীদের সেবা কক্ষের টয়লেটের দরজা ও পাইপলাইনগুলো নষ্ট ও পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। কয়েকটি কক্ষেও ছাদ চুষে পানি পড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন হাসপাতালের একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নাম জানা যায়নি। তবে কাজটি বাস্তবায়ন করছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ময়মনসিংহ। এ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী দেবাশীষ জানান, সিডিউল মোতাবেকই কাজ হয়েছে। ভবনটি ১৯৮০ সলের দিকে স্থাপিত। ভবনটি দীর্ঘদিন আগের। তাই রঙ করার পরেও পলেস্তারার রঙ উঠে যাচ্ছে।
Link copied!